-
গত ভিডিও যেখানে শেষ করেছিলাম সেখান থেকেই শুরু করছি
-
আমার মনে হয় সূর্য কত বড় তা কিছুটা হলেও বুঝতে শুরু করেছি আমরা
-
বিশেষ করে পৃথিবীর সাপেক্ষে। পৃথিবী সূর্য থেকে কত দূরে তাও কিছুটা বুঝেছি
-
বিজ্ঞানের পাঠ্যবইয়ে আমরা যেসব ছবি দেখি
-
তারা আসলে সুবিচার করে না
-
আগে সূর্যের এই ছবিটা দেখিয়েছিলাম যার ব্যাস আনুমানিক ৫ বা ৬ ইঞ্চি
-
বলেছিলাম পৃথিবী হবে এরকম ছোট্ট একটা বিন্দু যা সূর্য থেকে ডানে বা বামে ৪০ ফুট দূরে
-
বা বলা যায় পৃথিবীর কক্ষপথের ব্যাসার্ধ্য ৪০ ফুট
-
সুতরাং এই জিনিসটার দিকে তাকালে আমরা এমনকি এটা দেখতেও পাব না
-
এটা হবে অনেক দূর দিয়ে আবর্তনরত ছোট্ট এক বিন্দু
-
এই সূর্যটার দিকে যদি তাকাই-- যদি পুরো সূর্যটা এখানে আঁকি
-
এর ব্যাস হবে প্রায় ২০ ইঞ্চি
-
এই অবস্থায় এখানের পৃথিবী-- যা সঠিক আনুপাতিক আকারেই আঁকা আছে--
-
এই পৃথিবীর এতো কাছে থাকার প্রশ্নই উঠে না
-
এর অবস্থান হবে প্রায় ২০০ ফুট ঐদিকে, বা ৬০ থেকে ৭০ মিটার দূরে
-
সুতরাং কল্পনা করা যাক
-
এই আকারের সূর্য যদি একটি ফুটবল মাঠে থাকে তাহলে,
-
এখানের এই ছোট্ট বিন্দু অর্থাৎ পৃথিবী
-
থাকবে ৪০ গজ দূরের অন্য রেখাটিতে অর্থাৎ ৬০ মিটার দূরে
-
এত ছোট যে আমরা তা দেখতেই পাব না
-
একটু দূরত্ব থেকে হয়তো এটা সনাক্ত করা সম্ভব।
-
কিন্তু এখানের এই জিনিসটা দেখা অসম্ভব।
-
আর অন্যান্য গ্রহগুলো তো আরও দূরে, অবশ্য সবগুলো নয়।
-
অবশ্যই বুধ কাছে, বুধ গ্রহের অবস্থান এখানে।
-
আশাকরি আমরা প্রায় সবাই এর সাথে পরিচিত,
-
তারপরও এখানে লিখে রাখছি।
-
এটা হচ্ছে বুধ গ্রহ, ইংরেজিতে মার্কারি। এটা শুক্র গ্রহ বা ভেনাস।
-
বুধ হচ্ছে গ্রহগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ছোট যা নিয়ে কোন বিতর্ক নেই।
-
প্লুটো সবচেয়ে ছোট, কিন্তু এটাকে এখন আর গ্রহ মনে করা হয় না
-
প্লুটোকে এখন ডাকা হয় বামন গ্রহ
-
এবং এরপরে আছে শুক্র যা সম্ভবত পৃথিবীর নিটকতম গ্রহ
-
অথবা আকারের দিক থেকেও এটা পৃথিবীর নিকটতম
-
এরপরে আছে মঙ্গল বা মার্স এবং তারপর বৃহস্পতি বা গ্রহ বা জুপিটার।
-
এরা কত দূরে দূরে অবস্থিত তা বোঝানো যাক এবার।
-
যদি আবার সূর্যের আকার এমনটা ধরে নেই তাহলে,
-
বৃহস্পতি সূর্য থেকে পৃথিবীর তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি দূরে।
-
সুতরাং এটা হবে, যদি সঠিক স্কেল অনুযায়ী মাপি,
-
তাহলে এটা হবে ৩০০ মিটার দূরে।
-
সুতরাং আমরা যদি মেডিসিন-বল আকারের একটা সূর্য নেই,
-
কিংবা বাস্কেটবল আকারের সূর্য নেই--
-
আমার পর্দায় হয়তো বাস্কেটবলের চেয়ে একটু বড় দেখাচ্ছে।
-
তাহলে এই ছোট্ট বস্তুটাকে পিংপং বলের চেয়েও ছোট দেখাবে,
-
এবং একে স্থাপন করতে হবে তিনটি ফুটবল মাঠের সমান দূরত্বে। বৃহস্পতির দূরত্ব ঠিক ততোটাই।
-
এরপর শনি গ্রহ এর চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ দূরত্বে।
-
শনির দূরত্ব পৃথিবীর তুলনায় প্রায় ৯ গুণ।
-
আরেকটু পরিষ্কার করি,
-
পৃথিবী সূর্য থেকে কমবেশি ১ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক একক দূরে।
-
এর দূরত্ব বাড়ে কমে, কারণ কক্ষপথ পুরোপুরি বৃত্তাকার নয়।
-
বৃহস্পতি আনুমানিক ৫ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক এককের চেয়ে একটু বেশি দূরে,
-
অর্থাৎ পৃথিবী ও সূর্যের দূরত্বের প্রায় ৫ গুণ দূরে।
-
আর শনি গ্রহ প্রায় ৯ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক একক দূরে
-
বা পৃথিবী-সূর্য দূরত্বের ৯ গুণ দূরে।
-
সুতরাং অন্যভাবে বললে এটা ৯টি ফুটবল মাঠের সমান দূরে।
-
কিংবা এটা ১ কিলোমিটার দূরেও বলা যায়,
-
যদি সূর্যের আকার হয় মেডিসিন-বলের মতো।
-
এই ছোট্ট-- পিংপং বলের চেয়েও ছোট-- আকারের শনি গ্রহ থাকবে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে।
-
আমি আসলে এটা বারবার বলতে চাই,
-
কারণ আমরা কেউই হয়তো ব্যাপারটা কখনও এভাবে ভেবে দেখিনি
-
এমন ছবি দেখানো হয়
-
কেবল এক পৃষ্ঠায় পুরো সৌরজগৎ আঁকার জন্য
-
যদিও তারা ফুটিয়ে তুলতে ব্যর্থ হয়-
-
সূর্যের সাপেক্ষে এই গ্রহগুলো কত ছোট
-
বিশেষ করে সূর্য থেকে তাদের দূরত্বের সাপেক্ষে।
-
শনির পরে রয়েছে ইউরেনাস এবং নেপচুন।
-
এরা অবশ্য আরও অনেক দূরে।
-
একটু ধারণা দেয়ার জন্য বলি
-
গ্যালাক্সি এবং মহাবিশ্ব নিয়ে কিছু কথা বলে ফেলা বেশ সহজ।
-
কিন্তু আমি এখানে যা বোঝাতে চাই,
-
তা হল আমরা ইতিমধ্যেই বিশাল সব দূরত্বের কথা বলছি।
-
ইতিমধ্যেই বলা শুরু করেছি যে একটি জেট প্লেন ১৭ বছরে
-
পৃথিবী থেকে সূর্যে পৌঁছাতে পারে।
-
সেই দূরত্বকে ৫ দিয়ে গুণ করলে পাওয়া যায় বৃহস্পতি থেকে সূর্যে যাওয়ার সময়, প্রায় ১০০ বছর।
-
২০০ বছর লাগবে শনি থেকে সূর্যে যেতে।
-
সুতরাং আব্রাহাম লিংকন যদি শনি গ্রহ থেকে একটা জেট প্লেনে চড়ে বসতেন,
-
তাহলে আজও সূর্যে পৌঁছাতে পারতেন না,
-
এখনও পারতেন না সূর্যের কাছে যেতে।
-
সুতরাং এগুলো আসলেই বিশাল বিশাল সব দূরত্ব।
-
কিন্তু সৌরজগৎই শেষ কথা নয়।
-
এখানে, ঠিক এখানে আছে সূর্য
-
এবং এই প্রতিটি গ্রহ এসব কক্ষপথের পুরুত্বের চাইতে সরু।
-
সুতরাং গ্রহ দিয়েই কক্ষপথ আঁকা যায়,
-
কিন্তু আকারের ছবিতে কোন গ্রহ দেখতে পাওয়ারই কথা না।
-
এটা হচ্ছে ১ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক একক,
-
সূর্য থেকে পৃথিবীর গড় দূরত্ব।
-
এরপরে আছে মঙ্গল গ্রহ। এরপরে গ্রহাণু বেষ্টনী।
-
এখানে গ্রহাণু বেষ্টনীর অবস্থান।
-
এর ভেতরেও বেশ বড় বড় অনেক কিছু আছে।
-
এমন বস্তু যাদেরকে প্রায় বামন গ্রহের মত ভাবা হয়।
-
এর মধ্যে আছে সেরেস।
-
এরপরে অবস্থান বৃহস্পতি গ্রহের,
-
আগেই বলেছি প্রায় ১০০ বছর লাগবে
-
একটি জেট প্লেনে করে বৃহস্পতি থেকে সূর্যে যেতে।
-
কিন্তু আমরা যদি এই পুরো বাক্সটাও নেই যার আকার বিশাল
-
আনুমানিক প্রায় ৫ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক একক,
-
সূর্য থেকে বৃহস্পতি পর্যন্ত যেতে আলোর ৪০ মিনিট লাগবে,
-
সুতরাং এটা সত্যিই বিশাল দূরত্ব। এই বিশাল দূরত্বও,
-
যাকে আমরা এখানের এই ছোট বাক্সে রাখতে পারি।
-
সুতরাং এই পুরো বাক্সটা এই বাক্সে পুরে দেয়া সম্ভব,
-
এবং বাইরের গ্রহগুলোর কক্ষপথ বুঝতে হলে তেমনটা করতেই হবে।
-
সুতরাং এই স্কেলে পৃথিবী, শুক্র, বুধ এবং মঙ্গল,
-
এদের কক্ষপথ দেখতে এমন,
-
এদেরকে এমনকি সূর্য থেকে আলাদাও করা যায় না। এরা এতোটাই কাছাকাছি।
-
মনে হয় তারা যেন সূর্যেরই অংশ,
-
যখন এই স্কেলে এদের দেখি। এবং এর পরে আছে..
-
বাইরের গ্রহগুলো- শনি, ইউরেনাস, নেপচুন
-
এবং এর পরে কাইপার বেষ্টনী।
-
এখানে আছে আরও গ্রহাণু, কিন্তু এরা তুষারাচ্ছন্ন...
-
বরফের কথা ভাবলেই আমরা ভেবে নেই পানির বরফ।
-
কিন্তু এখানে তাপমাত্রা এতোই কম যে,
-
এবং এতোই অন্ধকার, কারণ আমরা সূর্য থেকে অনেক দূরে,
-
যে যেসব বস্তুকে আমরা সাধারণত বায়বীয় অবস্থায় দেখি
-
তারাও এখানে কঠিন অবস্থায় পরিণত হয়।
-
সুতরাং এখানে কেবল পাথুরে বস্তু নয় বরং যেসব বস্তুকে
-
আমরা সচরাচর বায়বীয় অবস্থায় দেখি, যেমন মিথেন তারাও কঠিন অবস্থায় থাকবে- ঠাণ্ডায় জমে যাওয়া মিথেন।
-
কিন্তু এখানেই শেষ নয়
-
আমরা এখনও সৌর জগৎই পেরোতে পারিনি।
-
পেরুনোর আগে এখানে দূরত্ব বা আকারগুলো ঠিক কেমন তা বোঝানো যাক।
-
এখানে একটা তালিকা আছে, ভয়েজার মিশন থেকে পাওয়া।
-
ভয়েজার মিশনসমূহ, ভয়েজার ১ এবং ২,
-
আসলে ভয়েজার ২ একটু আগে অর্থাৎ ভয়েজার ১-এর মাত্র ১ মাস আগে যাত্রা করেছিল
-
কিন্তু ভয়েজার ১ এর বেগ ছিল বেশি।
-
তারা পৃথিবী ছেড়েছিল সেই ১৯৭৭ সালে।
-
এবং তাদের বর্তমান বেগ, ভয়েজার ১ কত দ্রুত চলছে তা বোঝানোর জন্য বলছি,
-
ভয়েজার ১ আছে এখানে, বর্তমানে সে প্রতি ঘণ্টায় ৬১,০০০ কিলোমিটার বেগে ছুটে চলেছে
-
বা প্রতি সেকেন্ডে ১৭ কিলোমিটার যা একটা গোটা শহরের সমান।
-
এটা এতোই দ্রুত গতিতে যাচ্ছে, আমি নিজে অন্তত এটা ভেবে দিশেহারা হয়ে যাই।
-
এই জিনিসটার বেগ এতোই বেশি।
-
তাছাড়া এটা বিভিন্ন গ্রহগুলোর আশপাশ দিয়েও উড়ে গেছে
-
এমনকি গ্রহগুলোর কক্ষপথকে ব্যবহার করে নিজের বেগও বাড়িয়ে নিয়েছে।
-
কিন্তু অধিকাংশ সময় জুড়েই তার বেগ ছিল খুব বেশি।
-
কিলোমিটার দিয়ে বুঝতে যাদের একটু কষ্ট হয় তাদের জন্য মাইল দিয়ে বলি
-
এই বেগটা হচ্ছে ঘণ্টায় প্রায় ৩৮,০০০ মাইল।
-
এই গতিটা অভাবনীয় রকমের ভয়ংকর
-
এবং ১৯৭৭ সাল থেকে সে এমন বেগে ছুটে চলেছে।
-
আমি এই যে এখন কথা বলছি এই মুহূর্তটিতেও
-
সে সেকেন্ডে ১৭ কিলোমিটার বেগে ছুটছে
-
আমরা যখন ঘুমাচ্ছি ভয়েজার ১ তখনও মহাকাশে মহাত্রাস সঞ্চারণ করে বেড়াচ্ছে
-
আমরা যখন খাচ্ছি তখনও, তার কোন বিরাম নেই,
-
সে এখন সৌর জগৎ ছাড়িয়ে যাচ্ছে, এর বেগের কিছুটা পরিবর্তন অবশ্যই ঘটেছে
-
কিন্তু গ্রহদের সীমানা পেরিয়ে যাওয়ার পর খুব একটা পরিবর্তন হয়নি
-
মোটামুটি ধ্রুব বেগে সে ছুটে চলেছে।
-
এই বিপুল বেগে চলা সত্ত্বেও এতোদিনে সে মাত্র, যদিও মাত্র শব্দটা খুব অদ্ভূত শোনাচ্ছে,
-
তারপরও সত্যি যে সে মাত্র এতোটুকু দূরত্ব অতিক্রম করেছে। এই এখানের মাত্র এতোটুকু।
-
প্রায় ১১৫ বা ১১৬ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক একক।
-
পরিষ্কার হওয়ার জন্য ব্যাপারটাকে দুইভাবে ভাবা যায়,
-
কেউ একজন বলতে পারে "আরে এটাতো সত্যিই অনেক দূর।"
-
কারণ এই স্কেলে
-
এমনকি পৃথিবীর কক্ষপথও দেখা যাবে না,
-
সুতরাং মনে হয় আসলেই অনেক অনেক দূরে।
-
১১৬ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক একক আসলেই কতদূর সেটা অন্যভাবে বোঝানো যাক,
-
যদি ২০০০ বছর আগে যীশু একটা প্লেনে চড়ে বসতেন
-
আমি আসলে কল্পনার সুবিধার জন্য যীশুর একটা ছবি এখানে জোড়া লাগিয়ে দিয়েছি।
-
তিনি যদি সেই সময় একটা জেট প্লেনে চড়ে বসতেন এবং সোজা
-
ভয়েজার যেদিকে গিয়েছে সেদিকে যেতে থাকতেন
-
তাহলে এখনই ভয়েজার যীশুর নাগাল পেয়ে যেতো।
-
সুতরাং এটা আসলেই বিশাল বিশাল বড় একটা দূরত্ব
-
এতোক্ষণ আমরা যেমন দূরত্ব নিয়ে কথা বলেছি সে তুলনায়
-
এটা বিশাল দূরত্ব হলেও, একইসাথে এটা আবার
-
সৌরজগতের বাইরের অংশের তুলনায়
-
অবিশ্বাস্য রকমের ছোট।
-
সুতরাং ভয়েজার মাত্র এতোটুকু দূরে গিয়েছে। স্কেলটা বোঝানো যাক...
-
এই পুরো বক্সটা এই বক্সের মধ্যে পুরে দেয়া যাবে,
-
এবং এই বক্সে তাকালে দেখা যায় ভয়েজার মাত্র এতোটুকু দূরে গেছে।
-
অবিশ্বাস্য গতিতে ৩৩ বছর চলার পর মাত্র এতোটুকু দূরে যাওয়া সম্ভব হয়েছে তার পক্ষে,
-
এখানের এই অন্য বস্তুগুলো সম্পর্কে একটা ধারণা দেয়া দরকার,
-
ঠিক এখানে আছে সেডনা, যা সৌরজগতের বহির্ভাগের ভারী বস্তুগুলোর একটি
-
সৌরজগতে আমাদের জানামতে সবচেয়ে দূরের বস্তুগুলোর একটিও এই সেডনা
-
এর কক্ষপথ খুব উৎকেন্দ্রিক, যে কারণে সে
-
কখনো সূর্যের বেশ কাছে, খুব কাছে না হলেও বেশ কিছুটা কাছে আসে
-
এবং পরে আবার অনেক দূরে চলে যায়।
-
যদি আমি এই পুরো বক্সের দিকে তাকাই, তাহলে এমনকি এই সেডনার কক্ষপথও
-
এটুকু অঞ্চলের মধ্যে আবদ্ধ থাকবে।
-
সুতরাং এই ছবিতে ভয়েজারের দূরত্ব এমনকি
-
দেখাই সম্ভব না,
-
এটা হবে একটা ছোট্ট বিন্দুর মত,
-
ঘণ্টায় ৩৮,০০০ কিলোমিটার বেগে ৩৩ বছরে ভয়েজার যত দূরে গিয়েছে তা এখানে দেখাই যাচ্ছে না।
-
এই বিশাল দূরত্ব হয়ে যাচ্ছে অতি তুচ্ছ।
-
তবে দূরত্বটা বোঝা না গেলেও,
-
এখনও বস্তুদের উপর সূর্যের প্রভাব আছে।
-
মহাকর্ষ বলের মাধ্যমে সে এতো দূরের বস্তুকেও নিজের দিকে আকর্ষণ করছে,
-
এখানে যা দেখতে পাচ্ছি সেটাকে বলা হয় ওর্ট মেঘ যদিও এর অস্তিত্ব পুরোপুরি প্রমাণিত নয়,
-
এবং ধূমকেতুদের অনেকেই এই অঞ্চলে জন্ম নেয়।
-
এটা আসলে প্রচুর হিমায়িত বস্তুর সমাহার
-
হিমায়িত গ্যাস আর কণার মত জিনিসের সমন্বয়েই এটি গঠিত।
-
এর মাধ্যমে আমরা সৌরজগতের একেবারে বাইরের অংশ চলে এসেছি।
-
এই দূরত্বটুকু হচ্ছে প্রায় ৫০,০০০ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক একক।
-
আরেকটু ধারণা দেয়া দরকার,
-
কারণ আলোকবর্ষের সাথে আমরা বেশ ভাল রকমের পরিচিত।
-
এক আলোকবর্ষ প্রায় ৬৩,০০০ জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক এককের সমান।
-
সুতরাং আমরা যদি সূর্য থেকে এক আলোকবর্ষ দূরে যাই,
-
তাহলে এই অনুকল্পিত ওর্ট মেঘের মধ্যে গিয়ে পড়ব।
-
আরেকটু পরিষ্কার করা যাক,
-
আমরা জানি অধিকাংশ গ্রহের কক্ষপথই এক সমতলে অবস্থিত,
-
এটা হচ্ছে গ্রহদের কক্ষপথের সেই তল,
-
এবং অবশ্যই এই রেখাগুলো খুব বেশি গাঢ় করে আঁকা হয়েছে!
-
যাতে আমরা কক্ষপথগুলো দেখতে পারি।
-
তারপরও এদের পুরুত্ব এখানে অনেক বেশি।
-
এই ছবিটা বিস্তৃত একেবারে কাইপার বেষ্টনী পর্যন্ত
-
শেষ প্রান্তে আছে কাইপার বেষ্টনী।
-
সবগুলো গ্রহ ছাড়িয়ে একেবারে শেষ পর্যন্ত।
-
এটা হচ্ছে প্লুটোর কক্ষপথ।
-
এই পুরো ছবিটা বসে আছে বড় ছবিটার ঠিক এতোটুকুর মধ্যে, এতো ছোট যে ঠিকমতো দেখাই যাচ্ছে না।
-
ঐ পুরো ছবিটা এখানের এই ছোট্ট বিন্দুটার সমান।
-
এবং এর চারপাশ জুড়ে আছে ওর্ট মেঘ।
-
এর আকৃতি একটা গোলকের মত, এবং আমরা ধারণা করে এর অস্তিত্ব আছে।
-
অবশ্যই এতো দূরের বস্তু পর্যবেক্ষণ করা খুব কষ্টকর।
-
যাহোক আশাকরি আমি সৌরজগতের আকার সম্পর্কে একটা প্রাথমিক ধারণা দিতে সক্ষম হয়েছি।
-
তবে সত্যিকার অর্থেই যা আমাদেরকে হতবাক করবে তা হলো,
-
যদি এটা ইতিমধ্যেই বিমোহিত না করে থাকে,
-
এই পুরো সৌরজগৎ পরের ভিডিওতে একটা ছোট্ট বিন্দুর মত দেখাতে শুরু করবে,
-
যদি আমরা কেবল ছায়াপথে আমাদের স্থানীয় অঞ্চলটার সাপেক্ষে একে বিচার করি,
-
আর মহাবিশ্বের সাপেক্ষে চিন্তা করলে তো একে খুঁজেই পাওয়া যাবে না।
-
যাই হোক, এখন আর বেশি কিছু বলা বোধহয় ঠিক হবে না, তাতে পাগল হওয়ার আর কিছু বাকি থাকবে না।