প্রথম ২০ ঘন্টা সময়- যেকোন কিছু শেখার পদ্ধতিঃ জশ কফম্যান

জশ কফম্যান তাঁর বক্তৃতায় বর্ণনা করলেন পৃথিবীতে তাঁর প্রথম সন্তানের আগমন কিভাবে তাকে শেখার জন্য পুরোপুরি নতুন একটি উপায় বের করতে উৎসাহিত করেছে।

সবাইকে অভিবাদন।

আজ থেকে দুই বছর আগে
আমার জীবন চিরতরে বদলে যায়।

আমার স্ত্রী কেলসি এবং আমি...

আমাদের মেয়ে লীলাকে এই ধরায় স্বাগত জানাই।

তো, সন্তান জন্ম দিতে পারাটা
অসাধারণ একটা অভিজ্ঞতা।

আপনার পুরো পৃথিবীটা রাতারাতি বদলে যাবে।

এবং আপনার সকল অগ্রাধিকারেও
তখনই একটা পরিবর্তন আসবে।

আর সেটা এতো দ্রুত ঘটবে যে সবকিছু বুঝে
ওঠাটাই অনেক সময় কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

এখন, বাবা-মা হওয়ার কারণে আপনাকেও কিন্তু
সন্তান পালনের ব্যাপারে প্রচুর শিখতে হবে।

যেমন, উদাহরণস্বরূপ-
কিভাবে আপনার সন্তানকে জামাকাপড় পরাবেন।

(হাসি)

এগুলো আমি কিছুই জানতাম না।

এটি একটি সত্যিকার পোশাক,
আমি ভেবেছিলাম এটি একটি ভালো বুদ্ধি।

এমনকি লীলাও জানে যে এটি ভালো বুদ্ধি না।

তাই সময়টা একসাথে অনেক কিছু
শেখার এবং অনেক অনেক পাগলামির।

এবং পাগলামির সাথে আরো যোগ করা যায়,
কেলসি এবং আমি দুজনেই বাসা থেকে কাজ করতাম।

আমরা উদ্যোক্তা,
আমরা নিজেরাই নিজেদের ব্যবসা পরিচালনা করি।

তো, কেলসি অনলাইনে যোগব্যায়ামের
শিক্ষকদের জন্য কোর্স তৈরি করে,

আমি একজন লেখক।

আর তাই, আমি ঘর থেকে কাজ করি,
কেলসিও ঘর থেকে কাজ করে,

আমাদের একটা বাচ্চা আছে এবং
আমরা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি যে...

যা যা করা দরকার সেগুলো যাতে ঠিকঠাক করা হয়।

এবং জীবন সত্যিই অনেক ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

এবং কয়েক সপ্তাহ এই চমকপ্রদ অভিজ্ঞতার
মধ্য দিয়ে যাওয়ার পর,

যখন ঘুমানোর জন্যও একদম সময় পাচ্ছিলাম না,

মোটামুটি অষ্টম সপ্তাহের দিকে,

আমার এই চিন্তাটা হচ্ছিল
এবং এটা ছিল সেই চিন্তা,

যা সারা পৃথিবীর, সব বয়সের বাবা-মার মনে

একটা সময় কাজ করেছে, চিন্তাটা হচ্ছে-

আমি জীবনে আর কখনো অবসর সময় পেতে যাচ্ছি না।

(হাসি)

কেউ একজন বলেছেন এটা সত্যি।

কিন্তু এটা পুরোপুরি সত্য নয়।

কিন্তু ঐ মুহূর্তে এটাকে একদমই
সত্যি বলে মনে হয়।

আর আমাকে এই চিন্তাটিই তখন একদম
এলোমেলো করে দিল।

কারণ যেসব বিষয় আমি খুব
উপভোগ করি সেগুলোর মধ্যে

এক নম্বরে হচ্ছে- নতুন কিছু শেখা।

কোন কিছু সম্পর্কে কৌতূহলী হওয়া এবং
তাতে ডুব দেয়া,

আর সেটা নিয়ে ঘাটাঘাটি করা এবং
পরীক্ষা ও ভুলের মাধ্যমে শেখা।

এবং অবশেষে কোন বিষয়ে বেশ দক্ষ হয়ে যাওয়া।

আর এই 'অবসর সময়' ছাড়া,

আমি বুঝতে পারছিলাম না যে আমি কিভাবে
আর কখনো এই কাজগুলো করতে পারবো।

তাই বলা যায় আমি এক মস্ত
কৌতুহলী জ্ঞানপিপাসু ব্যক্তি।

আমি কিছু না কিছু শেখা চালিয়ে যেতে চাই,
আমি সবসময় বিকশিত হতে চাই।

আর আমি যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম তা হলো-

আমি লাইব্রেরিতে গেলাম,
বইয়ের দোকানে গেলাম,

এবং খুঁজে দেখলাম যে রিসার্চ কি বলে-

আমরা কিভাবে শিখি এবং কিভাবে
আমরা দ্রুত শিখতে পারি এই সম্পর্কে।

এবং আমি কিছু বই পড়লাম,
কতগুলো ওয়েবসাইটও ঘাটাঘাটি করলাম।

আর এই প্রশ্নের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করেছি যে,

একটি নতুন দক্ষতা অর্জনের জন্য কত সময় লাগে?

আপনি জানেন আমি কি পেয়েছি?

১০০০০ ঘন্টা!

কেউ কি এমন কিছু শুনেছেন কখনো?

১০০০০ ঘন্টা লাগে,
যদি আপনি নতুন কিছু শিখতে চান।

যদি আপনি সেটাতে দক্ষ হতে চান,

তাহলে সেই অবস্থায় যেতে আপনার
১০০০০ ঘন্টা লাগবে।

এবং আমি বইয়ের পর বইতে, ওয়েবসাইটের পর ওয়েবসাইটে
এই লেখাই পড়েছি।

আর আমার এসব পড়ার মানসিক অভিজ্ঞতা ছিল এরকম-

না!!!

আমার এতো সময় নেই!
আমার ১০০০০ ঘন্টা সময় নেই।

আমি আর কখনো নতুন কিছু শিখতে পারবো না।

কখনো না!
(হাসি)

কিন্তু এটা সত্যি নয়।

তো, ১০০০০ ঘন্টা, এটা আপনাকে
মোটামুটি একটা ধারণা দেয়ার জন্য।

১০০০০ ঘন্টা হচ্ছে পাঁচ বছর ধরে
পূর্ণ দিবস কাজ করার সমান।

এটা একটা লম্বা সময়।

আর আমাদের সবারই নতুন কিছু অভিজ্ঞতা আছে।

কিন্তু সেগুলোতে আমাদের এর কাছাকাছি
সময়ও লাগেনি, তাই না?

তার মানে কি দাঁড়ায়?
নিশ্চয়ই কোন ব্যাপার আছে।

গবেষণা কি বলে আর আমরা কি
আশা করি এবং প্রত্যক্ষ করি,

দুইটা বিষয় মিলছে না।

আর আমি যা পেলাম এই বিষয়ে তা হচ্ছে-

১০০০০ ঘন্টার সূত্রটা বিশেষজ্ঞ-পর্যায়ের
দক্ষতা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

ফ্লোরিডা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের
একজন প্রভাষক আছেন,

যার নাম কে অ্যান্ডার্স এরিকসন।

তিনিই হচ্ছেন ১০০০০ ঘন্টা সূত্রের উদ্ভাবক।

আর এটা এসেছে যেখান থেকে সেটা এখন বলি-
তিনি পড়াশোনা করেছেন পেশাদার অ্যাথলেট,

বিশ্বমানের সঙ্গীতজ্ঞ,
দাবার গ্র্যান্ডমাস্টারদের নিয়ে।

যতো সুউচ্চ দক্ষতার ক্ষেত্রসমূহে বাজিমাত
করা সব লোকজন।

এবং তিনি বের করার চেষ্টা করলেন যে,
আসলে কতো সময় দিতে হয়

ওইসব ক্ষেত্রগুলোর সর্বোচ্চ
অবস্থানে পৌছাতে চাইলে।

এবং তিনি যা পেলেন তা হলো-
যতো বেশী আন্তরিক অনুশীলন,

যতো সময় সেই মানুষগুলো ব্যয় করে

কাজের বিষয়বস্তুগুলোকে অনুশীলন করার জন্য,
এখন সেটা যা-ই হোক না কেন?

আপনি যতো সময় দিবেন,
ততো উন্নতি করবেন।

এবং যেই মানুষগুলো যার যার ক্ষেত্রে
সর্বোচ্চ অবস্থানে আছেন

তারা কমবেশি ১০০০০ ঘন্টা
সময় অনুশীলন করেছেন।

তো, আমরা একটু আগে টেলিফোন
গেমের ব্যাপারে কথা বলছিলাম।

আসলে যা ঘটেছে এখন তা বলছি-

ম্যালকম গ্ল্যাডওয়েল নামক একজন লেখক

২০০৭ সালের দিকে একটি বই লিখেন যার নাম ছিল-
"আউটলায়ারস: দ্য স্টোরি অব সাক্সেস"

এবং বইটির মূল উপজীব্য ছিল
১০০০০ ঘন্টার সূত্রটি।

বেশী অনুশীলন করো, ভালোভাবে অনুশীলন করো,
এবং তাহলে তুমি অনেক ভালো করবে,

তোমার ক্ষেত্রে সবার উপরে থাকবে।

তাই, বার্তাটি,

যা ড. এরিকসন আসলে বলেছিলেন-

কোন অতি প্রতিযোগীতামূলক ক্ষেত্রের
সর্বোচ্চ শিখরে উঠতে ১০০০০ ঘন্টা লাগে

আর সেটা খুবই সীমিত একটা বিষয়ের ক্ষেত্রে,
আসলে এটাই তিনি বুঝিয়েছিলেন।

কিন্তু আসলে যা ঘটেছিল তা হচ্ছে-
যখনই "আউটলায়ারস" বের হলো,

সর্বাধিক বিক্রিতের তালিকার
প্রথমে পৌঁছে গেল,

সেখানে পুরোপুরি তিন মাস অবস্থান করলো।

হঠাৎ করেই ১০০০০ ঘন্টা সূত্র সবখানে ছড়িয়ে গেল।

এবং একটা 'গেম অব টেলিফোন' খেলা
সারা সমাজ ব্যাপী শুরু হয়ে গেল।

তাই এ বার্তাটি যে, অতি প্রতিযোগীতামূলক কোন
ক্ষেত্রের শীর্ষে উঠতে ১০০০০ ঘন্টা লাগে,

হয়ে গেল এমন যে, কোন বিষয়ে বিশেষজ্ঞ
হতে হলে ১০০০০ ঘন্টা লাগে।

যেটা হয়ে গেল এমন যে,

কোন বিষয়ে ভালো হতে হলে
১০০০০ ঘন্টা সময় দিতে হয়।

আর সেটা হয়ে গেল,

যেকোন কিছু শিখতে হলে ১০০০০ ঘন্টা
সময় দিতে হয়।

কিন্তু সর্বশেষ বিবৃতিটি-
কোন কিছু শিখতে ১০০০০ ঘন্টা লাগে,

সত্যি নয়,
এটা সত্যি নয়।

তো, গবেষণা আসলে যা বলে-

আমি এখানে সিএসইউ লাইব্রেরিতে অনেক সময় দিয়েছি

জ্ঞানীয় মনোবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনায়,
কারণ আমি একজন কৌতুহলী মানুষ।

এবং দক্ষতা অর্জন নিয়ে যেসব পড়াশোনা হয়েছে
সেগুলোর দিকে আপনি যখন সত্যিই তাকাবেন,

আপনি বারবার এরকম গ্রাফই দেখতে পাবেন।

তো এখন, গবেষকেরা,
তারা যদি অধ্যয়ন করে মোটর দক্ষতা,

আপনি শারীরিকভাবে করেন এমন কিছু কিংবা
মানসিক দক্ষতা নিয়ে,

তারা সময়ের এককে প্রকাশযোগ্য বিষয়
নিয়ে পড়াশোনা করতে চান।

কারণ সময়কে সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করা যায়।

তাই তারা গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদেরকে ছোট
একটা কাজ দিবেন,

শারীরিক বন্দোবস্তের দরকার এমন কাজ,

বা এমন কোন কাজ যা করতে হলে কিছু
মানসিক দক্ষতা অর্জন করতে হয়।

এবং তারা নির্ণয় করবেন যে দক্ষতাটি অর্জন
করতে একজন অংশগ্রহণকারী কত সময় নেয়।

এখন দেখুন গ্রাফটি কি বলছে,
যখন আপনি শুরু করবেন সেক্ষেত্রে-

যখন গবেষকরা অংশগ্রহণকারীদের একটা কাজ
দিল, তখন তাদের অনেক সময় লেগেছিল।

কারণ কাজটিতে তাদের অভিজ্ঞতা
নতুন ও দক্ষতা ভয়াবহ ছিল।

সামান্য কিছু অনুশীলনের মাধ্যমে তারা
ভালো থেকে ভালোতর হতে থাকলো।

এবং সেই প্রথম দিককার অনুশীলন
খুবই খুবই কার্যকরী।

মানুষ অল্প কিছু অনুশীলনের মাধ্যমেই
কোন কাজে ভালো হতে পারে।

এখন, উল্লেখ করার মতোন মজার ব্যাপার হচ্ছে-

যেই দক্ষতাগুলো আমরা আমাদের নিজেদের
জন্য শিখতে চাই সেগুলোর ক্ষেত্রে,

আমরা সময় নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাই না, ঠিক?

আমরা শুধু দেখি আমরা কতো ভালো পারি,
সেই 'ভালো' বলতে যা-ই বোঝানো হোক না কেন।

তাই, আমরা 'কার্যসাধনের সময়' এর পরিবর্তে
যদি 'আপনি কতটা ভালো' এককটি ব্যবহার করি,

গ্রাফটি উলটে যাবে এবং আপনি
তখন তার বিখ্যাত ও সর্বত্র সুবিদিত

জ্ঞান-রেখাটি পাবেন।

এই জ্ঞান-রেখার কাহিনী হচ্ছে-
যখন আপনি কিছু শুরু করেন,

তখন আপনি খুবই আনাড়ি থাকেন
এবং আপনি সেটা জানেন, ঠিক?

(হাসি)

সামান্য কিছু অনুশীলনের মাধ্যমে আপনি
সত্যিই ভালো এবং বেগবান হতে থাকেন।

তাই ওই শুরুর সময়ে উন্নতিটা
প্রকৃতপক্ষেই দ্রুত হয়ে থাকে।

এবং তারপরে একটা সময়ে আপনি একটু
স্থিতিশীল একটা অবস্থানে পৌঁছান,

এবং এর পরের কাজগুলো করা আরো
অনেক কঠিন হয়ে পড়ে।

পরে সময়ও বেশী লাগে।

এখন, আমার প্রশ্ন হচ্ছে-
আমার ওটা চাই, ঠিক?

প্রশ্ন হচ্ছে কতো সময় লাগবে কোনকিছু

আনাড়ি অবস্থায় শুরু করে সেটা শিখে

সেই বিষয়টা মোটামুটি আয়ত্ত করার জন্য?

আশা করি খুব কম সময়েই সম্ভব।

তো, কতো সময় লাগে?

দেখুন আমার গবেষণা কি বলে-
২০ ঘন্টা

এটুকুই।
আপনি শূন্য জ্ঞান নিয়েও শুরু করতে পারেন,

আর যেকোন দক্ষতার ক্ষেত্রেই
একথা বলতে পারেন।

কোনো ভাষা শিখতে চান?
ছবি আঁকা শিখতে চান?

শিখতে চান কিভাবে জ্বলন্ত শৃঙ্খলাকৃতির
করাত দিয়ে ভেল্কি দেখানো যায়?

(হাসি)

আপনি যদি সেটার পেছনে ২০ ঘন্টার মনযোগী
এবং আন্তরিক অনুশীলন বিনিয়োগ করেন,

আপনি অবাক হয়ে যাবেন।

আপনি এটা দেখে অবাক হয়ে যাবেন
যে আপনি কতটা ভালো পারেন।

২০ ঘন্টা- খুবই সম্ভব।

২০ ঘন্টা হচ্ছে প্রতিদিন ৪৫ মিনিট করে
মোট এক মাস।

এমনকি কিছুদিন বাদও দিতে পারবেন তার মধ্যে।

.আলাদাভাবে ২০ ঘন্টা সময় এক করা
খুব একটা কঠিন কাজ নয়।

তো, এটা করার একটা পদ্ধতি আছে।

কারণ, এমন না যে আপনি কাজ শুরু
করে ২০ ঘন্টা যা খুশি তাই করবেন,

আর এতো বড়ো উন্নতিগুলো প্রত্যাশা করবেন।

বুদ্ধিমত্তার সাথে অনুশীলন
করার একটা উপায় আছে।

কার্যকরভাবে অনুশীলনেরও একটা ব্যবস্থা আছে।

এগুলোই নিশ্চিত করবে যে আপনি এই
বিশ ঘন্টা বিনিয়োগ করছেন কি-না,

আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী সবচেয়ে কার্যকরভাবে।

আর এখন আমি পদ্ধতিটা বলছি,
এটা সব ক্ষেত্রেই খাটে-

প্রথমত, দক্ষতাটিকে বিশ্লেষণ করতে হবে।

আপনি ঠিক কোন সামর্থ্যটি অর্জন
করতে চান সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলুন।

এবং এরপর কাজটির দিকে তাকান এবং একে
ছোট ছোট কতোগুলো কাজে ভাগ করুন।

বেশিরভাগ বিষয় যা আমরা
দক্ষতা হিসেবে গণ্য করি,

আসলে অন্য কতগুলো আলাদা
রকম দক্ষতার সমন্বয়ে গঠিত হয়।

আপনি দক্ষতাগুলোকে যতো
বেশী ভাঙ্গতে পারবেন,

ততো সহজে আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন যে,

দক্ষতার কোন অংশগুলো
আমার নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনে

আমাকে সবচেয়ে বেশী সাহায্য করবে?

আর এরপর আপনি প্রথমে সেগুলো অনুশীলন করবেন।

আর যদি আপনি সবচেয়ে জরুরিগুলো
আগে অনুশীলন করেন,

আপনি আরও বেশী পারদর্শী হতে পারবেন,

যথাসম্ভব কম সময়ে।

দ্বিতীয়ত, এমন পরিমাণে শিখুন যাতে
আত্ম-সংশোধন করতে পারেন।

তাই, যা শিখতে চাইছেন সেই বিষয়ে তিন থেকে
পাঁচটি পড়াশোনার সামগ্রী জোগাড় করে রাখুন।

সেটা হতে পারে বই, ডিভিডি,
কোন কোর্স অথবা যেকোন কিছু।

কিন্তু সেগুলো যাতে আবার অনুশীলনের
সময় দীর্ঘসূত্রীতার কারণ হয়ে না দাঁড়ায়।

আমি নিজেই এমনটা করি।

ধরেন, প্রোগ্রামিং শেখার ২০ টি বই নিলাম।

যেন কম্পিউটার প্রোগ্রাম করতে শিখে যাবো,

যখন এই ২০টি বই শেষ করে ফেলবো।

না, এটা আসলে ঢিলেমি।

আপনি যা করতে চাইছেন সেটা হচ্ছে-
এমন যথেষ্ট পরিমাণে শেখা,

যাতে আপনি আসলে অনুশীলন করতে পারেন,

এবং অনুশীলন করতে করতে আত্ম-সংশোধন
বা আত্ম-সম্পাদনা করতে পারেন।

তাই, শেখার মাধ্যমে আপনি পারদর্শী হয়ে ওঠেন

নিজের ভুলটা খেয়াল রাখার কাজে

এবং তারপর কিছুটা ভিন্ন কিছু করায়।

তৃতীয় ব্যাপারটি হচ্ছে অনুশীলনের
পথের সব বাধা বিপত্তি দূর করা।

মনযোগ বিনষ্টকারী কিছু, টিভি, ইন্টারনেট...

এই সব জিনিসগুলো বাধা
হিসেবে সামনে এসে দাঁড়ায়,

যখন আপনি বসে বসে আপনার কাজটি করতে থাকবেন।

আর আপনি যতোই আপনার ইচ্ছা
শক্তি প্রয়োগ করতে থাকবেন,

সেই কাজে বাধাদানকারী
জিনিসটাকে দূর করার জন্য,

ততোই আপনার মনযোগ দিয়ে অনুশীলনের
মাত্রা বেড়ে যাবে, ঠিক?

এবং চতুর্থ ব্যাপারটি হচ্ছে-
কমপক্ষে ২০ ঘন্টা অনুশীলন করা।

তো, বেশিরভাগ দক্ষতা অর্জনে একটা বাধা থাকে,
যাকে আমি বলি "হতাশার বাধা"।

কেউ "প্রবলভাবে অযোগ্য হওয়া এবং সেটা জানা"
এই সম্পর্কে অবগত আছেন কি?

এটা আসলেই খুব হতাশার।
নিজেকে নির্বোধ ভাবতে কারোরই ভালো লাগে না।

এবং 'নিজেকে নির্বোধ মনে হওয়া' আসলে আমাদের
কাজ চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে একটা বাধা।

তাই, আপনি যা-ই করতে চান না কেন,
সেটা অনুশীলন করার দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে

কমপক্ষে ২০ ঘন্টা অনুশীলন করতে পারলে,

আপনি সেই প্রাথমিক 'হতাশার বাধা'
কাটিয়ে উঠতে পারবেন

এবং কাজটিতে সফল হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয়
অনুশীলনে লেগে থাকতে পারবেন।

এইতো!
এটা আসলে রকেট বিদ্যা না।

খুবই সাধারণ চারটি ধাপ যার মধ্য
দিয়ে যেকোন কিছু শেখা যায়।

তো এখন, এগুলো তাত্ত্বিকভাবে বলা অনেক সহজ,

কিন্তু ব্যাবহারিকভাবে দেখিয়ে বলা আরো মজার।

তো আমি অনেকদিন ধরে যা যা শেখার ইচ্ছা পোষণ
করে আসছিলাম তার মধ্যে একটি হচ্ছে-

ইউকেলেলে বাজানো।

কেউ কি 'জেইক শিমাবুকারো' এর
টেডটক দেখেছেন?

যেখানে তিনি ইউকেলেলে বাজিয়েছেন
এবং এমন শব্দ সৃষ্টি করেছেন যেন,

তিনি এক ইউকেলেলে দেবতা।

আসলেই অসাধারণ!

আমি যখন দেখলাম তখন ভাবলাম-
"এটা আসলেই অনেক সুন্দর"

এটা এমন একটা চমৎকার বাদ্যযন্ত্র।
আমি অবশ্যই এটা বাজানো শিখতে চাই।

এবং তাই আমি আমার সূত্রটি
পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিলাম।

আমি ২০ ঘন্টা ইউকেলেলে অনুশীলনের
জন্য রাখতে চাইলাম

এবং দেখতে চাইলাম কি হয়।

তাহলে ইউকেলেলে বাজাতে গেলে
প্রথমে আপনাকে যা করতে হবে-

অনুশীলন করার জন্য একটা ইউকেলেলে
থাকতে হবে, তাই না?

তাই, আমি একটা ইউকেলেলে জোগাড় করলাম এবং
-- আমার সুদর্শন সহযোগী?

(হাসি)

ধন্যবাদ, জনাব।
মনে হয় এখানে আমার কর্ডের দরকার হবে।

এটা শুধু একটা ইউকেলেলে নয়,
এটা একটা বৈদ্যুতিক ইউকেলে। (হাসি)

হ্যাঁ...

তাই, প্রথম কয়েক ঘন্টা ঠিক অন্য সবগুলোর
প্রথম কয়েক ঘন্টার মতোই।

আপনাকে অনুশীলনের সরঞ্জামগুলো
যোগাড় করতে হবে।

আপনাকে সেগুলোর প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে।

শুরুতে আমার ইউকেলেলেতে তার ছিল না।

আমাকে ভাবতে হয়েছে কিভাবে তার লাগানো যায়।

যেন এটাও একরকম গুরুত্বপুর্ণ, ঠিক?

আর সুর তুলতে শেখা, নিশ্চিত করতে শেখা যে

অনুশীলনের জন্য যা যা করার দরকার

সব করা হয়েছে, ঠিক আছে?

এখন, আমি যখন সত্যি সত্যি অনুশীলন শুরু করতে
প্রস্তুত হলাম তখনকার একটা ব্যাপার বলছি-

আমি অনলাইন ডাটাবেস এবং গীতবিতানগুলোতে
দেখলাছিলাম কিভাবে গানগুলির সাথে বাজাতে হয়।

তারা বলেছিল, ইউকেলেলেতে তুমি একসাথে
একটার বেশী তার বাজাতে পারবে,

তাই কর্ড বাজানো যায়, এটা খুবই ভালো।

আপনি নিজেই নিজেকে সাহায্য করবেন,
হ্যাঁ আপনি। (হাসি)

আর যখন আমি গানগুলোর দিকে তাকালাম,

আচ্ছা, আমার একটি ইউকেলেলে কর্ডের
বই ছিল যেটাতে কয়েকশর মতো কর্ড ছিল।

সেগুলোর দিকে তাকালাম আর ভাবলাম
"ওরে বাবা, ভয়ঙ্কর!"

কিন্তু আপনি যখন আসল গানগুলোর দিকে তাকান,

তখন আপনি একই কর্ড দেখেন, ঠিক না?

আমরা তো জেনেছি যে ইউকেলেলে বাজানো
শেখা অন্য যেকোন কাজের মতোই।

তবে কিছু ছোটখাট বিষয়
আছে যেগুলো খুবই গুরুত্বপুর্ণ,

আর কিছু টেকনিক আছে যেগুলো
আপনি সবসময় ব্যবহার করবেন।

এবং বেশিরভাগ গানেই আপনি চারটি
কি পাঁচটি কর্ড ব্যবহার করবেন।

এটুকুই, এতেই গান হয়ে যাবে।

আপনাকে একশটি জানতে হবে না,
যতক্ষণ আপনি ঐ চারটি বা পাঁচটি জানবেন।

তাই, যখন আমি আমার গবেষণাটি করছিলাম,

আমি কতোগুলো জনপ্রিয় গানের একটা অপূর্ব
এবং ছোটখাট মিডলির সন্ধান পেয়েছিলাম

'অ্যাক্সিস অব অওসাম' নামে এক ব্যান্ডের করা।
(বাঁশি)

--এখানে কেউ ইতোমধ্যে জানেও--

আর 'অ্যাক্সিস অব অওসাম' যেটা বলে তা হচ্ছে-
আপনি শিখতে পারবেন,

কিংবা আপনি বেশ ভালো বাজাতে পারবেন
গত পাঁচ দশকের যেকোন জনপ্রিয় গান,

যদি আপনার চারটি কর্ড জানা থাকে,

আর সেই চারটি কর্ড হচ্ছে-
জি, ডি, ই-মাইনর এবং সি।

চারটি কর্ড দিয়ে যেকোন জনপ্রিয়
সঙ্গীতের বাদ্য তুলে ফেলা যায়, ঠিক?

তাই আমি ভাবলাম, দারুণ তো!

আমি দুনিয়ার সব জনপ্রিয় গানের
বাদ্য তুলে ফেলবো।

তো, আমি এই গানটা প্রথমে
শেখার সিদ্ধান্ত নিলাম।

আমি আসলে আপনাদের সাথে এটা শেয়ার করতে চাই।
প্রস্তুত?

(তালি)
ঠিক আছে

(বাদ্য)

(গান চলছে)
শুধু এক ছোট্ট শহুরে মেয়ে

থাকতো নির্জন এক পৃথিবীতে,

সে ধরলো মধ্যরাতের ট্রেন,
যা তাকে নিয়ে হারিয়ে যাবে।

শুনেছি আমি- নাকি ঘর বেঁধেছ তুমি,
(হাসি)

আরেক নারী পেয়েছ খুঁজি,

তুমি বিবাহিত তাও বুঝি।

প্রতি রাতে আমার স্বপ্নে
(হাসি)

দৃষ্টিতে তুমি, অনুভবে তুমি,

আর আমি জানি এভাবেই তুমি বয়ে যাও।
(হাসি)

আমি আর সংকোচ করবো না, না না...
তোমার আমি, তোমায় ছাড়া থাকতে পারি না।

তুমি ছিলে অসাধারণ তাই,
করতাম আমরা অসাধারণ কিছু

যদি হতো সম্ভব, তবে ঠিকই করতাম,
তুমি যেখানেই যাও, আমি সাথেই যেতাম।

তুমি কি আজ রাতের ভালোবাসা অনুভব করছো?
(হাসি)

তোমাকে পেলেও আমি বাঁচবো না,
তোমাকে না পেলেও আমি বাঁচবো না।

যখন আমি খুঁজে পাই নিজেকে--

যখন বিপদে পড়ি আমি, তখন দেখা দেন মাতা মেরি।

মাঝে মাঝে মনে হয়, সঙ্গিনী থাকা ভালো নয়।
নারী যদি না থাকে, কান্না আসবে কোত্থেকে?

হ্যাঁ মা, এটা স্বপ্ন, আমি নিশ্চিত।

আমি এসেছি এক নিম্নভূমি থেকে।
(হাসি)

একবার এক সোয়েগম্যান বিলের পাশে করলো ঘর।

আরে, পেলাম তোমার দেখা, আর এটা তো পাগলামি,
(হাসি)

এইটা আমার নাম্বার, কল দিও তুমি।
হে... সুন্দরী যুবতী,

ওপ্পা গ্যাংনাম স্টাইল...
(হাসি)

বিদায় বলার সময় তো এটাই।

পড়ন্ত বেলা, প্রত্যেক নতুন শুরু,
সে তো অন্য কোন শুরুরই শেষ।

(গান ও বাদ্য শেষ)
(তালি)

ধন্যবাদ, ধন্যবাদ।

গানটি আমার খুবই প্রিয়।
(হাসি)

এবং আমি আপনাদের সাথে একটি
গোপন কথা ভাগাভাগি করতে চাই।

এখানে এইমাত্র গানটি বাজানোর মাধ্যমে,

আমি আমার ইউকেলেলে
অনুশীলনের ২০ ঘন্টা পূর্ণ করলাম।

(তালি)
ধন্যবাদ

তো এটা অসাধারণ, আপনি যেকোন ক্ষেত্রেই এটা
প্রয়োগ করতে পারবেন।

আপনি কি করতে চান?

নতুন কিছু শেখার প্রধান অন্তরায় আসলে
বুদ্ধিবৃত্তিক কিছু নয়।

কিংবা এটা কোন কৌশল শেখারও ব্যাপার না।

আসলে প্রধান বাধাটা হচ্ছে আবেগ সংক্রান্ত।
আমরা আসলে ভয় পাই।

নিজেকে নির্বোধ ভাবা ভালো কোন অনুভূতি নয়।

নতুন কোন কিছু শেখার শুরুতে

নিজেকে নির্বোধ মনে হয়।

তাই আসল প্রতিবন্ধকতাটা বুদ্ধিবৃত্তিক নয়,
আবেগ সংক্রান্ত।

কিন্তু কোন কিছুতে ২০ ঘন্টা দিন।

এটা কোন ব্যাপার না
আপনি কি শিখতে চান?

আপনি কি কোন ভাষা শিখতে চান?
রান্না শিখতে চান?

ছবি আঁকা শিখতে চান?

কোনটি আপনাকে উজ্জীবিত করে?
কোনটি আপনাকে প্রজ্বলিত করে?

শুরু করে দিন এবং করে ফেলুন কাজটি।
২০ ঘন্টারই তো ব্যাপার।

আনন্দে থাকুন।

(তালি)