-
নীল ডেগ্রিস টাইসন : এই হল তুমি,
-
আমি এবং তোমার কুকুরের গল্প ।
-
( নেকড়ে ডাকছে )
-
এক সময় ছিল, খুব বেশী আগে নয়...কুকুরদের আবির্ভাবের আগে ।
-
এদের অস্তিত্ব ছিল না ।
-
এখন তো বড়, ছোট, চুপচাপ বসে থাকা,
-
পাহারাদার, শিকারী,
-
তুমি চাইতে পার এমন সকল ধরণের কুকুর রয়েছে ।
-
কিভাবে এমনটা ঘটল ?
-
শুধু কুকুর নয়,
-
কোথা থেকে জীবিত প্রাণীদের
-
সকল ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির আবির্ভাব ঘটল ?
-
এই প্রশ্নের উত্তর হল একটি রূপান্তরকারী শক্তি যা অনেকটা
-
রূপকথা বা পৌরাণিক কাহিনী থেকে উঠে আসা কোন কিছুর মত ।
-
কিন্তু এটা এমন কোন কিছু নয় ।
-
-
বাংলা অনুবাদ ও সাবটাইটেল নির্মান: অদ্বিত কান্তি রাউৎ ।
-
চলো ফিরে যাই ৩০,০০০ বছর পেরিয়ে কুকুরদের আবির্ভাবের আগে এক সময়ে,
-
যখন আমাদের পূর্বপুরুষগণ সর্বশেষ বরফযুগের
-
অন্তহীন শীতের মধ্যে বসবাস করছিলেন ।
-
আমাদের পূর্বপুরুষগণ ছিলেন যাযাবর, তারা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বাস করতেন ।
-
নক্ষত্রদের নীচে তারা শুতেন ।
-
রাতের আকাশ ছিল তাদের গল্পের বই, বর্ষপঞ্জি,
-
বেঁচে থাকার একটা নির্দেশনা বিবরণী ।
-
এটা তাদের বলত কখন বেশী ঠান্ডা পড়বে,
-
কখন জংলী শস্য পাকবে,
-
কখন ক্যারিবও (এক ধরণের বল্গা হরিণ) এবং মহিষের দল কাছ দিয়ে যাবে ।
-
তাদের কাছে ঘর বলতে পুরো পৃথিবী বুঝত ।
-
কিন্তু তারা অন্য ক্ষুধার্থ পশুদের ভয়ে বসবাস করতেন । যেমন ....
-
পাহাড়ী সিংহ এবং ভাল্লুক
-
যেগুলো তাদের সাথে প্রতিযোগীতা করত একই শিকারের জন্য
-
এবং নেকড়েগুলো অপহরণ করার এবং খেয়ে ফেলার ভয় প্রদর্শন করত
-
দলের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বলদের ।
-
-
-
সকল নেকড়েই হাড্ডি পেতে চায়
-
কিন্তু এদের বেশীরভাগই মানুষের কাছে আসতে ভয় পায় ।
-
এদের রক্তে থাকা চাপ হরমোনের উচ্চ মাত্রার কারণে
-
তাদের এই ভয় ।
-
টিকে থাকার ব্যাপার এটা ।
-
কারণ মানুষের খুব বেশী কাছে আসা প্রাণঘাতী হতে পারে ।
-
কিন্তু প্রাকৃতিক বৈচিত্রতার কারণে কিছু নেকড়ের
-
ঐসব হরমোন কম মাত্রায় ছিল ।
-
যা তাদের মানুষের প্রতি কম ভীত করেছে ।
-
এই নেকড়েটি যা আবিস্কার করেছে তা
-
এর পূর্বপুরুষদের একটি শাখা বের করেছিল
-
১৫,০০০ বছর আগে ........
-
টিকে থাকার একটা অসাধারণ উপায় ;
-
মানুষের পোষ মানা ।
-
মানুষকে শিকার করতে দাও, তাদের জন্য হুমকি হয়ো না,
-
এবং তারা তোমাকে তাদের আবর্জনা, উচ্ছিস্ট খুটে খুটে খেতে দিবে ।
-
তুমি নিয়মিত বেশী খাবার পাবে, বেশী সন্তান ছেড়ে যাবে,
-
এবং ওসব সন্তানরা তোমার ধারা অনুসরণ করবে ।
-
গৃহপালিত হবার এই নির্বাচন
-
প্রত্যেক প্রজন্মের সাথে আরো শক্তিশালী হয়ে গেছে ।
-
যদ্দিন না বন্য নেকড়েদের সেই শাখা বিবর্তিত হয়
-
কুকুরে ।
-
তুমি একে ''বন্ধুত্বপূর্ণ বেঁচে থাকা'' বলতে পারো ।
-
-
এটা মানুষের জন্যও ভাল লাভদায়ক ছিল ।
-
আবর্জনাখোর কুকুরগুলো শুধু একটা পরিস্কারকর্মী দলই ছিল না,
-
তারা নিরাপত্তার কাজও করত ।
-
-
-
এই আন্তঃপ্রজাতীয় বন্ধুত্ব সময়ের সাথে এগিয়ে যাবার সাথে সাথে
-
কুকুরদের চেহারাও বদলাতে লাগল ।
-
সৌন্দর্য হয়ে উঠল একটা নির্বাচনী সুবিধা ।
-
তুমি যত আদুরে হবে, তোমার তত বেশী সুযোগ মিলবে
-
বাঁচার এবং অন্য প্রজন্মে তোমার জিন পাঠিয়ে দেবার ।
-
যা শুরু হয়েছিল পারস্পরিক উপকারের জন্য একটা সমঝোতা হিসেবে
-
পরিণত হল একটা বন্ধুত্বে, যেটা সময়ের সাথে আরো গভীর হয়ে উঠল ।
-
পরবর্তীতে কি ঘটে দেখার জন্য,
-
২০,০০০ বছর আগে চলো আমাদের দূরবর্তী পূর্বপুরুষদের ছেড়ে
-
যাই কোন এক নিকট অতীতে ভ্রমণ করতে
-
বরফ যুগের এক মধ্যবিরতির সময়ে ।
-
জলবায়ুর এই বিরতি একটা বিপ্লবের সূচনা করে ।
-
ঘুরে বেড়ানোর বদলে লোকজন এক জায়গায় বাস করতে লাগল ।
-
পৃথিবীতে এক নতুন জিনিস সামনে আসল ... গ্রাম ।
-
লোকজন এখনও শিকার এবং সংগ্রহ করত,
-
কিন্তু এখন তারা খাদ্য ও বস্ত্র উৎপাদন করতে লাগল
-
এবং কৃষিকাজও শুরু করল ।
-
নেকড়েরা তাদের স্বাধীনতা হস্তান্তর করল
-
নিয়মিত খাদ্য পাবার বিনিময়ে ।
-
নেকড়েরা তাদের সঙ্গী চয়ন করার অধিকার ছেড়ে দিল ।
-
এখন মানুষ তাদের জন্য চয়ন করে দিত ।
-
মানুষেরা ক্রমাগত মারতে লাগল এমন কুকুরদের যেগুলোকে প্রশিক্ষিত করা যেত না;
-
যেগুলো খাওয়ানোর সময় হাতে কামড় দিয়ে দিত ।
-
তারা সেসব কুকুরদেরই পালন করত যেসব কুকুরগুলো তাদের খুশি রাখত ।
-
-
তারা সেসব কুকুরদের যত্ন করত যেসব কুকুর তাদের আদেশ পালন করত ...
-
শিকার করত, দল সামলাত, পাহারা দিত, পরিবহন করত,
-
সঙ্গ দিত ।
-
প্রতিবার প্রসব থেকে
-
মানুষ সেই বাচ্চাগুলোই নির্বাচন করত যেগুলো তারা সবচেয়ে বেশী পছন্দ করত ।
-
অনেক প্রজন্ম পরে কুকুরেরা বিবর্তনের ধারায় আবির্ভূত হল ।
-
এ ধরণের বিবর্তনকে বলা হয় ''কৃত্তিম নির্বাচন''
-
অথবা ব্রীডিং ।
-
নেকড়েদের কুকুরে পরিণত করে প্রথমবার
-
আমরা মানুষ বিবর্তনকে আমাদের নিজেদের হাতে নিয়ে নিয়েছিলাম ।
-
আমরা তখন থেকে এমনভাবে রূপ দান করে যাচ্ছি
-
আমাদের প্রয়োজনীয় পশু এবং গাছপালার সাথে ।
-
মহাজাগতিক সময়ের চোখের পলকে, মাত্র ১৫,০০০ থেকে ২০,০০০ বছরে
-
আমরা ধূসর নেকড়েদের পরিবর্তন করে দিয়েছি
-
সকল ধরণের কুকুরে যাদের আমরা ভালবাসি ।
-
চিন্তা করে দেখো
-
তুমি যত কুকুরের বাচ্চা দেখেছো
-
মানুষের হাতে তৈরি হয়েছিল ।
-
আমাদের অনেক বেস্ট ফ্রেন্ড, সবচেয়ে জনপ্রিয় বংশধরগুলো
-
শেষ কয়েক শতকেই সৃষ্টি হয়েছিল ।
-
-
বিবর্তনের অসামান্য ক্ষমতা
-
হিংস্র ক্ষুধার্থ নেকড়েদের পরিণত করেছিল
-
বিশ্বাসী কুকুরে বদলে দিয়েছিল ...
-
যারা দলকে রক্ষা করে এবং নেকড়েদের দূরে ভাগিয়ে দেয় ।
-
কৃত্তিম নির্বাচন নেকড়েদের কুকুরে
-
এবং বন্য ঘাসগুলোকে গম ও ভূট্টায় পরিণত করেছিল ।
-
বস্তুত, প্রায় সকল গাছপালা এবং পশু যা আমরা আজ খাই
-
একটা বন্য ও খাওয়ার অযোগ্য পূর্বপুরুষ থেকে সেগুলোর উদ্ভব ঘটেছিল ।
-
যদি কৃত্তিম নির্বাচন মাত্র ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ বছরে
-
এমন অসামান্য পরিবর্তন আনতে পারে,
-
তবে প্রাকৃতিক নির্বাচন শত কোটি বছর ধরে ক্রিয়া করে
-
কিই না করতে পারে ?
-
উত্তর হল জীবনের সকল সৌন্দর্য এবং বৈচিত্র্য ।
-
বিবর্তন কিভাবে কাজ করে ?
-
আমাদের কল্পনার মহাকাশযান আমাদেরকে স্থান ও সময়ের
-
যেকোন জায়গায় নিয়ে যেতে পারে, এমনকি লুকোনো ক্ষুদ্র ব্রহ্মান্ডে
-
যেখানে এক ধরণের জীবন অন্য ধরণের জীবনে পরিবর্তিত হতে পারে ।
-
এসো, আমার সাথে ।
-
দেখে যদিও মনে হয় না,
-
কিন্তু আমরা একটা বরফ যুগে বাস করছি
-
শেষ বিশ লক্ষ বছর ধরে ।
-
শুধু একটা দীর্ঘ বিরতি চলছে ।
-
এই বিশ লক্ষ বছরের বেশীরভাগ সময় জুড়েই
-
জলবায়ু ঠান্ডা ও শুষ্ক আছে ।
-
উত্তর মেরুর বরফাচ্ছাদন দক্ষিণে অনেকদূর পর্যন্ত সম্প্রসারিত ছিল
-
আজকের তুলনায় ।
-
ঐসব দীর্ঘ ঠান্ডা হিমকালে
-
যখন শীতকালীন বরফে জমে যাওয়া সমুদ্র দক্ষিণ মেরু থেকে
-
একেবারে নীচের দিকে লস এঞ্জেলেস পর্যন্ত ব্যাপ্ত ছিল ।
-
বিশালাকার ভাল্লুক আয়ারল্যান্ডের বরফময় এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছিল ।
-
একে দেখে মনে হচ্ছে একটা সাধারণ ভাল্লুক
-
কিন্তু অসাধারণ কিছু তার ভিতর ঘটছে ।
-
এমনকিছু যা একটা নতুন প্রজাতির জন্ম দিবে ।
-
এটা দেখতে হলে,
-
আমাদের খুব ক্ষুদ্র এক পরিসরে নেমে যেতে হবে,
-
কোষীয় স্তরে,
-
যাতে আমরা ভাল্লুকটির প্রজনন ব্যবস্থা অনুসন্ধান করতে পারি ।
-
হৃদয়ের মধ্য দিয়ে আমরা সাক্লেভিয়ান ধমনীর রাস্তা নেব
-
প্রায় সেখানে পৌঁছে গেছি ।
-
এগুলো হল তার কিছু ডিম ।
-
ডিমগুলোর যে কোন একটায় কি ঘটছে দেখার জন্য
-
আমাদের আরো ছোট হতে হবে ।
-
আমাদের ছোট হতে হবে আণবিক স্তরে যাবার জন্য ।
-
আমাদের কল্পনার যান এখন এত ছোট
-
তুমি এরকম দশ লক্ষ যান একটা বালির দানার মধ্যে এটে দিতে পারো ।
-
ওসব গ্লাইডারের উপর দিয়ে ভারসাম্য রক্ষা করে চলা লোকগুলোকে দেখছো ?
-
এরা কিনেসিন নামক প্রোটিন ।
-
এই কিনেসিনগুলো পরিবহন দলের অংশ
-
যেগুলো কোষের চারপাশে মালপত্র বহন করতে ব্যস্ত ।
-
তারা দেখতে কত আজব ।
-
এখনও এই ক্ষুদ্র জীবগুলো এবং তাদের মত সত্ত্বাগুলো
-
প্রতিটা জীবিত কোষের অংশ, এমনকি তোমার মধ্যে থাকা প্রতিটি কোষেরও ।
-
যদি জীবনের একটা আশ্রয়স্থল থাকে,
-
এটা এখানেই নিউক্লিয়াসের মধ্যে যেটা আমাদের DNA ধারণ করে
-
জেনেটিক কোডের প্রাচীন পুঁথি ।
-
এটা লেখা হয় এমন একটা ভাষায় যা সব জীবন পড়তে পারে ।
-
DNA হল একটা লম্বা প্যাচানো মই আকৃতির
-
বা দ্বৈত কুন্ডলী আকৃতির অণু ।
-
মইয়ের ধাপগুলো চারটা ভিন্ন প্রকারের
-
অপেক্ষাকৃত ক্ষুদ্র অণু দ্বারা তৈরি ।
-
এগুলো জেনেটিক বর্ণমালার বর্ণ ।
-
এই বর্ণগুলোর বিশেষ সজ্জা সকল জীবিত জিনিসকে
-
নির্দেশাবলী প্রদান করে,
-
তাদের বলে কিভাবে বাড়তে হবে, চলতে হবে, হজম করতে হবে,
-
পরিবেশকে অনুভব করতে হবে, আরোগ্য লাভ করতে হবে, বংশবৃদ্ধি করতে হবে ।
-
DNA এর দ্বৈত কুন্ডলী একটা আণবিক যন্ত্র
-
দশ হাজার কোটি অংশ নিয়ে গঠিত, যাদের বলা হয় পরমাণু ।
-
তোমার DNA এর একটা একক অণুতে যত সংখ্যক পরমাণু থাকে
-
একটা সাধারণ ছায়াপথেও তত তারা থাকে ।
-
এটা কুকুরের, ভাল্লুকের
-
এবং প্রতিটা জীবিত জিনিসের জন্য
-
একইরকম সত্য ।
-
আমরা, আমাদের প্রত্যেকেই একটা ক্ষুদ্র মহাবিশ্ব ।
-
DNA বার্তা প্রতিলিপি তৈরি করে
-
এক কোষ থেকে আরেক কোষ, এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে
-
অত্যন্ত যত্ন সহকারে পৌঁছানো হয় ।
-
নতুন DNA অণুর জন্ম হয় যখন একটা প্যাচখোলা প্রোটিন
-
দ্বৈত কুন্ডলীর তন্তু দু'টিকে আলাদা করে,
-
ধাপগুলোকে ভাগ করে ফেলে ।
-
নিউক্লিয়াসের তরলের ভিতর
-
জেনেটিক কোডের আণবিক অক্ষর স্বাধীনভাবে ভেসে বেড়ায় ।
-
কুন্ডলীর প্রতিটি তন্তু তার হারানো সঙ্গীর প্রতিলিপি তৈরি করে,
-
ফলে দু'টি অভিন্ন DNA অনু তৈরি হয় ।
-
এভাবে জীবন জিনসমূহ পুনুরুৎপাদন করে এবং এদের প্রেরণ করে
-
এক প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে ।
-
যখন একটি জীবিত কোষ দু'ভাগে বিভক্ত হয়,
-
প্রতিটা অংশ DNA এর একটা সম্পূর্ণ প্রতিলিপি সাথে নিয়ে যায় ।
-
একটা বিশেষ ধরনের প্রোটিন মুদ্রন সংশোধন করে এটা নিশ্চিত করতে
-
যেন কেবলমাত্র সঠিক বর্ণগুলোই গৃহীত হয়
-
যাতে DNA সঠিকভাবে প্রতিলিপিকৃত হয় ।
-
কিন্তু কেউ নিখুঁত নয় ।
-
কদাচিৎ, একটা মুদ্রন সংশোধনের ভুল এড়িয়ে যায়,
-
জেনেটিক নির্দেশাবলীর মধ্যে একটা ছোট, এলোমেলো পরিবর্তন ঘটে যায় ।
-
একটা মিউটেশন ঘটেছে ভাল্লুকটির ডিম্বকোষে ।
-
এরকম ক্ষুদ্র একটা এলোমেলো ঘটনার পরিনতি
-
হতে পারে অনেক বড় একটা পরিসরে ।
-
এই মিউটেশন পশমের রং নিয়ন্ত্রনকারী জিনে পরিবর্তন ঘটায় ।
-
এটা ভাল্লুকের সন্তানের পশমে
-
কালো রঞ্জক উৎপাদনে প্রভাব ফেলবে ।
-
বেশীরভাগ পরিব্যক্তিই ক্ষতিকারক নয় ।
-
কিছু প্রাণঘাতী ।
-
কিন্তু একেবারে সামান্য কিছু শুধুই ভাগ্যের জোরে একটা জীবকে দিতে পারে
-
প্রতিযোগীতার উপর এক গুরুতর সুবিধা ।
-
এক বছর চলে গেছে ।
-
আমাদের ভাল্লুক এখন মা ।
-
ঐ মিউটেশনের ফলে
-
তার দু'টা শাবকের মধ্যে একটা সাদা ত্বক নিয়ে জন্মেছে ।
-
যখন শাবকগুলো নিজের উপর নির্ভর করে ঝুঁকি নেবার মত যথেষ্ট বড় হয়
-
কোন ভাল্লুকটি নিশ্চিন্ত শিকারের উপর ঝাপিয়ে পড়তে
-
বেশী সমর্থ হবে ?
-
বাদামী ভাল্লুকটি বরফের মধ্যে এক মাইল দূর থেকেও দেখা যাবে ।
-
সাদা ভাল্লুকটা তার নিজের বিশেষ ধরণের জিনের উপর নির্ভর করে
-
উন্নতি করে এবং এগিয়ে যায় ।
-
এটা বারবার ঘটে ।
-
কয়েক সফল প্রজন্ম ধরে
-
সাদা পশমের জন্য দায়ী জিন ছড়িয়ে পড়ে
-
উত্তর মেরুর ভাল্লুকদের সমগ্র গোষ্ঠীতে ।
-
কালো পশমের জন্য দায়ী জিন হেরে যায়
-
টিকে থাকার প্রতিযোগীতায় ।
-
মিউটেশন পুরোপুরি লক্ষ্যহীনভাবে এবং সর্বদাই ঘটে ।
-
কিন্তু পরিবেশ সেগুলোকে পুরস্কৃত করে
-
যেগুলো টিকে থাকার সুযোগ বৃদ্ধি করে ।
-
এটা প্রাকৃতিকভাবে নির্বাচন করে
-
টিকে থাকার জন্য অধিকতর যোগ্য জীবিত জিনিসদের ।
-
এই বাছাই উদ্দেশ্যহীন নির্বাচনের বিপরীত হয় ।
-
দুই গোষ্ঠীর ভাল্লুক পৃথক হয়ে গিয়েছিল
-
এবং হাজার বছরের ব্যবধানে
-
ভিন্ন বৈশিষ্ট্যে বিকশিত হয়েছিল যা তাদের আলাদা করে দেয় ।
-
তারা ভিন্ন প্রজাতি হয়ে গিয়েছিল ।
-
এটাই চার্লস ডারউইন বুঝিয়েছিলেন
-
তাঁর ''প্রজাতির উৎপত্তি'' বই দ্বারা ।
-
একটা একক ভাল্লুক বিকশিত হয় না
-
ভাল্লুকের জনগোষ্ঠী বিকশিত হয় প্রজন্ম ধরে ।
-
যদি মেরুবর্তী বরফ বৈশ্বিক উষ্ণায়নের দরুন
-
কমে যেতে থাকে, মেরু ভাল্লুক বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে ।
-
তারা বাদামী ভাল্লুক দ্বারা প্রতিস্থাপিত হবে,
-
যারা এখনকার তুষারমুক্ত পরিবেশে ভালরকম অভিযোজিত ।
-
এটা কুকুরদের গল্প থেকে ভিন্ন একটা গল্প ।
-
কোন পালক এসব পরিবর্তনকে নির্দেশনা দেয়নি ।
-
এর বদলে, পরিবেশ নিজেই তাদের বাছাই করে ।
-
এটা হল প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে বিবর্তন,
-
বিজ্ঞানের ইতিহাসে সবচেয়ে বৈপ্লবিক ধারণা ।
-
ডারউইন ১ম এই ধারণার পক্ষে প্রমাণ উপস্থাপন করেছিলেন ১৮৫৯ সালে ।
-
এর ফলে শুরু হওয়া হইচই কখনোই থামেনি ।
-
কেন ?
-
-
''আমাদের এবং বানরদের পূর্বপুরুষ এক'' এই চিন্তায়
-
যে অস্বস্তিকর যন্ত্রনা হয় তা আমরা সবাই বুঝি ।
-
আত্মীয়ের মত কেউ তোমাকে বিব্রত করতে পারে না ।
-
আমাদের সবচেয়ে কাছের আত্মীয় শিম্পাঞ্জী,
-
লোকজনের সামনে এরা বারবার বেমানান আচরণ করে ।
-
তাই মানুষদের নিজেদের তাদের থেকে দূরত্ব রাখার চেষ্টা
-
একটা বোধগম্য বিষয় ।
-
গতানুগতিক বিশ্বাসের একটা মূল প্রতিজ্ঞা
-
হল যে আমরা অন্য প্রাণীদের থেকে
-
আলাদাভাবে তৈরি হয়েছিলাম ।
-
এটা বুঝা সহজ যে কেন এই ধারণা টিকে রয়েছে ।
-
এটা আমাদের স্বতন্ত্র অনুভব করায় ।
-
কিন্তু গাছের সাথে আমাদের আত্মীয়তার সম্পর্কে তোমার কি মত ?
-
এটা তোমাকে কেমন অনুভব করায় ?
-
ঠিক আছে, এখানে ওক গাছের DNA এর একটা ছিন্ন অংশ রয়েছে।
-
এটাকে একটা বরকোড মনে করো ।
-
জীবনের কোডে লেখা নির্দেশাবলী
-
গাছকে বলে কিভাবে চিনি হজম করতে হয় ।
-
এখন একে আমার DNA এর একই অংশের সাথে তুলনা করা যাক ।
-
DNA মিথ্যা বলে না ।
-
এই গাছ এবং আমি-- বহু আগে হারিয়ে যাওয়া আত্মীয় ।
-
শুধু গাছ নয়,
-
তুমি যদি আরো পিছনে যাও তাহলে দেখবে যে আমরা
-
প্রজাপতি
-
ধুসর নেকড়ে
-
মাশরুম,
-
হাঙর,
-
ব্যাকটেরিয়া
-
চড়ুই
-
একই পূর্বপুরুষ থেকে এসেছি ।
-
কি পরিবার !
-
বার কোডের অন্যান্য অংশগুলো ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতিতে ভিন্ন ভিন্ন হয় ।
-
এটাই একটা পেঁচা এবং একটা অক্টোপাসের মধ্যে পার্থক্য তৈরি করে ।
-
যদি তোমার একজন অভিন্ন জমজ না থাকে,
-
মহাবিশ্বে আর কারোরই
-
তোমার মত হুবুহু একই DNA থাকবে না ।
-
অন্য প্রজাতিদের মধ্যে জিনগত পার্থক্য
-
প্রাকৃতিক নির্বাচনের জন্য কাঁচামাল জোগান দেয় ।
-
পরিবেশ নির্বাচন করে কোন জিন টিকে থাকবে এবং সংখ্যাবৃদ্ধি করবে ।
-
জেনেটিক নির্দেশাবলীর প্রশ্ন যখন আসে
-
জীবনের সবচেয়ে মৌলিক কার্যাবলীর জন্য
-
যেমন চিনি হজম করার ক্ষেত্রে আমরা এবং অন্যান্য প্রজাতি
-
প্রায় একই ।
-
কারণ ঐসব কার্যাবলী জীবনের ক্ষেত্রে অত্যন্ত প্রয়োজনীয়
-
এগুলো বিকশিত হয়েছিল বিভিন্ন জীবিত প্রাণী
-
পরস্পর থেকে আলাদা হবার অনেক আগেই ।
-
এই হল আমাদের জীবন বৃক্ষ ।
-
বিজ্ঞান সম্ভব করছে আমাদের পক্ষে
-
পৃথিবীর জীবনের সকল প্রজাতির জন্য
-
এই পরিবার বৃক্ষ নির্মান করা ।
-
নিকটস্থ জেনেটিক আত্মীয় গাছের একই শাখায় অবস্থিত,
-
যেখানে বেশী দুঃসম্পর্কের আত্মীয়রা অনেক দূরে ।
-
প্রতিটা পাতা একটা জীবিত প্রজাতি ।
-
গাছের কান্ড পৃথিবীর সমস্ত জীবনের
-
অভিন্ন পূর্বপুরুষদের নির্দেশ করে ।
-
জীবনের উপাদান এত নমনীয় যে
-
একবার যখন শুরু হয়ে গেল পরিবেশ এটাকে ঢালাই করল
-
বিভিন্ন রূপের এক বিস্ময়কর বৈচিত্র্যে --
-
আমরা এখানে যত দেখাতে পারি তার তুলনায় দশ হাজার গুণ বেশী ।
-
জীববিজ্ঞানীরা এক গুবরে পোকারই পাঁচ লাখ
-
ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতি তালিকাভুক্ত করেছেন ।
-
ব্যাকটেরিয়ার অসংখ্য জাতের
-
উল্লেখ করাই অসম্ভব ।
-
উদ্ভিদ এবং প্রাণীর বহু লক্ষ
-
প্রজাতি রয়েছে যাদের বেশীরভাগ
-
বিজ্ঞানের কাছে অজানা ।
-
চিন্তা করো, পৃথিবীর জীবনের বহু রূপের সাথে
-
আমাদের এখনো যোগাযোগ করা বাকি আছে ।
-
এই একটা ছোট গ্রহতেই
-
কত ধরণের জীবন ।
-
জীবন বৃক্ষ সবদিকে নিজের বিস্তার ঘটায়,
-
যা কিছু কাজ লাগে জীবন বৃক্ষ সেটার খোঁজ করে এবং নিজের কাজে লাগায়,
-
নতুন পরিবেশ এবং নতুন সুযোগ
-
সৃষ্টি করে নতুন জীবনের জন্য ।
-
জীবন বৃক্ষ সাড়ে তিনশ কোটি বছর পুরোনো ।
-
এমন একটা চিত্তাকর্ষক নাটক মঞ্চস্থ করার উপায়
-
উন্নত করার জন্য এই সময় অনেক ।
-
বিবর্তন একটা প্রাণীকে একটা গাছের
-
ছদ্মবেশ দিতে পারে...
-
শিকার খুঁজে বেড়ানো
-
শিকারীদের বোকা বানাবার জন্য
-
জটিল আবরণ উদ্ভাবন করতে
-
হাজার প্রজন্ম লেগে যায় ।
-
অথবা এটা একটা গাছকে একটা প্রাণীর ছদ্মবেশ দেয়
-
এমনভাবে মুকুল বিকশিত করে যেন তা একটা বোলতার উপস্থিতির রূপ নেয়--
-
অর্কিড এভাবে আসল বোলতাদের বোকা বানিয়ে তাদের দিয়ে পরাগায়ন ঘটায় ।
-
এটা প্রাকৃতিক নির্বাচনের অসাধারণ
-
রূপ পরিবর্তন ক্ষমতা ।
-
বিশাল জীবন বৃক্ষের ঘন জট পাকানো কান্ডে
-
তোমার অবস্থান এখানে ।
-
অগণিত লক্ষ লক্ষ শাখার মধ্যে একটা ছোট্ট শাখায় ।
-
বিজ্ঞান প্রকাশ করে যে, পৃথিবীর সকল জীবনের মূলসুর একটাই।
-
ডারউইন আবিস্কার করেছিলেন বিবর্তনের আসল কার্যপদ্ধতি ।
-
প্রচলিত বিশ্বাস ছিল যে জীবনের
-
জটিলতা এবং বৈচিত্র্যতা অবশ্যই একজন
-
বুদ্ধিমান নকশাকারের কাজ যে কিনা এসব লক্ষ ভিন্ন ভিন্ন
-
প্রজাতির প্রত্যেকটি আলাদাভাবে সৃষ্টি করেছিলেন ।
-
জীবিত জিনিস নির্দেশনাহীন বিবর্তনের
-
ফসল হবার পক্ষে অত্যন্ত জটিল ।
-
মানুষের চোখের কথাই বিবেচনা করো,
-
জটিলতার এক অসাধারণ শিল্পকর্ম ।
-
এর প্রয়োজন একটা কর্ণিয়া,
-
আইরিস, লেন্স, রেটিনা,
-
অক্ষিস্নায়ু, পেশী,
-
ছবি ফুটিয়ে তুলতে ব্যবহৃত
-
মস্তিস্কের বিস্তৃত স্নায়বিক নেটওয়ার্কের কথা তো বাদই দিলাম ।
-
এটা আজ অব্দি মানুষ নির্মিত যেকোন যন্ত্রের
-
চেয়ে বেশী জটিল ।
-
অতএব বিষয়টি বিতর্কিত ছিল,
-
মানবচক্ষু উদ্দেশ্যহীন বিবর্তনের
-
ফসল হতে পারে না ।
-
এটা সত্য কিনা জানতে হলে আমাদের সময় পড়ি দিয়ে যেতে হবে
-
এমন এক দুনিয়ায় যখন দেখার জন্য চোখ ছিল না ।
-
শুরুতে
-
জীবন ছিল অন্ধ ।
-
চারশ কোটি বছর আগে
-
যখন দেখার জন্য চোখ ছিল না
-
তখন আমাদের দুনিয়া এরকম দেখাত ।
-
যদ্দিন না কয়েক কোটি বছর পার হল
-
আর তখন একদিন
-
এক ব্যাকটেরিয়ার DNA এর মধ্যে
-
একটা আণুবীক্ষণিক অনুলিপি ত্রুটি ঘটল ।
-
এই যদৃচ্ছ মিউটেশন ঐ অনুজীবকে
-
একটা প্রোটিন অনু দিল যেটা সূর্যালোক গ্রহণ করত ।
-
জানতে চাও, আলোক সংবেদী ব্যাকটেরিয়ার কাছে
-
দুনিয়া কেমন দেখাত ?
-
পর্দার ডানদিকে তাকাও ।
-
মিউটেশনগুলো এলোমেলোভাবে ঘটছিল,
-
যেমনটা জীবিত জিনিসের যেকোন গোষ্ঠীতে সর্বদাই ঘটে থাকে ।
-
আরেকটা মিউটেশনের কারণে
-
অন্ধকার ব্যকটেরিয়া তীব্র আলো থেকে পালিয়ে বেড়াতে থাকে ।
-
এখানে কি ঘটছে ?
-
রাত আর দিন ।
-
যেসব ব্যাকটেরিয়া আলো থেকে অন্ধকার পার্থক্য করতে পারত
-
তারা অন্যান্য ব্যাকটেরিয়ার উপর একটা চূড়ান্ত সুবিধা পেল ।
-
কেন ?
-
কারণ দিনের বেলা প্রখর অতি বেগুনী রশ্মি নিয়ে আসত
-
যা DNA এর ক্ষতি করে ।
-
সংবেদনশীল ব্যাকটেরিয়া এই তীব্র আলো থেকে পালিয়ে বেড়াত
-
অন্ধকারে তাদের DNA নিরাপদে বিনিময় করার জন্য ।
-
এরা তলদেশে থাকা ব্যাকটেরিয়াদের তুলনায়
-
বেশী সংখ্যায় বাড়তে লাগল ।
-
সময়ের সাথে ঐসব আলোক সংবেদী প্রোটিন
-
অধিক অগ্রসর এককোষী জীবের
-
একটা রঞ্জক স্থানে পুঞ্জীভূত হয়েছিল ।
-
এতে ব্যাকটেরিয়াদের পক্ষে আলো খুঁজে বের করা সম্ভব হয়েছিল,
-
একটা অভূতপূর্ব সুবিধা
-
এক ধরণের জীবের জন্য যারা সূর্যালোক ব্যবহার করে খাদ্য তৈরি করে ।
-
একটা ফ্ল্যাটওয়ার্ম দুনিয়াকে এরকম দেখত ।
-
এই বহুকোষী জীব
-
রঞ্জক স্থানের মধ্যে একটা খাঁজ তৈরি করেছিল ।
-
এই বাটি আকৃতির গর্ত
-
প্রাণীটিকে আলো থেকে ছায়া পার্থক্য করতে সাহায্য করেছিল
-
যাতে প্রাণীটি তার কাছাকাছি কোন বস্তুর উপস্থিতি,
-
সেই সাথে যেগুলো খাওয়া যায় এবং যেগুলো তাকে খেতে পারে সেগুলো আবছাভাবে বুঝতে পারে ।
-
একটা অসাধারণ সুবিধা ।
-
পরবর্তীতে জিনিস একটু পরিস্কার হল ।
-
খাঁজ গভীর হল
-
এবং একটা ছোট্ট ফাঁকবিশিষ্ট কোটরে পরিণত হল ।
-
হাজার হাজার প্রজন্ম পরে
-
প্রাকৃতিক নির্বাচন ধীরে ধীরে চোখ গঠন করছিল
-
ফাঁকটি একটা রক্ষাকারী স্বচ্ছ ঝিল্লী দ্বারা আবূত
-
একটা পিনহোলে সংকুচিত হল ।
-
কেবলমাত্র সামান্য আলোই ক্ষুদ্র ছিদ্রে প্রবেশ করতে পারত,
-
কিন্তু এটা চোখের সংবেদনশীল অভ্যন্তরীণ পৃষ্ঠে
-
একটা অনুজ্জ্বল ছবি চিত্রিত করার জন্য যথেষ্ট ছিল ।
-
এটা নজরকে তীক্ষ্ন করল ।
-
একটা বড় ফাঁক বেশী আলো ভিতরে আসতে দিত
-
যাতে একটা উজ্জ্বলতর ছবি তৈরি হয় কিন্তু আলো ফোকাসের বাইরে চলে যেত ।
-
এই উন্নতি শুরু করেছিল দৃষ্টিশক্তির তুলনামূলক
-
শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিযোগীতা ।
-
বেঁচে থাকার জন্য প্রতিযোগীতা বজায় রাখার প্রয়োজন ছিল ।
-
কিন্তু তখন চোখের একটা চমৎকার নতুন বৈশিষ্ট্য বিকশিত হল,
-
একটা লেন্স যা উজ্জ্বলতা এবং তীক্ষ্ন নজর উভয়ই দিল ।
-
প্রাচীন মাছের চোখের মধ্যে
-
পিনহোলের কাছে স্বচ্ছ জেল একটা লেন্স গঠন করল ।
-
একইসময় পিনহোল আকারে বেড়ে গেল
-
যাতে আরো বেশী বেশী আলো আসতে পারে ।
-
মাছেরা এখন কাছের জিনিস এবং দূরের জিনিস উভয়ই
-
হাই ডেফিনেশনে দেখতে পারল ।
-
আর তখন ভয়াবহ কিছু ঘটল ।
-
তুমি কখনো খেয়াল করে দেখেছো যে একটা জলভর্তি গ্লাসে একটা খড়কে
-
জলের পৃষ্ঠে বক্র দেখায় ?
-
এর কারণ আলো বেঁকে যায় যখন এটা এক মাধ্যম থেকে
-
অন্য মাধ্যমে ধরো জল থেকে বাতাসে যায় ।
-
আমাদের চোখ মূলত জলে দেখার জন্য বিকশিত হয়েছিল ।
-
ঐসব চোখের জলময় তরল ভালভাবে
-
ঐ বক্র প্রভাবের বিকৃতিকে দূর করেছিল ।
-
কিন্তু ভূমিস্থ পশুদের ক্ষেত্রে
-
আলো শুষ্ক বায়ু থেকে চিত্র বহন করে
-
তাদের চোখে নিয়ে যায়, যা এখনও জলময় ।
-
ফলে আলোক রশ্মি বেঁকে গিয়ে
-
সকল প্রকার বিকৃতি ঘটায় ।
-
যখন আমাদের উভচর পূর্বপুরুষ জল ছেড়ে দিয়েছিল ডাঙার জন্য,
-
তাদের চোখগুলো জলের মধ্যে দেখার জন্যই অত্যন্ত চমৎকারভাবে বিকশিত হয়েছিল বিধায়
-
সেগুলো বাতাসের মধ্যে দেখার জন্য যাচ্ছেতাই ছিল ।
-
আমাদের দৃষ্টিশক্তি এরপর থেকে আর কখনোই ভাল হয়নি ।
-
আমরা আমাদের চোখকে শিল্পের পুরোধা ভাবতে পছন্দ করি,
-
কিন্তু ৩৭ কোটি ৫০ লক্ষ বছর পর
-
আমরা এখনও আমাদের নাকের সামনের জিনিস দেখতে পারি না
-
অথবা প্রায় অন্ধকারে ঠিকমত ঠাহর করতে পারি না
-
যেভাবে মাছেরা পারে ।
-
যখন আমরা জল ছেড়েছিলাম
-
কেন প্রকৃতি আবার নতুন করে শুরু করল না
-
এবং আমাদের নতুন একগুচ্ছ চোখ বিকশিত করল না
-
যেগুলো বাতাসের মধ্যে দেখার জন্য অনুকূল ?
-
প্রকৃতি এভাবে কাজ করে না ।
-
বিবর্তন প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বিদ্যমান অবয়বকে পুনর্গঠিত করে,
-
ক্ষুদ্র পরিবর্তনের সাথে তাদের উপযোগী করে তোলে ।
-
এটা ড্রয়িং বোর্ডে ফিরে গিয়ে
-
প্রথম থেকে শুরু করা নয় ।
-
উন্নতির প্রতিটা ধাপে, ক্রমবিকশিত চোখ
-
যথেষ্ট ভাল কাজ করেছিল
-
টিকে থাকার জন্য একটা বাছাইকৃত সুবিধা দিতে ।
-
আজ জীবিত প্রাণীদের মধ্যে আমরা
-
চোখের উন্নতির সকল ধাপ খুঁজে পাই ।
-
সবগুলো ধাপই কাজ করে ।
-
মানব চক্ষুর জটিলতা প্রাকৃতিক নির্বাচনের মাধ্যমে
-
বিবর্তনের প্রতি কোন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় না ।
-
বস্তুত, চোখ এবং সমস্ত জীববিজ্ঞান মূল্যহীন
-
বিবর্তন ছাড়া ।
-
কেউ দাবী করে যে বিবর্তন শুধুই একটা তত্ত্ব,
-
যেন এটা শুধুই একটা বিকল্প ।
-
বিবর্তন তত্ত্ব হল মহাকর্ষ তত্ত্বের মতই
-
একটা বৈজ্ঞানিক সত্য ।
-
বিবর্তন আসলেই ঘটেছিল ।
-
পৃথিবীর সকল জীবনের সাথে আমাদের আত্মীয়তা স্বীকার করা
-
শুধুমাত্র খাঁটি বিজ্ঞানই নয়
-
আমার দৃষ্টিতে এটা একটা উচ্চ স্তরের আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা ।
-
বিবর্তন অন্ধ হবার দরুণ,
-
এটা অাগে থেকে বিপর্যয়কর ঘটনা আঁচ করতে পারে না এবং এর সাথে মানিয়েও নিতে পারে ।
-
জীবন বৃক্ষের কিছু ভগ্ন শাখা রয়েছে ।
-
এগুলোর বেশীরভাগই ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল আমাদের এখন পর্যন্ত জানা
-
পাঁচটা মহাবিপর্যয়ে ।
-
কোথাও হারিয়ে যাওয়া প্রজাতিদের জন্য
-
একটা স্মৃতিসৌধ আছে,
-
বিলুপ্তির হল ।
-
এসো আমার সাথে ।
-
-
বিলুপ্তির হলে স্বাগতম ।
-
জীবন বৃক্ষের ভগ্ন শাখাগুলোর জন্য একটা স্মৃতিস্তম্ভ ।
-
আজ জীবিত লক্ষ লক্ষ প্রজাতির প্রতিটির জন্য
-
হয়ত এক হাজার অন্য প্রাণী ঝরে গেছে ।
-
এদের বেশীরভাগই অন্য প্রাণীদের সাথে
-
প্রতিদিনকার প্রতিযোগীতায় মারা গিয়েছিল ।
-
কিন্তু তাদের অনেকে সমস্ত গ্রহকে বিহ্বল করে তোলা বিশাল বিধ্বংসী ঘটনায়
-
দূরে ভেসে গিয়েছিল ।
-
শেষ ৫০ কোটি বছরের মধ্যে
-
এরকম ৫ বার ঘটেছে।
-
৫ গণ বিলুপ্তি যা পৃথিবীর জীবন বিধ্বস্ত করে দিয়েছিল ।
-
এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে খারাপটি ঘটেছিল এই ২৫ কোটি বছর আগে
-
পারমিয়ান নামে পরিচিত
-
একটা যুগের শেষদিকে ।
-
ট্রাইলোবাইটগুলো ছিল বর্মাচ্ছাদিত প্রাণী যারা
-
সমুদ্রতল জুড়ে বড় দলের মধ্যে শিকার করত ।
-
তারা ছিল সেইসব প্রথম প্রাণীদের মধ্যে যেগুলো
-
ছবি গঠনকারী চোখের বিকাশ সাধন করেছিল ।
-
ট্রাইলোবাইটরা একটা ভালই দীর্ঘ সময় ধরে জীবিত ছিল এই ২৭ কোটি বছর ।
-
পৃথিবী একসময় ট্রাইলোবাইটদের গ্রহ ছিল ।
-
কিন্তু এখন তারা সব চলে গেছে, বিলুপ্ত হয়ে গেছে ।
-
তাদের অবশিষ্টগুলো অগণিত অন্য প্রজাতির সাথে
-
জীবনের মঞ্চ থেকে মুছে গিয়েছিল
-
একটা অতুলনীয় পরিবেশগত দুর্যোগে ।
-
-
এখন যেখানে সাইবেরিয়া সেখানে এই মহাধ্বংস শুরু হয়েছিল
-
এমন ভয়ানক আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের সাথে যা
-
অাজ পর্যন্ত মানুষ অনুভব করেনি ।
-
পৃথিবী তখন অনেক ভিন্ন ছিল
-
এক অতিমহাদেশ এবং একটাই বিশাল মহাসমুদ্র ।
-
অগ্নিময় লাভার নিরন্তর বন্যা
-
পশ্চিম ইউরোপের চেয়েও বড় এক এলাকা গ্রাস করে ফেলেছিল ।
-
ঘন ঘন অগ্নুৎপাত চলছিল
-
শত সহস্র বছর ধরে ।
-
গলিত পাথর
-
জ্বালিয়ে দিল মাটিতে জমা কয়লা এবং বাতাসকে দূষিত করে দিল
-
কার্বন ডাই অক্সাইড ও অন্যান্য গ্রীনহাউজ গ্যাস দিয়ে ।
-
এটা পৃথিবীকে উত্তপ্ত করেছিল
-
এবং সমুদ্রের ধারার প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছিল ।
-
বিষাক্ত ব্যাকটেরিয়া বেঁচে গেল
-
কিন্তু মহাসমুদ্রের বাকী প্রায় সবকিছু মরে গেল ।
-
বদ্ধ জল বাতাসে নির্গত করল
-
মারাত্মক হাইড্রোজেন এবং সালফাইড গ্যাস
-
যা বেশীরভাগ স্থলচর প্রাণীদের শ্বাসরোধ করে দিল ।
-
এই গ্রহের সকল প্রজাতির দশটার মধ্যে নয়টা বিলুপ্ত হয়ে গেল ।
-
আমরা একে বলি
-
মহামৃত্যু ।
-
পৃথিবীর জীবন নিশ্চিহ্ন হওয়ার এত কাছাকাছি চলে গিয়েছিল
-
যে পৃথিবী আগের মত হতে এক কোটি বছরেরও বেশী সময় লেগে গিয়েছিল ।
-
কিন্তু নতুন জীবরা ধীরে ধীরে বিকশিত হয়েছিল,
-
পারমিয়ান যুগের ব্যাপক হত্যাযজ্ঞের ফলে তৈরি হওয়া শূণ্যস্থান পূরণ করছিল ।
-
এদের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিজেতা ছিল ডাইনোসরেরা ।
-
এখন পৃথিবী ছিল তাদের গ্রহ ।
-
তাদের রাজত্ব ১৫ কোটি বছর যাবৎ চলেছিল ।
-
এরপর অন্য গণ বিলুপ্তিতে
-
এরাও শেষ হয়ে গেল ।
-
পৃথিবীতে জীবন ভালই আঘাত পেয়েছে যুগযুগ ধরে ।
-
এখনও জীবন টিকে আছে ।
-
বেঁচে থাকার জেদ মাথা নষ্ট করা ।
-
যেখানে জীবন থাকতে পারে বলে কেউ কল্পনাও করে না সেখানেও আমরা জীবন পাচ্ছি ।
-
ঐ নামহীন গলি ?
-
ওটা অন্যদিনের জন্য ।
-
আমি জানি একটা প্রাণী ফুটন্ত জলে
-
অথবা কঠিন বরফে বাঁচতে পারে ।
-
এটা এক ফোটা জল ছাড়া দশ বছর চলতে পারে ।
-
এটা ঠান্ডা বায়ুশূণ্য স্থানে ও মহাশূণ্যের তীব্র বিকিরণের মধ্যে
-
উন্মুক্ত ঘুরে বেড়াতে পারে এবং তারপরও অক্ষত অবস্থায় ফেরত আসবে ।
-
টার্ডিগ্রেড বা জল ভাল্লুক ।
-
এটা সবচেয়ে উচু পাহাড়ের উপরস্থ বাড়ি
-
এবং সমুদ্রের গভীরতম খাতে সমানভাবে বিদ্যমান ।
-
আমাদের বাড়ির পিছনের উঠোনে জলাভূমিতেও
-
এটা অগণিত সংখ্যায় রয়েছে ।
-
তুমি হয়ত এদের কখনোই খেয়াল করনি
-
কারণ এরা খুবই ছোট ।
-
একটা পিনের মাথার আকারের ।
-
কিন্তু তারা অদম্য ।
-
টার্ডিগ্রেডরা সকল ৫ গণ বিলুপ্তিতে টিকে গেছে ।
-
অর্ধ শতকোটি বছর যাবৎ তারা এখানে রয়েছে ।
-
আমরা চিন্তা করতে অভ্যস্ত জীবন অনেক খুতখুতে
-
এটা শুধু সেখানেই টিকে থাকবে যেখানে
-
খুব গরম নয় আবার খুব ঠান্ডাও নয়
-
খুব অন্ধকার নয় বা লবণাক্ত বা অম্লীয় বা তেজস্ক্রিয় নয় ।
-
আর যাই করো না কেন, জল যোগ করতে ভুলো না ।
-
আমরা ভুল ছিলাম ।
-
কষ্টসহিষ্ণু টার্ডিগ্রেডরা যেমন প্রমাণ করে দিল
-
জীবন সহ্য করতে পারে সেইসব অবস্থা যেসব
-
আমাদের মানুষের জন্য নিশ্চিত মৃত্যু।
-
আমরা এবং আমাদের গ্রহের সর্বোচ্চ চরম পরিবেশে খুঁজে পাওয়া
-
প্রাণীদের মধ্যে পার্থক্য হল
-
শুধু একটা বিষয়ের বৈচিত্র্যে, একটা নির্দিষ্ট ভাষার
-
অাঞ্চলিক উপভাষাসমূহের বৈচিত্র্যে ।
-
আর সেই ভাষা হল পৃথিবীর জীবনের জেনেটিক কোড ।
-
কিন্তু অন্যান্য জগতে জীবন কেমন হবে ?
-
সেই জগতগুলো যেগুলোর ইতিহাস,
-
রসায়ন এবং বিবর্তন পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ?
-
একটা দূরবর্তী জগতে আমি তোমাকে নিয়ে যেতে চাই --
-
আমাদের দুনিয়া থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন এক দুনিয়া,
-
কিন্তু হয়ত জীবনকে আশ্রয় দিতে পারে ।
-
যদি তা হয়, এটা অবশ্যই এমন কিছু হবে
-
যা আমরা এর আগে কখনো দেখিনি ।
-
মেঘ এবং কুয়াশা দিয়ে সম্পূর্ণ ঢাকা টাইটানের পৃষ্ঠ,
-
শনিগ্রহের দানবীয় উপগ্রহ ।
-
টাইটান আমাকে কিছুটা ঘরের ( পৃথিবী ) কথা মনে করিয়ে দেয় ।
-
পৃথিবীর মত এরও একটা বায়ুমন্ডল আছে, যার বেশীরভাগই নাইট্রোজেন ।
-
কিন্তু এটা চারগুণ ঘন ।
-
টাইটানের বাতাসে কোন অক্সিজেন নেই
-
এবং পৃথিবীর যে কোন জায়গার চেয়ে অনেক বেশী ঠান্ডা ।
-
কিন্তু তবুও আমি সেখানে যেতে চাই ।
-
টাইটানের পৃষ্ঠদেশ দেখতে পারার আগে
-
কয়েকশ কিলোমিটার ধোঁয়াশার মধ্য দিয়ে
-
আমাদের নেমে আসতে হবে ।
-
কিন্তু লুকোন তলদেশে রয়েছে এক অদ্ভূত পরিচিত ভূমি ।
-
টাইটান আমাদের সৌরজগতের একমাত্র
অন্য দুনিয়া
-
যেখানে বৃষ্টি হয় ।
-
এতে আছে নদী এবং উপকূল ।
-
টাইটানের আছে শত শত হ্রদ ।
-
এগুলোর একটা দক্ষিণ আমেরিকার সবচেয়ে বড় হ্রদের চেয়েও বড় ।
-
হ্রদ থেকে বাস্প উপরে উঠে
-
ঘন হয় এবং বৃষ্টি হয়ে আবার ঝরে পড়ে ।
-
বৃষ্টি নদীর জন্ম দেয়
-
যা ভূমির মধ্য দিয়ে উপত্যকা তৈরি করে,
-
পৃথিবীর মতই ।
-
কিন্তু একটা বড় পার্থক্য আছে ।
-
টাইটানে সমুদ্র এবং বৃষ্টি
-
জল নয় বরং মিথেন ও ইথেনের ।
-
পৃথিবীতে এই অনুগুলো প্রাকৃতিক গ্যাস হিসেবে পাওয়া যায় ।
-
হিমশীতল টাইটানে
-
এগুলো তরল ।
-
টাইটানে প্রচুর জলও আছে,
-
কিন্তু জলের সবটুকুই পাথরের মত শক্ত বরফময় ।
-
বস্তুত, টাইটানের ভূমি এবং পর্বত
-
জলের বরফ দ্বারাই প্রধাণত তৈরি ।
-
শূণ্যের চেয়ে শত ডিগ্রী নিম্ন তাপমাত্রা হওয়ায়
-
জল আদৌ তরলে পরিণত হবার জন্য টাইটান অনেক ঠান্ডা ।
-
-
কার্ল স্যাগানের পর থেকে জ্যোতিঃজীববিজ্ঞানীরা বিস্মিত হয়েছেন
-
এই ভেবে যে যদি টাইটানের হাইড্রোকার্বন হ্রদে হয়ত জীবন সাতার কেটে বেড়ায় ।
-
এমন জীবনের জন্য রাসায়নিক উপাদান
-
আমাদের জানা যেকোন কিছুর চেয়ে ভিন্ন হবে ।
-
পৃথিবীর সকল জীবন তরল জলের উপর নির্ভরশীল
-
এবং টাইটানের পৃষ্ঠে এর নামগন্ধও নেই ।
-
কিন্তু আমরা অন্য ধরণের জীবন কল্পনা করতে পারি ।
-
হয়ত এমন জীব যারা অক্সিজেনের পরিবর্তে
-
হাইড্রোজেন গ্রহণ করে
-
এবং কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিবর্তে মিথেন ছাড়ে ।
-
হয়ত তারা শক্তির উৎস হিসেবে চিনির পরিবর্তে এসিটিলিন ব্যবহার করে ।
-
কিভাবে আমরা খুঁজে পাব যদি এমন প্রাণী
-
অন্ধকার তৈলাক্ত ঢেউয়ের নীচে লুকোন সাম্রাজ্যে রাজত্ব করে ?
-
আমরা ক্রাকেন সমদ্রের গভীর নীচে ডুব দিচ্ছি,
-
যেটার নাম পৌরাণিক নরওয়ে দেশীয় সমুদ্র দানবের নামানুসারে রাখা হয়েছে ।
-
এমনকি যদি এখানে ঐসব দানবের একটা থাকেও
-
আমরা সম্ভবত এটাকে দেখতে পারব না ।
-
এখানে খুবই অন্ধকার ।
-
যদি তুমি পৃথিবীর সব তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস নিয়ে যাও
-
সেটা টাইটানে মজুদের একটা ছোট্ট ভগ্নাংশ হবে ।
-
কিছু আলো জ্বালা যাক ।
-
আমরা এখন পৃষ্ঠের দুইশ মিটার নীচে ।
-
কিছু দেখলে ?
-
ওখানে, ঐ ফাটলের কাছে ।
-
হয়ত এটা আমার কল্পনা ।
-
আমি মনে করি, আমাদের ফিরে আসতে হবে
-
যদি আমরা নিশ্চিতভাবে খুঁজে পেতে চাই ।
-
শেষ একটা গল্প আমি তোমাকে বলতে চাই
-
এবং এটা এখন অব্দি বিজ্ঞানের বলা সর্বশ্রেষ্ঠ গল্প ।
-
এটা আমাদের দুনিয়াতে জীবনের গল্প ।
-
চারশ কোটি বছর আগের পৃথিবীতে স্বাগতম ।
-
জীবন সৃষ্টির আগে এই ছিল আমাদের গ্রহ ।
-
কেউ জানেনা কিভাবে জীবন শুরু হয়েছিল ।
-
ঐ সময়ের বেশীরভাগ প্রমাণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল
-
সংঘর্ষ এবং ভাঙনের দ্বারা ।
-
জ্ঞান এবং অজ্ঞতার সীমানায় বিজ্ঞান কাজ করে ।
-
আমরা স্বীকার করতে ভয় পাই না যা আমরা জানি না ।
-
না জানার মধ্যে কোন লজ্জা নেই।
-
একমাত্র লজ্জা হল ভান করা যে আমাদের সব উত্তর আছে ।
-
হয়ত এই শো দেখছে এমন কেউ
-
কিভাবে পৃথিবীতে জীবন শুরু হয়েছিল
-
সেই রহস্য প্রথম উন্মোচন করবে ।
-
জীবিত অনুজীবদের থেকে পাওয়া প্রমাণ
-
ইঙ্গিত দেয় যে তাদের সর্বাপেক্ষা প্রাচীন পূর্বপুরুষ
-
উচ্চ তাপমাত্রা পছন্দ করত ।
-
পৃথিবীতে জীবন হয়ত গরম জলে উদিত হয়েছে
-
জলমগ্ন আগ্নেয়গিরির ফাটলের চারপাশে ।
-
কার্ল স্যাগানের আসল ''কসমস'' (ডকুমেন্টরী) সিরিজে
-
তিনি চিহ্নিত করেছিলেন সেই অবিচ্ছিন্ন সূত্র যা
-
চারশ কোট বছর আগের
-
জীবাণু থেকে সরাসরি
-
তুমি পর্যন্ত বিস্তৃত ।
-
চল্লিশ সেকেন্ডে চারশ কোটি বছর ।
-
দিন থেকে রাত ঠাহর করতে না পারা জীব থেকে
-
ব্রহ্মান্ড অনুসন্ধানকারী জীব পর্যন্ত ।
-
-
কার্ল স্যাগান : এসব কিছু জিনিস যা অনু তৈরি করে
-
বিবর্তনের চারশ কোটি বছর সময় দেয়া হলে ।