আমি এখান থেকে শুরু করব।
এটি একটি হাতে লেখা পোস্টার
যা একটি ছোট পারিবারিক বেকারীতে টাঙানো ছিল
ব্রুকলিনে আমাদের পুরোনো পাড়ায় ... এটি বেশ কয়েক বছর আগের কথা।
এই দোকানে অমন একটি মেশিন ছিল
যা চিনির প্লেটে ছাপাতে পারত।
ছোটরা তাদের আঁকা নিয়ে আসত
এবং তা দোকানে একটি চিনির প্লেটে ছাপা হত
তাদের জন্মদিনের কেকের সজ্জার জন্যে।
কিন্তু দু:খের বিষয়, ছোটরা আঁকতে ভালবাসত
কার্টুন চরিত্রগুলোকে।
তারা লিটল মারমেইড (ছোট মৎসকন্যা) আঁকতে ভালবাসত,
তারা হয়ত আঁকত একটি স্মার্ফ (ছোট্ট নীল মানুষ), বা একটি মিকি মাউস।
কিন্ত পরে দেখা গেল, এটা একটা বেআইনি ব্যাপার -
ছোটদের আঁকা মিকি মাউস
কোন চিনির প্লেটে ছাপানো।
কারণ এতে কপিরাইট লঙ্ঘন করা হয়।
তবে কপিরাইট নিয়ে কড়াকড়ি করা
বিশেষ করে বাচ্চাদের জন্মদিনের কেকের জন্যে
সত্যিই একটি ঝামেলার কাজ,
তাই সেই কলেজ বেকারী বলল,
"ব্যাপার কী জানো, আমরা এই ব্যবসা বন্ধ করে দিচ্ছি।
তুমি যদি শখের শিল্পী হও,
তাহলে আমাদের মেশিন আর ব্যবহার করতে পারবে না।
তুমি একটা চিনিতে ছাপানো জন্মদিনের কেক চাইলে,
তোমাকে ব্যবহার করতে হবে আমাদের কোনো একটা পূর্বনির্ধারিত ছবিই -
যা পেশাদার শিল্পী দিয়ে আঁকানো।"
কংগ্রেসে এখন দুটি বিল পাশের জন্যে রয়েছে।
একটির নাম সোপা, অপরটির নাম পিপা।
সোপা (এসওপিএ) মানে হচ্ছে স্টপ অনলাইন পাইরেসী অ্যাক্ট (অনলাইন চৌর্যবৃত্তি রোধে আইন)।
এটি সেনেট প্রস্তাব করেছে।
পিপা (পিওপিএ) মানে হচ্ছে প্রটেক্ট আইপি (আইপি সংরক্ষণ),
যা আবার সংক্ষেপিত করা হয়েছে এই থেকে:
'প্রিভেন্টিং রিয়াল অনলাইন থ্রেটস
টু ইকনমিক ক্রিয়েটিভি্টি
আন্ড থেফট অফ ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি' -
কারণ, কংগ্রসের কর্মীরা যাঁরা এইসব নাম দেন
তাঁদের হাতে সময়ের অভাব নেই।
এবং সোপা এবং পিপা যা করতে চায়
তা হল এই -
তারা খরচ বাড়াতে চায়
কপিরাইট পালন কার্যক্রমের,
এতদূর পর্যন্ত যাতে লোকজন তাদের ব্যবসার ওই অংশটা তুলে দিতে বাধ্য হয়
যেখানে তারা অপেশাদারদের সুযোগসুবিধা দিতে পারছিল।
আর তারা যেভাবে সেটা করতে চাইছে
তা হল সেইসব সাইটকে খুঁজে বের করতে
যেগুলো কপিরাইট লঙ্ঘন করছে তুলনায় বেশি -
যদিও সেইসব সাইট কিভাবে শনাক্ত করা হবে
সে সম্পর্কে বিলে বেশি কিছু বলা নেই -
এবং তারা সেইসব সাইটকে ডোমেইন নেম-এর সিস্টেম থেকে বাদ দিতে চায়।
তারা সেইসব সাইটকে ডোমেইন নেম-এর সিস্টেম থেকে উপড়ে ফেলতে চায়।
এখন ডোমেইন নেম এর সিস্টেমটি
হচ্ছে সেই ব্যবস্থা যা পঠনযোগ্য ডোমেইন নাম, যেমন 'গুগুল.কম'-কে
সেইসব সংখ্যাভিত্তিক ঠিকানায় রুপান্তর করে
যা কম্পিউটার বুঝতে পারে - যেমন
৭৪.১২৫.২২৬.২১২।
এখন এই ধরনের সেন্সরশিপ মডেলের সমস্যা হচ্ছে,
যেখানে একটি বিশেষ সাইট খুঁজে বের করা
এবং সেইসব সাইটকে ডোমেইন নাম-এর সিস্টেম থেকে বাদ দেবার চেষ্টা করা হয়,
যে সেটি আদৌ কাজ করে না।
এবং আপনি হয়ত ভাববেন যে সেটি এই আইনের জন্যে একটি বিশাল সমস্যা,
কিন্তু কংগ্রেস মনে হয় এ নিয়ে খুব একটা চিন্তিত নয়।
এখন, এটি কাজ না করার কারণ হচ্ছে এই -
যে আপনি ৭৪.১২৫.২২৬.২১২ এটি সরাসরি আপনার ব্রাউজারে টাইপ করতে পারেন
অথবা ক্লিক করার মত একটি লিংক তৈরি করে নিতে পারেন,
এবং আপনি এখনও গুগল সাইটে যেতে পারবেন।
তাই নিয়ন্ত্রণের এ স্তর
এই সমস্যার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ
যা আইনকে সমস্যাযুক্ত করে তোলে।
এখন যদি বুঝতে হয় যে কংগ্রেস কীভাবে এমন একটি বিল তৈরি করল
যেটি তার লক্ষ্য পূরণই করবে না,
কিন্তু অনেক ক্ষতিকর পারিপার্শ্বিক সমস্যার সৃষ্টি করবে,
তাহলে আপনাকে এর প্রেক্ষিত সম্পর্কে জানতে হবে।
এবং এর পূর্বেকার ঘটনা হচ্ছে এই:
আইন হিসেবে সোপা, পিপা
তৈরি করেছিল মিডিয়া কোম্পানীগুলো,
বিশেষ করে যেগুলো বিংশ শতাব্দীতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।
একটি মিডিয়া কোম্পানীর জন্যে বিংশ শতাব্দী বেশ ভাল সময় ছিল,
কারণ একটা খুবই সুবিধাজনক ব্যাপার ছিল দুষ্প্রাপ্যতা।
আপনি যদি একটি টিভি শো বানাতে চাইতেন, তাহলে
এটাকে অন্যান্য টিভি শোর সাথে প্রতিযোগিতায় নামতে হত না।
এটিকে কেবল ভাল করতে হত
সেই দুটি অন্য শোর চেয়ে
যারা একই সময় প্রচারিত হচ্ছে -
যেটা খুবই সরল একটা ধাপ
প্রতিযোগিতায় নামার জন্যে।
যার মানে হচ্ছে
যে যদি আপনি গতানুগতিক বিষয়বস্তু বানাতেন,
তাও আপনি এমনি-এমনিই যুক্তরাষ্ট্রের এক তৃতীয়াংশ মানুষকে দর্শক হিসেবে পেতেন -
কোটি কোটি দর্শক -
শুধুমাত্র এমন কিছু করার জন্যে
যা খুব খারাপ না হলেই চলবে।
এ যেন আপনাকে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে টাকা ছাপানোর লাইসেন্স
এবং এক ব্যারেল কালি, বিনে পয়সায়।
কিন্তু প্রযুক্তি এগিয়ে চলেছে, এবং তা এগোতে চায়।
এবং ধীরে ধীরে, বিংশ শতাব্দীর শেষদিকে,
এই দুষ্প্রাপ্যতা উবে যেতে শুরু করে -
এবং আমি ডিজিটাল প্রযুক্তির কথা বলছি না;
আমি বলতে চাইছি অ্যানালগ প্রযুক্তির কথা।
ক্যাসেট টেপ, ভিডিও ক্যাসেট রেকর্ডার,
এমন কি নিরীহ জেরক্স মেশিনও
নতুন সুযোগের সৃষ্টি করেছে
যা আমাদের এমন সব কাজ করতে সাহায্য করেছে
যা মিডিয়া ব্যবসায়ীদের চমকে দিয়েছে।
কারণ দেখা গেল
যে আমরা শুধু নির্জীব দর্শক নই।
আমরা শুধু ভোগ করতে চাই না।
আমরা ভোগ করতে ভালোবাসি ঠিকই,
কিন্তু প্রতিবারই যখন নতুন নতুন প্রযুক্তি আসে
দেখা যায় যে আমরা সৃষ্টি করতেও চাই
এবং তা অপরের সাথে ভাগ করে নিতে চাই।
এবং সেটা মিডিয়া ব্যবসায়ীদের ভয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায় --
এটি তাদের উদ্বিগ্ন করে তোলে প্রতিবারই।
জ্যাক ভ্যালেন্টি, যিনি প্রধান তদ্বিরকারী
মোশন পিকচার অ্যাসোসিয়েশন অফ আমেরিকার,
একদা ভয়ঙ্কর ভিসিআর'কে
জ্যাক দা রিপারের সাথে তুলনা করেছিলেন,
আর গরীব, অসহায় হলিউডকে
বাসায় নিরাপত্তাহীন বসে থাকা রমণীর সাথে।
তাদের বাগাড়ম্বর ছিল এমনটাই।
আর তাই মিডিয়া ব্যবসায়ীরা
রীতিমত অনুনয় করেছে, অনুরোধ করেছে, দাবী করেছে
যে কংগ্রেস যেন কিছু করে।
এবং কংগ্রেস সত্যিই কিছু করেছে।
নব্বই দশকের প্রথম দিকেই তারা সেই আইনটি পাশ করে
যা সবকিছুকে পালটে দেয়।
সেই আইনটিকে বলা হয় অডিও হোম রেকর্ডিং অ্যাক্ট
যা ১৯৯২ সালে পাশ হয়।
এই আইন যা বলেছে তা হল,
দেখুন, যদি কেউ রেডিও থেকে টেপে রেকর্ড করে
এবং তার বন্ধুদের সাথে তা ভাগ করে নেয়,
তবে তা বেআইনি নয়। সেটা ঠিক আছে।
টেপে রেকর্ড করা, রিমিক্স করা
আর বন্ধুদের সাথে ভাগ করায় বেআইনি কিছু নেই।
তবে আপনি যদি অনেক উঁচু মানের কপি করেন এবং তা বিক্রি করেন,
সেটা তাহলে বেআইনি।
তবে এই টেপ নিয়ে কাজকর্ম,
সেটা ঠিক আছে, সমস্যা নেই।
এবং তারা ভেবেছিল যে বিষয়টা তারা বোঝাতে পেরেছে,
কারণ তারা পরিস্কার ভাবে আলাদা করে দিয়েছে
কোন ভাবে কপি করা বেআইনি এবং কোনটি নয়।
কিন্তু মিডিয়া ব্যবসায়ীরা এরকমটা চায় নি।
তারা চেয়েছে যে কংগ্রেস
যেন কপি করার ব্যাপারটিকে পুরোপুরি বেআইনি করে।
তাই যখন ১৯৯২ সালের অডিও হোম রেকর্ডিং অ্যাক্ট পাশ হয়,
মিডিয়া শিল্প এই ভাবনা বাদ দেয়
যে আইনগত আর বেআইনিভাবে কপির তফাত করা হোক,
কারণ এটা পরিস্কার হয়ে গিয়েছিল যে
কংগ্রেস যদি তাদের পরিকল্পনা মত এগোয়,
তাতে হয়ত বা নাগরিকদের অধিকার বাড়াবে
যেন তারা নিজেদের বিনোদন জগৎ প্রতিষ্ঠা করতে পারে।
তাই ওরা নতুন এক উপায় খোঁজা শুরু করে।
তাদের অনেক সময় লাগে এই নতুন পরিকল্পনা করতে।
তাদের এই পরবর্তী পরিকল্পনা পূর্ণ রূপ নেয়
১৯৯৮ সালে -
যাকে বলা হল ডিজিটাল মিলেনিয়াম কপিরাইট অ্যাক্ট।
এটি একটি জটিল আইন ছিল, যার অনেক শাখা-প্রশাখা।
কিন্তু এই আইনের মূল বিষয়টি ছিল এই যে,
এটা আইনসঙ্গত যে আপনাকে বিক্রি করা যাবে
কপি করা যায়না এমন ডিজিটাল বিষয়বস্তু -
যদিও কপি করা যায়না এমন ডিজিটাল মেটেরিয়াল কি সেটা বোঝা দুস্কর।
এটা হয়ত হবে এমন যা এড ফেল্টন একদা বলেছিলেন,
"যেন লোককে এমন পানি দেয়া
যা ভেজা নয়।"
বিট'কে কপি করা যায়। এটাই কম্পিউটার করে।
এটাই তার সহজাত কাজ।
তাই এই কার্যকারিতাকে এড়িয়ে
কপি করা যায় না এমন বিট'কে বিক্রি করতে গিয়ে,
ডিএমসিএ এও বৈধ করে দিয়েছে
যেন আপনাকে বাধ্য করা যায় সেই সব সিস্টেম ব্যবহার করতে
যা আপনার কম্পিউটারের সহজাত কপি কার্যকারিতাকে পরিবর্তন করে।
প্রতিটি ডিভিডি প্লেয়ার এবং গেম প্লেয়ার
এবং টেলিভিশন এবং কম্পিউটার যা আপনি বাড়ি নিয়ে এসেছেন --
কেনার সময় আপনি যা পেতে যাচ্ছেন তা সম্পর্কে যা-ই ভেবে থাকুন না কেন --
তাতে খবরদারী করতে পারে বিষয়বস্তু তৈরির কোম্পানিগুলো,
যদি তারা ভেবে থাকে যে আপনাকে ওই কন্টেন্ট বিক্রি করার সময় সেই শর্তটা আরোপ করবে।
আর এটা নিশ্চিত করার জন্যে যে আপনি যাতে ব্যাপারটি বুঝতে না পারেন,
অথবা যন্ত্রগুলোর পূর্ণ সদ্ব্যবহার করতে না পারেন
কম্পিউটারের সহজাত কার্যকলাপগুলো করার জন্যে,
তারা এটাও বেআইনি করে রেখেছে
যেন আপনি কোনো চেষ্টা না করেন সেগুলোতে পুন:স্থাপন করার
তাদের কন্টেন্ট কপি করার ক্ষমতা।
ডিএমসিএ আইন সেই সময়কে নির্দেশ করে
যখন মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি
সেই আইনি ব্যবস্থার উপর আস্থা হারায়
যা আইনগত এবং বেআইনি কপি করাকে আলাদা করে দেখে,
এবং কপি করা একেবারেই প্রতিরোধে তৎপর হয়
প্রযুক্তিগত উপায়ের সাহায্যে।
এখন এই ডিএমসিএ আইনের অনেক ধরনের জটিল প্রভাব ছিল এবং আছে,
তবে বিষয়বস্তু ভাগ করে নেওয়া বন্ধ করতে তাদের উদ্যোগ
বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই কাজ করেনি।
এবং যে কারণে এটি কাজ করেনি
তা এই যে ইন্টারনেট আসলে অনেকগুণ বেশি জনপ্রিয় এবং অনেক শক্তিশালী
যা কেউ চিন্তাও করতে পারেনি।
সেই রকমারি গানের রেকর্ড করা টেপ, ফ্যান ম্যাগাজিন
এসব কিছুই অতি নগন্য, যদি তুলনায় আনি এখন বর্তমানে যে সব জিনিষ দেখছি
ইন্টারনেটের সাহায্যে।
আমরা এমন এক বিশ্বে আছি
যেখানে অধিকাংশ আমেরিকান নাগরিক
বিশেষ করে ১২ বছরের উপরে যারা
একে অপরের সাথে ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিষয়বস্তু ভাগাভাগি করে।
আমরা লেখা ভাগাভাগি করি, আমরা ছবি ভাগাভাগি করি,
আমরা অডিও ভাগাভাগি করি, আমরা ভিডিও ভাগাভাগি করি।
এর মধ্যে কিছু জিনিষ ভাগাভাগি করি যা আমরা নিজেরা তৈরি করি।
কিছু ভাগাভাগি করি যা আমরা খুঁজে পাই।
কিছু জিনিষ ভাগাভাগি করি
যা আমাদের খুঁজে পাওয়া জিনিষ দিয়ে তৈরি,
এবং এ সব কিছুই বিষয়বস্তুর ইন্ডাস্ট্রিকে ভীত করে তোলে।
তাই পিপা আর সোপা
হচ্ছে দ্বিতীয় রাউন্ড।
তবে যেখানে ডিএমসিএ ছিল শল্যচিকিৎসার মত --
আমরা আপনার কম্পিউটারের ভেতর ঢুকে দেখব,
আমরা আপনার টেলিভিশনের ভেতর ঢুকব, আপনার গেইম মেশিনকে উল্টে-পাল্টে দেখব,
এবং তাদের বিরত করব সেই সব কাজ করা থেকে
যেটা তারা করবে বলে দোকানে বলা হয়েছিল --
পিপা আর সোপা হচ্ছে পরমাণু বোমার মত বিধ্বংসী
আর তারা বলছে, আমরা পৃথিবীর যে কোনো স্থানে যাব
এবং বিষয়বস্তু সেন্সর করব।
এখন, আমি যেমন বলেছি, এটা করার প্রক্রিয়া
হচ্ছে যে আপনাকে এমন সবাইকেই ধরতে হবে
যারা ওই আইপি অ্যাড্রেস-এর প্রতি দিকনির্দেশ করে।
আপনাকে তাদের সার্চ ইঞ্জিন থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে,
আপনাকে তাদের অনলাইন ডাইরেক্টরি থেকে সরিয়ে নিতে হবে,
আপনাকে তাদের ব্যবহারকারীদের তালিকা থেকে সরিয়ে দিতে হবে।
এবং যেহেতু ইন্টারনেটে সবচেয়ে বেশী কন্টেন্ট তৈরী করে যারা
তারা গুগল বা ইয়াহু নয়,
তারা হচ্ছে আমরা,
আমাদের বিরুদ্ধেই পুলিশকে লেলিয়ে দেয়া হয়।
কারণ শেষ পর্যন্ত,
সত্যিকারের প্রবন্ধক হবে
পিপা এবং সোপা'র বাস্তবায়নে
আমাদের একে অপরের মধ্যে বিষয়বস্তু ভাগাভাগি করার ব্যাপারটি।
তাই পিপা ও সোপা যেটা করার ঝুঁকি নিচ্ছে
তা হল একটি বহু পুরোনো আইনি ধারণা,
যে দোষ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্তকে নির্দোষ বলে ধরা,
এবং একে উল্টে ফেলা --
নির্দোষ প্রমাণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযুক্ত অপরাধীই।
আপনি ভাগাভাগি করতে পারবেন না
আমাদেরকে না দেখানো পর্যন্ত
যে আপনি এমন জিনিস ভাগাভাগি করছেন না
যা আমরা পছন্দ করি না।
হঠাৎ করেই, কোনো কিছু আইনি বা বেআইনি প্রমাণ করার দায়
আমাদের উপর এসে বর্তায়
এবং সেই সব সেবার উপরও বর্তায়
যা আমাদের নতুন কিছু সুবিধা দিতে পারত।
এবং যদি এক পয়সাও খরচ হয়
একজন ব্যবহারকারীর উপর নজরদারি করতে,
তাহলে সেই ব্যবস্থাটি ধ্বসে যাবে
যার লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারী আছে।
তাই এই ইন্টারনেটই তারা চাইছে।
এমন চিন্তা করুন, যেন ওই চিহ্নটি সব জায়গায় ছড়িয়ে পড়েছে --
কেবল এই যে সেটি কলেজ বেকারীর কথা বলছে না,
ধরুন এটি ইউটিউবের সম্পর্কে বলছে
অথবা ফেইসবুক এবং টুইটারের সম্পর্কে।
ধরুন এটি টেড-এর বিষয়েও বলছে,
কারন মন্তব্যরাশির উপর নজরদারি করা যায় না
কোনো সুলভ মূল্যে।
সোপা আর পিপার সত্যিকারের প্রতিফলন
তাদের প্রস্তাবিত চিত্রের থেকে অনেক ভিন্ন।
মূল হুমকিটা হচ্ছে, আসলে
এই যে প্রমাণ করার দায়ভারটা উল্টিয়ে দেয়া,
যেখানে আমাদের হঠাৎ করে
সবাইকেই চোর হিসেবে মনে করা হবে
সেই প্রতিটি ক্ষণেই যখনই আমাদের সুযোগ দেয়া হবে নতুন কিছু সৃষ্টি করার জন্য
বা তৈরী বা ভাগাভাগি করার জন্যে।
এবং যারা আমাদের এইসব ক্ষমতা দিচ্ছে --
যেমন ইউটিউব, ফেইসবুক, টুইটার বা টেড --
তাদের নতুন কাজ হবে
আমাদের উপর নজরদারি করা,
নয়ত আইন ভঙ্গে সহায়তা করার জন্যে নিজেরা দোষী হওয়া।
আপনি দুটো কাজ করতে পারেন
একে বন্ধ করার জন্যে --
একটি সরল কাজ এবং একটি জটিল কাজ,
একটি সহজ এবং একটি কঠিন কাজ।
সহজ এবং সরল কাজটি হচ্ছে:
আপনি যদি আমেরিকার একজন নাগরিক হন,
আপনার সিনেটর, আপনার অঞ্চলের জনপ্রতিনিধিকে ফোন করুন।
যখন আপনি দেখবেন
যেইসব লোকের তালিকা যারা সোপা বিলটিতে সই করেছে,
অথবা পিপা আইনে স্বাক্ষর দিয়েছে,
আপনি দেখবেন যে তারা সবাই অনুদান পেয়েছে
কোটি কোটি ডলার,
প্রথাগত মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রির তরফ থেকে।
আপনার কাছে কোটি কোটি ডলার নেই,
কিন্তু আপনি আপনার জনপ্রতিনিধিকে ফোন করতে পারেন,
এবং আপনি তাদের মনে করিয়ে দিতে পারেন যে আপনার ভোটাধিকার আছে,
এবং আপনাকে চোর ভাবার অধিকার কারও নেই,
এবং আপনি বলতে পারেন যে আপনি চান
যেন ইন্টারনেটকে যেন না ঘাঁটানো হয়।
এবং যদি আপনি আমেরিকার নাগরিক না হন,
আপনার পরিচিত আমেরিকার নাগরিকদের সাথে যোগাযোগ করে
তাদেরকে একই কাজ করতে বলতে পারেন।
কারণ এটি একটি জাতীয় সমস্যা মনে হলেও
কেবল তাতেই সীমাবদ্ধ নয়।
এই ইন্ডাস্ট্রিগুলো সন্তুষ্ট থাকবে না শুধু
আমাদের ইন্টারনেট ভেঙে দিয়ে।
এটি যদি অচল করতে পারে, তারা দুনিয়ার সবার জন্যই অচল করে দেবে।
এই হল সহজ কাজটি।
এটি তো সরল কাজ।
কঠিন ব্যাপারটি হল:
প্রস্তুত থাকুন, কারণ আরও অনেককিছু অপেক্ষা করছে আপনার জন্যে।
সোপা স্রেফ কোইকা'র একটি সহজ সংস্করণ,
যেটা গত বছর প্রস্তাবিত হয়েছিল, কিন্তু পাশ হয়নি।
এবং এই সব কিছুরই উৎস হচ্ছে
ডিএমসিএ বাস্তবায়নের ব্যর্থতা,
বিশেষ করে প্রযুক্তির সাহায্যে ভাগাভাগি করা বন্ধ করতে।
এবং ডিএমসিএ-র মূল আবার সেউ অডিও হোম রেকর্ডিং আইন,
যা ওইসব ইন্ডাস্ট্রির জন্য ছিল চিন্তার বিষয়।
কারণ এই পুরো ব্যাপারটাই,
যখন তারা ইঙ্গিত করে যে কেউ আইন ভাঙ্গছে
এবং তারপর তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করে তা প্রতিষ্ঠা করে,
সেটা একদমই আরামপ্রদ নয়।
"আমরা সেটা করতে চাই না,"
বলছে কন্টেন্ট ইন্ডাস্ট্রি।
এবং তারা চাইছে যেন এটা করার দরকারই না পড়ে।
তারা চায় না যেন কোনো আইনগত পার্থক্য
থাকুক আইনগত আর বেআইনি শেয়ারিং এর মধ্যে।
তারা এই ভাগাভাগি করার পরো ব্যাপারটিকেই বন্ধ করতে চাচ্ছে।
পিপা আর সোপা কোন বিশেষ কিছু না, এগুলো অস্বাভাবিক কিছু না,
এগুলো কোন বিশেষ ঘটনা না।
এই আইনগুলো কেবল সেই স্ক্রু'র পরবর্তী চাপ,
যা ২০ বছর ধরে চলে আসছে।
এবং আমরা যদি এদের পরাজিত করতে পারি, এবং আমি আশা করছি যে আমরা পারব,
আরও হয়ত আসবে।
কারন যতক্ষণ না আমরা কংগ্রেসকে বোঝাতে পারছি
যে মেধাসত্ত্ব চুরির ব্যাপারটি রোধ করার পন্থা হচ্ছে
যেভাবে ন্যাপস্টার, ইউটিউব ইত্যাদির সাথে মেধাসত্ত্ব চুরি নিয়ে লড়া হয়েছিল,
যা হল সমস্ত প্রমাণ উপস্থাপনসহ একটি বিচার
এবং সত্যগুলি বের করে প্রতিরোধের উপায় নির্ধারণ করা
যা একটি গণতান্ত্রিক সমাজে হয়ে থাকে।
এভাবেই এর ব্যবস্থা করতে হবে।
এর মধ্যে,
সবচেয়ে কঠিন কাজটি হচ্ছে তৈরি থাকা।
কারন পিপা এবং সোপার সত্যিকারের উদ্দেশ্য আপনার জানা।
টাইম ওয়ার্নার চাচ্ছে
যাতে আমরা আবার সোফায় ফিরে বসে পড়ি
শুধুমাত্র দর্শক হয়ে -
কোন কিছু তৈরি না করে, ভাগাভাগি না করে -
এবং আমাদের বলা দরকার, "না।"
ধন্যবাদ।
(হাততালি)