WEBVTT 00:00:00.218 --> 00:00:03.850 জড়বস্তু হতে প্রাণ/জীবন মৌলিকভাবে আলাদা, — আসলেই কি? 00:00:04.090 --> 00:00:07.567 পদার্থবিজ্ঞানী এরউইন শ্রোডিন্গার প্রাণ এর সংজ্ঞা দিয়েছেন এভাবে: 00:00:07.567 --> 00:00:12.314 জীবসত্তা বিশৃংখলা ও সাম্যাবস্থায় পর্যবসিত হওয়া এড়িয়ে চলে।" 00:00:13.074 --> 00:00:14.048 এর মানে কী? 00:00:14.508 --> 00:00:17.361 ধরে নিই, আপনার ডাউনলোড ফোল্ডারটি হল পুরো মহাবিশ্ব। 00:00:17.361 --> 00:00:21.058 এটা গোছালোভাবে শুরু হয়েছিল, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে বিচ্ছৃংখল হয়ে চলেছে। 00:00:21.678 --> 00:00:25.466 শক্তি বিনিয়োগ করে আপনি এতে শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে পারেন এবং পরিস্কার করতে পারেন। 00:00:25.926 --> 00:00:27.490 জীবিত জিনিস এটাই করে থাকে। 00:00:27.920 --> 00:00:29.778 কিন্তু প্রাণ/জীবন কী? 00:00:36.564 --> 00:00:39.457 এই গ্রহের প্রত্যেকটা জীবন্ত জিনিস 'কোষ' দিয়ে গঠিত। 00:00:39.617 --> 00:00:45.182 মূলত, 'কোষ' হল এক ধরনের আমিষ-রোবট যারা এত ছোট যে কোনো কিছু বুঝতে বা উপভোগ করতে পারে না। 00:00:45.492 --> 00:00:48.151 আমরা জীবনের যে সব বৈশিষ্ট উল্লেখ করেছি তা এর আছে। 00:00:48.151 --> 00:00:51.674 এর একটা প্রাচীর আছে যা পারিপার্শ্বিক জিনিসপত্র থেকে একে আলাদা করে, শৃংখলা রক্ষা করে। 00:00:51.674 --> 00:00:55.934 এটা স্ব-নিয়ন্ত্রিত এবং একটা অপরিবর্তিত অবস্থা বজায় রাখে। 00:00:55.934 --> 00:00:58.280 এরা বেঁচে থাকার জন্য বিভিন্ন জিনিস খায়; 00:00:58.280 --> 00:01:00.134 এরা বড় হয় এবং বিকশিত হয়; 00:01:00.134 --> 00:01:01.879 পরিবেশের প্রতি সাড়া দেয়; 00:01:01.879 --> 00:01:04.394 এবং এর বিবর্তন ঘটে; 00:01:04.394 --> 00:01:06.383 এবং নিজের আরও প্রতিরুপ/কপি তৈরি করে। 00:01:06.743 --> 00:01:10.590 কিন্তু, যেসমস্ত দ্রব্য দিয়ে কোষ তৈরি তাদের কোনটাই জীবন্ত নয়। 00:01:10.960 --> 00:01:15.087 এক জিনিস আরেক জিনিসের সাথে রাসায়নিকভাবে সাড়া দেয়, যাতে বিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। 00:01:15.087 --> 00:01:17.946 যা থেকে অন্য বিক্রিয়া শুরু হয় এবং তার কারণে আরও বিক্রিয়া। 00:01:18.446 --> 00:01:23.206 প্রত্যেকটা কোষেই, প্রতি সেকেন্ডে কয়েক লক্ষ বিক্রিয়া চলে। 00:01:23.206 --> 00:01:25.094 যেন জটিল এক ঐকতান। 00:01:25.584 --> 00:01:28.405 একটি কোষ কয়েক হাজার ধরনের প্রোটিন (আমিষ) তৈরি করতে পারে। 00:01:28.405 --> 00:01:31.809 এর মাঝে কিছু সাদামাটা, আবার কিছু অনেক জটিল ক্ষুদ্রযন্ত্রাংশের মত। 00:01:32.559 --> 00:01:37.615 কল্পনা করুন আপনি একটি গাড়ি ঘন্টায় ১০০কি.মি. বেগে চালাচ্ছেন এরই সংগে প্রত্যেকটি যন্ত্রাংশ নতুন করে তৈরি করছেন। 00:01:37.615 --> 00:01:40.165 কিছু অংশ আবার পথে কুড়িয়ে পাওয়া জিনিস দিয়ে তৈরি করতে হচ্ছে। 00:01:40.675 --> 00:01:42.471 কোষ এটাই করে থাকে। 00:01:43.051 --> 00:01:46.747 কিন্তু কোষ এর কোন অংশই তো জীবন্ত নয়। সব কিছুই জড়বস্তু 00:01:46.747 --> 00:01:48.877 যা মহাবিশ্বের প্রাকৃতিক নিয়ম অনুযায়ী চলে। 00:01:49.537 --> 00:01:54.367 তাহলে কী জীবন হল এই সব রাসায়নিক বিক্রিয়ার সমন্বয়? 00:01:55.187 --> 00:01:57.636 শেষ পর্যন্ত, সব জীবন্ত জিনিসেরই মরতে হয়। 00:01:58.336 --> 00:02:02.791 এই পুরো প্রক্রিয়ার লক্ষ্য হল নতুন অস্তিত্ত সৃষ্টির মাধ্যমে মৃত্যুকে প্রতিহত করা। 00:02:03.191 --> 00:02:05.429 এর দ্বারা আমরা বলছি ডিএনএ'র কথা। 00:02:06.049 --> 00:02:10.247 এক অর্থে জীবন হল অনেক কিছুর সমন্বয় যা কিনা জেনেটিক তথ্য বয়ে বেড়ায়। 00:02:10.777 --> 00:02:12.826 প্রতিটি জীবন্ত জিনিসেরই বিবর্তন হয়। 00:02:12.826 --> 00:02:17.461 আর যে সমস্ত ডিএনএ সেরা জীব তৈরি করতে পারে তারাই এই খেলায় টিকে থাকে। 00:02:18.071 --> 00:02:20.293 তাহলে, ডিএনএ'ই কি জীবন? 00:02:20.863 --> 00:02:25.553 আপনি যদি ডিএনএ কে এর খোলস থেকে বের করে নেন, তাহলে দেখা যায় এটা আসলেই বেশ জটিল একটা অণু। 00:02:25.553 --> 00:02:27.745 কিন্তু এটা নিজে নিজে কিছুই করতে পারে না। 00:02:28.235 --> 00:02:31.790 এখানেই আসে ভাইরাসের কথা, যা সব আলোচনা আরও জটিল করে দেয়। 00:02:32.100 --> 00:02:36.256 এরা হল ছোট এক খোলসে আবদ্ধ ছোট এক টুকরা আরএনএ বা ডিএনএ 00:02:36.256 --> 00:02:38.573 যারা কোষ ছাড়া কিছুই করতে পারে না। 00:02:38.573 --> 00:02:41.305 আমরা এখনও নিশ্চিত নই এদের মৃত নাকি জীবিতদের দলে ফেলা হবে। 00:02:41.305 --> 00:02:47.118 তারপরেও, পৃথিবীতে প্রায় সাড়ে বাইশ কোটি ঘনমিটার ভাইরাস রয়েছে। 00:02:47.118 --> 00:02:49.385 আমরা তাদের কোন্ দলে ফেলি তা নিয়ে এদের কিছুই যায় আসে না। 00:02:49.385 --> 00:02:53.723 এমনও অনেক ভাইরাস রয়েছে যারা মৃত কোষকে আক্রমন করে এবং জীবিত করে তোলে, 00:02:53.723 --> 00:02:57.530 যাতে করে এরা বেঁচে থাকতে পারে, ফলশ্রুতিতে পার্থক্যটা যেন আরও আবছা হয়ে যায়। 00:02:58.310 --> 00:02:59.579 আরো আছে মাইটোকন্ড্রিয়া। 00:02:59.949 --> 00:03:03.219 তারা হল জটিল কোষগুলোর শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র যারা 00:03:03.219 --> 00:03:08.212 আগে স্বাধীন ব্যাকটেরিয়া ছিল, পরে বড় কোষগুলোর সাথে একটা অংশীদারীত্ব শুরু করে। 00:03:08.512 --> 00:03:12.635 তাদের এখনও নিজস্ব ডিএনএ রয়েছে এবং নিজেরাই বংশবৃদ্ধি করতে পারে। 00:03:12.635 --> 00:03:16.372 কিন্তু তারা এখন আর জীবিত নয়; তারা মৃত। 00:03:16.862 --> 00:03:20.478 তারমানে, তারা নিজেদের জীবনের বিনিময়ে নিজেদের ডিএনএ'এর ভবিষ্যত রক্ষা করেছে। 00:03:20.478 --> 00:03:25.684 যাতে দাড়ায়, জীবন্ত জিনিস মৃত জিনিসে বিবর্তিত হতে পারে, যদি তা'ই তাদের জেনেটিক তথ্যের জন্য 00:03:25.684 --> 00:03:27.004 লাভজনক হয়। 00:03:27.444 --> 00:03:33.279 তাহলে প্রাণ হয়তো এক প্রকার তথ্য (ডিএনএ) যা নিজের অস্তিত্ত রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়। 00:03:33.679 --> 00:03:37.182 তাহলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা? 00:03:37.632 --> 00:03:42.444 আমাদের সাধারন সংজ্ঞা অনুযায়ী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলতে যা বুঝি তা কম্পিউটারের মাধ্যমে তা তৈরির 00:03:42.444 --> 00:03:43.231 দারপ্রান্তে রয়েছি আমরা। 00:03:43.611 --> 00:03:47.287 আমাদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তির কাছে এটা কেবল সময়ের ব্যাপার। 00:03:47.707 --> 00:03:49.639 আর তা কল্পবিজ্ঞানেরও কিছু না। 00:03:49.639 --> 00:03:53.069 শত শত বুদ্ধিমান লোক এর পিছনে কাজ করছে। 00:03:53.069 --> 00:03:56.086 আপনি এখনই তর্ক করতে পারেন যে কম্পিউটারে ভাইরাস এক প্রকার জীবন্ত জিনিস। 00:03:56.086 --> 00:03:59.778 হুঁ, আচ্ছা, প্রাণ কি তাহলে? 00:04:00.168 --> 00:04:04.420 জিনিস নাকি প্রক্রিয়া অথবা ডিএনএ না তথ্য? 00:04:04.990 --> 00:04:07.535 সবকিছুই যেন হঠাৎ গোলমেলে হয়ে গেল। 00:04:08.085 --> 00:04:09.545 একটা জিনিস নিশ্চিতভাবে বলা যায়: 00:04:09.545 --> 00:04:13.296 আগে যে বলা হতো জড় বস্তু হতে জীব মৌলিকভাবে আলাদা কারণ... 00:04:13.296 --> 00:04:15.951 তাদের মধ্যে অ-বস্তুগত/অলৌকিক কিছু আছে (আত্মা) 00:04:15.951 --> 00:04:19.515 কিংবা তারা যে জড় বস্তুর থেকে আলাদা কোন নিয়ম মেনে চলে 00:04:19.515 --> 00:04:21.134 দেখা গেছে তা পুরোপুরি ভুল। 00:04:21.654 --> 00:04:26.110 চার্লস ডারউইনের সময়ের আগে, মানুষ নিজেদের আর বাদবাকি সব জীব এর মধ্যে সীমারেখা 00:04:26.110 --> 00:04:30.878 টেনে দিয়েছিল; যেন আমাদের মধ্যে অলৌকিক কিছু আছে যার জন্য আমরা অসাধারণ। 00:04:31.398 --> 00:04:35.936 আমরা যখন জানলাম যে অন্য সকল জীব থেকে আমরা আলাদা কিছু নই, সবাই বিবর্তনের ফসল 00:04:35.936 --> 00:04:37.525 তখন আমরা অন্য একটি সীমারেখা টেনেছি। 00:04:38.095 --> 00:04:41.636 কিন্তু আমারা যতই কম্পিউটার এর কাজের পরিসর সম্পর্কে জানছি এবং জানছি জীবন কিভাবে কাজ করে, 00:04:41.636 --> 00:04:46.057 আমাদের প্রাণের সংজ্ঞার সংগে মানানসই যন্ত্র তৈরির যত কাছে আমরা পৌছাচ্ছি... 00:04:46.057 --> 00:04:49.481 ততই আমাদের ভাবমূর্তি আবার হুমকির মুখে পড়ছে। 00:04:49.881 --> 00:04:51.828 আর আজ হোক কাল হোক এটা ঘটবেই। 00:04:52.348 --> 00:04:54.256 আপনার জন্য আরেকটি প্রশ্ন আছে: 00:04:54.826 --> 00:04:57.796 মহাবিশ্বের সবকিছুই যদি একই ধরনের জিনিস দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে, 00:04:57.796 --> 00:05:00.570 তাহলে তার মানে কি মহাবিশ্বর সবকিছুই মৃত? 00:05:00.570 --> 00:05:03.235 নাকি সবকিছুই জীবিত? 00:05:03.875 --> 00:05:06.106 নাকি এটা শুধু জটিলতার ব্যপার? 00:05:06.566 --> 00:05:08.459 এর মানে কি আমরা কোনদিনই মারা যেতে পারব না? 00:05:08.459 --> 00:05:10.676 কারণ আমরা তো কখনও জীবিতই ছিলাম না। 00:05:11.136 --> 00:05:14.575 নাকি জীবন মৃত্যু এসব অবান্তর প্রশ্ন, যা আমরা এতদিনে বুঝতেই পারিনি? 00:05:15.395 --> 00:05:19.588 এটাও কি সম্ভব যে আমাদের ঘিরে আছে মহাবিশ্বের আরও অনেক ব্যপার যা আমরা ভাবিনি? 00:05:20.488 --> 00:05:22.965 আমাদের দিকে তাকিয়ে কি হবে? আপনাকে আমরা কোন উত্তর দিতে পারবো না। 00:05:22.975 --> 00:05:25.163 শুধু দিতে পারবো প্রশ্ন, যা নিয়ে আপনি ভাবতে পারেন। 00:05:25.533 --> 00:05:29.732 শেষ পর্যন্ত, এ ধরণের প্রশ্ন নিয়ে ভাবতে গেলেইতো মনে হয় আমরা বেঁচে আছি, 00:05:29.732 --> 00:05:31.794 এবং পাই কিছুটা স্বস্তি। 00:05:54.000 --> 00:05:57.000 subtitle by Borhan @BorhnN