শুভ সকাল। কেমন আছেন আপনারা? সময়টা খুব ভাল গেছে, তাই না? আমি এই পুরো ব্যাপারটা নিয়ে বেশ অবাক হয়ে গেছি। দেখুন, আমি চলে যাচ্ছি। (হাসি) এই আলোচনাসভায় আরো তিনটি বিষয়বস্তু ছিল, তাই না, যেগুলো তার সাথে সম্পর্কযুক্ত যা নিয়ে আমি এখন কথা বলতে চাই। একটা হচ্ছে মানুষের সৃজনশীলতার অসাধারন একটি প্রমান, যা এখানকার সব উপস্থাপনার মধ্যে এবং সব মানুষের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। খেয়াল করুন এর বিভিন্ন ধরন এবং বিভিন্ন ক্রমসীমা। দ্বিতীয়টা হচ্ছে এটা আমাদেরকে এমনি এক জায়গায় নিয়ে এসেছে যে আমরা জানি না কি হতে পারে, ভবিষ্যৎ নিয়ে বলছি আর কি। কোন ধারণাই নেই এটা কোন পর্যায়ে শেষ হবে। আমার শিক্ষা বিষয়ে বিশেষ আগ্রহ আছে -- আসলে কি, আমি সবার মাঝেই শিক্ষার প্রতি আকর্ষন খুঁজে পাই। আপনি কি পান না? আমি এটাতে অনেক মজা পাই। আপনি যদি কোথাও রাতের খাবারের দাওয়াতে যান, এবং বলেন আপনি শিক্ষা নিয়ে কাজ করেন-- আসলে কি, আপনি অধিকাংশ সময়ই রাতে খাওয়ার দাওয়াতে থাকেন না, যদি আপনি শিক্ষা নিয়ে কাজ করেন। (হাসি) থাক্ সে কথা (হাসি) আপনাকে জিজ্ঞেস করা হয় না। এবং উৎসাহী হয়ে আপনাকে কেউ উলটো জিজ্ঞেসও করে না। এটা আমার কাছে অদ্ভুত লাগে। কিন্তু যদি জিজ্ঞেস করা হয়, এবং এটা যদি আপনি কাউকে বলেন, জানেনই তো, তারা হয়ত বলল "আপনি কি করেন?" এবং আপনি বললেন আপনি শিক্ষা নিয়ে কাজ করেন, আপনি দেখবেন তাদের মুখের চামড়া রক্তিম লাল হয়ে যাবে। তারা বলবে, "হায় খোদা! আমি কেন? পুরো সপ্তাহে এক রাতই আমি বের হয়েছি যা কিনা বরবাদ হয়ে গেল।" (হাসি) কিন্তু আপনি যদি তাদের শিক্ষার কথা জিজ্ঞেস করেন, তাহলে তারা আপনার পিঠ দেয়ালে ঠেকাবে। কারণ এটা সেসব জিনিসের মধ্যে একটা যা কিনা একটা মানুষের সুগভীরে পৌছায়। আমি ঠিক বলেছি? যেমন ধর্ম, এবং টাকা-পয়সা এবং অনান্য কিছু জিনিস। শিক্ষা নিয়ে আমার বিশাল আগ্রহ, এবং আমার মনে হয় সবারই। এটার প্রতি আমরা এতো গুরুত্ব দিচ্ছি খানিকটা এজন্য যে শিক্ষাই আমাদের জানাতে পারে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে, যা আমরা কখনো ধরতে পারব না। চিন্তা করুন, এই বছর যে শিশু স্কুল শুরু করবে অবসর নেবে ২০৬৫ সালে। কারোর কোন ধারনাই নেই -- গত চারদিনে বিশেষজ্ঞদের ভাবনা সম্পর্কে জানা সত্ত্বেও, যে পৃথিবীটাকে কেমন দেখাবে সামনের পাঁচ বছরে। তবুও আমাদের তার জন্য শিশুদের শিক্ষা দিতে হবে। তাই এখানে পূর্বাভাস না পাওয়ার ব্যাপারটা আমি মনে করি, অস্বাভাবিক। আর তৃতীয়টা হচ্ছে আমাদের সবার সম্মতি যে সত্যিকারেই কিছু অসাধারণ ক্ষমতা শিশুদের আছে -- যেমন তাদের নতুনত্বকে ধারন করার ক্ষমতা । এই যেমন ধরুন গত রাতের সিরিনাকে; সে ছিল একটা চমক, তাই না? আমরা দেখেছি সে কি করতে পারে। এবং সে ব্যাতিক্রম। কিন্তু আমার তা মনে হয় না, অর্থাৎ পুরোটা শৈশবই সবার থেকে ব্যাতিক্রম নয়.......................................... এখানে ব্যাপারটা হল অসাধারণ সংকল্প, যার মাধ্যমে সে নিজের প্রতিভাকে খুঁজে পেয়েছে। আমার কাছে বিবাদের কথা হল সব শিশুরই মুগ্ধ করা প্রতিভা রয়েছে। এবং আমরা সেগুলোকে খুব নিষ্ঠুরভাবে নষ্ট করি। তাই আমি শিক্ষা নিয়ে কথা বলতে চাই এবং সৃজনশীলতা নিয়ে কথা বলতে চাই। আমার কথা হল এখন শিক্ষাক্ষেত্রে সাক্ষরতার মতই সৃজনশীলতাও গুরুত্বপূর্ণ, এবং আমাদেরও উচিত এটাকে একই চোখে দেখা। (তালি) ধন্যবাদ আপনাদের। এতটুকুই ছিল। অনেক ধন্যবাদ। (হাসি) তো, এখনো ১৫ মিনিট বাকি। তো, আমি জন্ম নিলাম... আর... না... (হাসি) সম্প্রতি খুব সুন্দর একটা গল্প শুনেছি। সেটা বলতে আমার খুব ভাল লাগে -- গল্পটা ছয় বছরের এক ছোট্ট মেয়ের ছবি আঁকার ক্লাস নিয়ে। সেদিন সে পিছনে বসে ছবি আঁকছিল, তার শিক্ষিকা জানিয়েছেন এমনিতে মেয়েটা কখনোই মনোযোগ দিত না, কিন্তু সেইদিন সে মনোযোগ দিয়েছিল। শিক্ষিকা অভিভূত হলেন। তিনি মেয়েটার কাছে গেলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, "তুমি কী আঁকছ?" মেয়েটা উত্তর দিল, "আমি ঈশ্বরের একটা ছবি আকছি।" শিক্ষিকা বললেন, "কিন্তু ঈশ্বর কেমন দেখতে, তা তো কেউ জানে না।" মেয়েটা বলল, "কয়েক মিনিট পরেই তারা জানতে পারবে।" (হাসি) ইংল্যান্ডে, যখন আমার ছেলের বয়স চার ছিল -- সত্যি কথা বলতে, সবখানেই ওর বয়স চার ছিল। (হাসি) বলতে গেলে, ও যেখানেই গেছে, ওর বয়স চারই ছিল প্রতি বছর (হাসি) ও ক্রিসমাসের নাটকে অভিনয় করেছিল। আপনাদের কাহিনীটা মনে আছে? (হাসি) না! কাহিনিটা বেশ বড়। মেল গিবসন ওটার সিকুয়াল নির্মাণ করেছেন। আপনারা হয়তো দেখেছেন। (হাসি) "ন্যাটিভিটি টু।" কিন্তু জোসেফের চরিত্রটা পেল জেমস, সেটা নিয়ে আমরা খুব শিহরিত ছিলাম। আমরা সেটাকে অন্যতম প্রধান চরিত্র বিবেচনা করেছিলাম। পুরো জায়গাটা দর্শকে ঠাসাঠাসি হয়ে গিয়েছিল, টিশার্টে লেখা ছিলঃ "জেমস রবিনসন আজ জোসেফ!" (হাসি) ওকে কোন কথাই বলতে হয়নি, কিন্তু আপনারা তো জানেনই একটা সময় তিনজন রাজা আসেন। তারা উপহার সাথে আনেন, এবং আনেন সোনা, সুগন্ধি আঠা (ফ্রাংকিনসেন্স) আর সুগন্ধি নির্যাস (ম্যর)। এটা সত্যিই হয়েছিল। আমরা সেখানে বসে ছিলাম আর আমার মনে হল তখন ওরা সিকুয়েন্স ভুলে গেছে, কারণ পরে আমরা ছোট্ট ছেলেটার সাথে কথা বললাম, জিজ্ঞেস করলাম, "তুমি কি ঠিক আছ?" সে উত্তর দিল, "হ্যা, কেন? কিছু কি ভুল হয়েছে?" ওরা গুলিয়ে ফেলেছিল, ব্যস। যাক, তো সেই তিনটি ছেলে এল -- চার বছর বয়সী, মাথায় তোয়ালে পেঁচানো অবস্থায় -- তারা ওই বাক্সগুলোকে নিচে রাখলো, প্রথম ছেলেটা বলল, "আমি তোমার জন্য সোনা এনেছি।" দ্বিতীয় ছেলেটা বলল, "আমি তোমার জন্য সুগন্ধি নির্যাস এনেছি।" আর তৃতীয় ছেলেটা বলল, "ফ্রাংক এটা পাঠিয়েছে (ফ্রাংক সেন্ট দিস)" (হাসি) শিশুদের মধ্যে এখানে সাধারণ একটা ব্যাপার হল, ওরা সুযোগ নেয়। ওরা যদি কিছু নাও জানে, তবুও ওরা তা চেষ্টা করে দেখে। ঠিক বলেছি? ওরা ভুল করাকে ভয় পায় না। আমি বলছি না যে ভুল করা আর সৃজনশীলতা একই কথা। আমরা যেটা জানি সেটা হল আপনি যদি ভুল করতে প্রস্তুত না থাকেন, তবে আপনি কখনোই মৌলিক কিছু করতে পারবেন না -- যদি ভুল করতে প্রস্তুত না থাকেন। আর যতদিনে এসব শিশুরা পূর্ণবয়স্ক হয়, অধিকাংশই এই ক্ষমতাটা হারিয়ে ফেলে। ওরা নিজের ভুল করা নিয়ে ভীত হয়ে পড়ে। এবং আমরা কিন্তু এভাবেই আমাদের সান্নিধ্য জাহির করি। আমরা ভুলকে কলঙ্কিত করি। আমরা এখন এমন জাতীয় শিক্ষাব্যবস্থা চালাচ্ছি যেখানে ভুল করাকে একবারেই নিকৃষ্ট হিসেবে ধরা হয়। আর তার ফল হল, আমরা মানুষকে শিক্ষিত করে তার নিজের সৃজনশীলতার বাইরে আনছি। পিকাসো বলে গেছেন -- "সব শিশুই জন্মগতভাবে শিল্পী।" সমস্যাটা হল, বড় হওয়ার সাথে সাথে সেই শিল্পীসত্তাকে ধরে রাখা। আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি যে, আমরা সৃজনশীলতার ভিতরে বেড়ে উঠি না, ক্রমান্বয়ে আমরা এর বাইরে যেতে থাকি। ভালভাবে বললে, শিক্ষিত হয়ে আমরা এর বাইরে যেতে থাকি। কেন এমন হয়? পাঁচ বছর আগ পর্যন্তও আমি ........................... থাকতাম। ........................ আমরা স্টার্টফোর্ড থেকেই লস এঞ্জেলসে এসেছি। তাই আপনারা বুঝতেই পারছেন কতটা ........................ (হাসি) আসলে, আমরা থাকতাম স্নিটারফিল্ডে, স্টার্টফোর্ডের একটু বাইরে, যেখানে শেক্সপিয়ারের বাবার জন্ম। শেক্সপিয়ারেরও যে বাবা আছে, তা আপনি কখনো চিন্তা করেন না, করেন কি? কারন আপনারা নিশ্চয়ই শেক্সপিয়ারকে শিশু হিসেবে চিন্তা করেন না, তাই না? সাত বছরের শেক্সপিয়ার? আমি কখনোই ভাবিনি। বলতে চাইছি যে, সেও কখনো সার বছরের ছিল। সেও কোন শিক্ষকের ইংরেজি ক্লাসে যেত তাই না? সেটা কতটা বিরক্তিকর হতে পারে? (হাসি) শেক্সপিয়ারকে "এখন ঘুমাতে যাও।" "পেন্সিলটা রেখে দাও আর এভাবে কথা বলে বন্ধ কর। এটা সবাইকে ........................ করছে।"