মনে কর আমরা প্রাগৈতিহাসিক যুগে বাস করছি। এখন, নিম্নোক্ত বিষয়গুলো বিবেচনা করঃ আমরা ঘড়ি ছাড়া সময়ের হিসাব কীভাবে রাখবো? সব ঘড়ি কিছু পুনরাবৃত্তিমূলক প্যাটার্নের উপর গঠিত যা সময়ের প্রবাহকে সমান অংশে ভাগ করে। এই পুনরাবৃত্তিমূলক প্যাটার্ন বের করতে আমরা আকাশের দিকে তাকাই। প্রতিদিন সূর্য উঠা এবং অস্ত যাওয়া হল সবচেয়ে আবশ্যিক প্যাটার্ন। যাই হোক, দীর্ঘ সময়ের ব্যপ্তির হিসাব রাখতে, আমরা দীর্ঘ চক্রের দিকে তাকাই। এই জন্য, আমরা চাঁদের দিকে তাকাই, যা বহু দিন ধরে ধীরে ধীরে বড় হয় এবং ছোট হয়। যখন আমরা পূর্ণিমার মধ্যবর্তী দিনের সংখ্যা গণনা করি, আমরা ২৯ সংখ্যায় পৌঁছাই। এটা একটি মাসের সূচনা। যাই হোক, যদি আমরা ২৯ কে সমান ভাগে ভাগ করার চেষ্টা করি, আমরা একটি সমস্যায় পতিত হবোঃ এটা অসম্ভব। ২৯ কে সমান ভাগে ভাগ করার একমাত্র উপায় হলো এটাকে [২৯] টি একক ইউনিট এ ভাগ করা ২৯ হলো ‘মৌলিক সংখ্যা’। মনে কর এটা অবিভাজ্য। যদি একটি সংখ্যা একের থেকে বড় সংখ্যায় সমান ভাগে ভাগ হতে পারে, আমরা তখন এটাকে ‘যৌগিক সংখ্যা’ বলি। এখন আমরা যদি জানতে চাই, আমরা বিস্মিত হবো, “সেখানে কতগুলো মৌলিক সংখ্যা আছে? এবং তারা কত বড় হতে পারে?” চল আমরা সব সংখ্যাকে দুটি ভাগে ভাগ করতে শুরু করি। আমরা বাম পাশে মৌলিক সংখ্যা এবং ডান পাশে যৌগিক সংখ্যার তালিকা করি। প্রথমে, মনে হয়েছে তারা সামনে পেছনে খেলছে। এখানে সুস্পষ্ট কোন প্যাটার্ন নেই। তাহলে আমরা বড় ছবিটি দেখতে একটি আধুনিক কৌশল ব্যবহার করি। এই কৌশল হল “ঊলাম স্পাইরাল” ব্যবহার করা। প্রথমে, আমরা সম্ভাব্য সকল সংখ্যাকে একটি ক্রমবর্ধমান সর্পিল আকারে তালিকা করব। এরপর, আমরা মৌলিক সংখ্যাগুলোকে নীল রঙ করব। সবশেষে, আমরা লক্ষ লক্ষ সংখ্যা দেখার জন্য ছোট করবো। এটাই মৌলিক সংখ্যার প্যাটার্ন যা সবসময় চলতেই থাকে। অবিশ্বাস্যভাবে, এই প্যাটার্নের সমগ্র গঠন আজ পর্যন্ত অসমাপ্ত। আমরা কিছুটা পেছনের দিকে যাই। প্রায় ৩০০ খ্রীষ্টাব্দে প্রাচীন গ্রীসের দিকে যাই। আলেকজান্দ্রিয়ার ইউক্লিড নামে পরিচিত একজন দার্শনিক বুঝতে পেরেছিল যে সকল সংখ্যাকে এই দুটি স্বতন্ত্র বিভাগে বিভক্ত করা যায় তিনি নিরূপন করতে করেছিলন যে কোন সংখ্যা শেষ পর্যন্ত ভাগ হতেই থাকবে যতক্ষন না তুমি সমান সংখ্যার ক্ষুদ্রতম একটি দলে পৌঁছাবে। এবং সংজ্ঞা অনুযায়ী, এই ক্ষুদ্রতম সংখ্যাগুলো সবসময় মৌলিক সংখ্যা। সুতরাং, তিনি জানতেন যে সকল সংখ্যা কোন না কোন ভাবে ভাবে ছোট মৌলিক সংখ্যা থেকে তৈরি। স্পষ্ট করে বললে, বিশ্বের সকল সংখ্যা কল্পনা কর এবং মৌলিক সংখ্যা অগ্রাহ্য কর। এখন, যে কোন যৌগিক সংখ্যা তোল, এবং এটাকে ভাঙো, এবং অবশিষ্ট হিসেবে তুমি সবসময় মৌলিক সংখ্যা পাবে। ইউক্লিড জানতো প্রত্যেক সংখ্যা ছোট মৌলিক সংখ্যার দল ব্যবহার করে প্রকাশ করা যায়। এগুলোকে বিল্ডিং ব্লক হিসেবে চিন্তা কর। তুমি কোন সংখ্যা পছন্দ করবে তা ব্যাপার নয় এটা সবসময় ছোট মৌলিক সংখ্যার যোগে গঠিত হতে পারে। এটাই তার আবিষ্কারের মূলবিষয়, যা 'গাণিতিক মৌলিক উপপাদ্য' হিসেবে পরিচিত- যা নিম্নরূপ: যে কোন সংখ্যা নাও- মনে কর ৩০- এবং সব মৌলিক সংখ্যা খুঁজে বের কর [এটা সমান অংশে বিভক্ত হতে পারে]। আমরা এটাকে 'মৌলিক উৎপাদক ' হিসেবে চিনি। এটা আমাদের মৌলিক গুণক দিবে। এক্ষেত্রে, ৩০ এর মৌলিক উৎপাদক হল ২,৩ ও ৫। ইউক্লিড বুঝেছিল, তুমি এরপর প্রকৃত সংখ্যা গঠনে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যা পর্যন্ত এই মৌলিক উৎপাদককে গুণ করতে পারবে। এক্ষেত্রে, তুমি ৩০ গঠন করতে প্রত্যেক উৎপাদককে একবার গুণ করতে পার। ৩০ এর মৌলিক উৎপাদক হল ২ × ৩ × ৫। এটাকে একটি বিশেষ চাবি বা কম্বিনেশন হিসেবে চিন্তা কর। ৩০ গঠন করার আর কোন উপায় নেই, অন্য গ্রুপের মৌলিক উৎপাদক একসাথে গুণ করা ছাড়া। তাহলে প্রত্যেক সম্ভাব্য সংখ্যার শুধু একটি এবং শুধু একটিই মৌলিক উৎপাদক আছে। একটি ভালো তুলনা হল প্রত্যেক সংখ্যাকে একটি ভিন্ন তালা হিসেবে মনে করা। প্রত্যেক তালার একমাত্র বিশেষ চাবি হবে এর মৌলিক উৎপাদক। দুইটি তালা একটি চাবি থাকবে না। দুইটি সংখ্যার একটি মৌলিক উৎপাদক থাকবে না।