যাই হোক, এইটা মোটামুটি একটা জানা কথা ওখানে লেখা আছে। আমি এই বাক্যটি নিয়ে কাজ শুরু করি ১২ বছর আগে, এবং আমি শুরি করেছিলাম উন্নয়নশীল দেশগুলো নিয়ে, কিন্তু আপনারা এখানে এসেছেন সারা দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। তো আপনি যদি আপনার দেশের মানচিত্রের কথা চিন্তা করেন, আমার ধারণা আপনি বুঝতে পারবেন যে সারা দুনিয়াতে প্রতে্যকটি দেশের জন্যই, আপনি ছোট ছোট বৃত্ত এঁকে বলেত পারবেন যে, "এই হচ্ছে সেই জায়গাগুলো যেখানে কোন ভালো শিক্ষক যাবেন না।" এবং সেই সাথে, ওইগুলো হচ্ছে সেই জায়গা যেখান থেকে সমস্যাগুলো তৈরি হয়। আমাদের আসলে একটা উল্টো ধরণের সমস্যা আছে। ভালো শিক্ষকেরা শুধুমাত্র সেই সব জায়গায় যাবেন না যেখানে তাঁদেরকে সবচে বেশি দরকার। আমি ১৯৯৯ সালে শুরু করি একটা গবেষণার মাধ্যমে এই সমস্যাটার প্রতি মনোযোগ দিই, নয়া দিল্লি তে এটি ছিল খুবই সাধারণ একটা পরীক্ষা। আমি আসলে একটা কম্পিউটারকে নয়া দিল্লির একটি বস্তির দেয়ালে সেঁটে দিয়েছিলাম। বাচ্চারা কালেভদ্রে স্কুলে যেত। এবং ওরা কোন ইংরেজী জানত না। ওরা আগে কোনদিন কম্পিউটারও দেখেনি, এবং ইন্টারনেট কি জিনিস তাও ওরা জানত না। আমি এতে দ্রুতগতির ইন্টারনেট লাগালাম -- এটি মাটি থেকে মোটামুটি তিন ফুট উঁচুতে -- চালিয়ে দিয়ে রেখে চলে আসলাম। এর পর, আমরা কিছু মজার ব্যপার খেয়াল করলাম, আপনারা সেগুলো দেখতে পাবেন। আমি এই নিরীক্ষাটি সারা ভারতজুড়ে বারবার করেছি£ এবং তারপর দুনিয়ার বিশাল অংশজুড়ে করেছি এবং খেয়াল করলাম যে বাচ্চারা সেটাই করতে শিখবে যা তারা করতে শিখতে চায়। এইটা হচ্ছে আমাদের করা প্রথম পরীক্ষা -- আপনাদের ডান দিকে এক আট বছর বয়সী ছেলে ওর ছাত্রীকে পড়াচ্ছে, এক ছয় বছর বয়সী মেয়ে, ছেলেটা ওকে শিখাচ্ছিল কিভাবে ব্রাউজিং করতে হয়। এই মাঝের ছেলেটা মধ্য ভারতীয় -- এইটা রাজস্থানের একটি গ্রাম, সেখানে বাচ্চারা নিজেরাই নিজেদের গান রেকর্ড করেছে তারপর ওরা একে অন্যকে সেটা বাজিয়ে শুনিয়েছে, আর এই কাজে ওরা নিজেরা পুরোপুরি মজা পেয়েছে। ওরা এই সব কাজ চার ঘন্টার মধে্য করেছে প্রথম কম্পিউটার দেখার পর। আরেক দক্ষিণ ভারতীয় গ্রামে, এই ছেলেরা একটা ভিডিও ক্যামেরা জড়ো করেছে ওরা একটি ছুটন্ত মৌমাছির ছবি তুলতে চেষ্টা করছিল। ওরা এইটা Disney.com থেকে ডাউনলোড করেছে। অথবা এই ওয়েবসাইটগুলোর কোন একটা থেকে, ওদের গ্রামে কম্পিউটার স্থাপনের ১৪ দিন পর। শেষ পর্যন্ত, আমরা এই উপসংহারে পৌঁছলাম যে শিশুদের দল কম্পিউটার আর ইন্টারনেট থেকে নিজেরাই শিখতে পারে, তারা কোথায় আছে কার সাথে আছে সেইটা গুরুত্বপুর্ণ নয় এই সময়, আমি আরেকটু বেশি আশাবাদী হয়ে উঠলাম এবং সিদ্ধান্ত নিলাম শিশুরা কম্পিউটার দিয়ে আর কী করতে পারে তা দেখার আমরা ভারতের হায়দ্রাবাদে একটা পরীক্ষা দিয়ে শুরু করলাম, সেখানে আমি একদল শিশুকে দিলাম -- ওরা গভীর তেলেগু টানে ইংরেজী বলত আমি ওদেরকে একটা কম্পিউটার দিলাম সাথে কথা-থেকে-লেখা যায় এমন সফটওয়্যার, যেটা এখন উইন্ডোজের সাথে বিনামূল্যে পাওয়া যায়, তারপর ওদের বললাম ওর মধে্য কথা বলতে তো ওরা যখন ওই সফটওয়্যারে কথা বলল, কম্পিউটার হাবিজাবি লেখা শুরু করল, তখন ওরা বলল, "আমরা যা বলছি এই কম্পিউটার তো তার কিছুই বুঝতে পারে না" তো আমি বললাম, "হ্যাঁ, আমি এইটা এখানে দুই মাসের জন্য রেখে যাব তোমরা নিজেদের কথাগুলো কম্পিউটারকে বোঝাও।" তখান বাচ্চারা বলল, "আমরা সেটা করব কিভাবে?" আমি বললাম, "আমি আসলে জানিনা।" (হাসি) তারপর আমি চলে গেলাম। (হাসি) দুই মাস পর -- এবং এইটা এখন নথিভুক্ত তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক আন্তর্জাতিক উন্নয়ন জার্নালে -- যে ওদের উচ্চারণের টান বদলে গিয়েছিল এবং অদ্ভুতভাবে তা নিরপেক্ষ ব্রিটিশ উচ্চারণের খুব কাছাকাছি যেভাবে আমি কথা-থেকে-লেখা'র সফটওয়্যারটিকে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলাম। অন্যভাবে বললে, ওরা সবাই জেম্স টুলি'র মত করে কথা বলছিল| (হাসি) তাহলে ওরা নিজে নিজেই তা করতে সক্ষম হয়েছিল এর পর, আমি আরও নিরীক্ষা শুরু করলাম বিভিন্ন বিষয়ের উপর যে ওরা নিজেরাই হয়ত বিভিন্ন কাজ করতে শিখবে একবার কলম্বো থেকে আমি একটা অদ্ভুত টেলিফোন কল পেলাম, স্বর্গত আর্থার সি. ক্লার্ক এর কাছ থেকে, উনি বললেন, "আমি দেখতে চাই কী ঘটনা ঘটে চলেছে।" উনি ভ্রমণে অপারগ ছিলেন, তো আমিই গেলাম ওঁর কাছে উনি দুটি মজার বিষয় বললেন, "কোন মেশিন যদি কোন শিক্ষকের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে, তবে তাই হওয়াই উচিত।" (হাসি) ওঁর বলা দ্বিতীয় কথাটি ছিল, "শিশুদের যদি আগ্রহ থাকে, তাহলে শিক্ষা নিজে নিজেই ঘটে।" আর আমি সেটা করছিলাম হাতেনাতে, তাই বারবার আমি এই ঘটনা দেখি আর ওঁর কথা ভাবি। (ভিডিও) আর্থার সি. ক্লার্ক: এবং ওরা নিশ্চয়ই মানুষকে সাহায্য করতে পারে, কারন শিশুরা খুব দ্রুত কোন কিছু চালাতে শিখে এবং ওদের যেটা পছন্দ সেটা খুঁজে বের করে ফেলে আর যখন তুমি আগ্রহ পাবে তখনই তুমি শিখবে। সুগতা মিত্র: আমি এই পরীক্ষাটি দক্ষিণ আফ্রিকায় নিয়ে যাই ও হচ্ছে ১৫ বছর বয়সী বালক (ভিডিও) বালক: ...শুধু বলবেন, আমি গেম খেলতে ভালোবাসি পশুপাখি পছন্দ করি, আর গান শুনতে ভালোবাসি সু.মি: এবং আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম, "তুমি কি ইমেইল পাঠাও?" ও তখন বলল, "হ্যাঁ, আর ওই ইমেইলগুলো লাফিয়ে লাফিয়ে সাগর পাড়ি দেয়" এইটা ক্যাম্বোডিয়ায়, ক্যাম্বোডিয়ার পল্লী এলাকায় -- মোটামুটি একটা বোকাসোকা ধরনের অঙ্কের গেম,¥ যেটা কোন বাচ্চাই বাসায় অথবা ক্লাসরুমে খেলবে না ওরা যেটা করত তা হলো, ওরা গেমটা আপনাদের দিকে ছুঁড়ে মারত ওরা বলত, "এইটা খুবই বোরিং" আপনারা যদি এইটা ওই উঠানে রেখে আসেন, আর সব বড়রা যদি চলে যান, তাহলে ওরা একজন আরেকজন কে বড়াই করে দেখাবে যে কে কী করতে পারে এই ছেলেমেয়েরা এখানে তাই করছে ওরা মনে হয় গুণ করার চেষ্টা করছে এবং সমগ্র ভারতে, দুই বছরের মাথায়, বাচ্চারা ওদের বাড়ির-কাজগুলো নিয়ে গুগল করা শুরু করে দিল শিক্ষকেরা বললেন, এর কারণে ওদের ইংরেজি বিদ্যার ভীষণ উন্নতি হয়েছে -- (হাসি) দ্রুত উন্নতি এবং সব ধরণের জিনিসের উন্নতি, ওঁরা বললেন, "ওরা তো সব গভীর চিন্তাবিদে পরিণত হয়েছে, এবং আরো কত কী যে শিখছে!” (হাসি) এবং সত্যিই তাই হয়েছিল আমার মতে, কোনকিছু যদি গুগলে থাকে, তাহলে সেইটা মাথার মধ্যে নিয়ে বোঝাই করার দরকারটা কী? তাই পরবর্তী চার বছরের মাথায়, আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছুলাম যে একদল শিশু ইন্টারনেট চালিয়ে শিক্ষা বিষয়ক সফলতা নিজেরাই অর্জন করতে পারে। এই সময়ে, বেশ কিছু টাকা নিউক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এলো ভারতীয় স্কুল-শিক্ষার উন্নয়নের উদ্দেশে্য তো নিউক্যাসেল থেকেই আমাকে ফোন দিল। আমি বললাম, "আমি এটা দিল্লি থেকে করব।" ওরা বলল, "এই রকম কোন উপায় নেই যে আপনি বিশ্ববিদ্যালয় তহবিলের দশ লাখ পাউন্ড দিল্লিতে বসে কাজে লাগাবেন।" তাই ২০০৬ সালে, আমি একটা মোটাতাজা ওভারকোট কিনলাম এবং নিউক্যাসেলে রওনা দিলাম। আমি বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থাপনার সীমারেখাটা পরীক্ষা করতে চাইলাম। নিউক্যাসেল থেকে আমি প্রথম যে এক্সপেরিমেন্টটা করলাম সেইটা আসলে ভারতেই করা হলো। এবং আমি নিজের জন্য একটা অসম্ভব লক্ষ্য ঠিক করলাম তামিল ভাষাভাষী ১২ বছর বয়সী শিশু দক্ষিন ভারতীয় একটা গ্রামে নিজেদেরকে বায়োটেকনলজী শিখাতে পারে ইংরেজি তে নিজে নিজে? আমি ভাবলাম, আমি ওদের কে পরীক্ষা করব। ওরা শূন্য পাবে। আমি ওদেরকে উপকরণগুলো দিয়ে আসব। আমি ফিরে এসে পরীক্ষা নেব। ওরা আবার শুন্য পাবে। আমি ফিরে যাব এবং বলব, "হ্যাঁ, কিছু বিশেষ বিষয় শেখানোর জন্য শিক্ষকের দরকার আছে।" আমি ২৬ টা শিশুকে ডাক দিলাম ওরা সবাই এলো, আমি ওদেরকে বললাম যে এই কম্পিউটারে আসলেই খুবই কঠিন কিছু বিষয়ের তথ্য আছে তোমরা যদি কিছুই না বোঝো তাহলেও আমি অবাক হব না এগুলো সব ইংরেজী তে আছে, আর আমি এখন যাচ্ছি (হাসি) তো এভাবে আমি ওদেরকে রেখে চলে গেলাম আমি দুই মাস পর ফিরে এলাম, এবং ওই ২৬ টা বাচ্চা হেঁটে হেঁটে এলো, সবাইকে খুব বেশি শান্ত দেখাচ্ছিল আমি বললাম, "ভালো কথা, তোমরা কি ওই জিনিসগুলো দেখেছিলে?" ওরা বলল, "হ্যাঁ, আমরা দেখেছিলাম।" "তোমরা কি কিছু বুঝতে পেরেছো?" "না, কিচ্ছু বুঝিনি।" তো আমি বললাম, "যাই হোক, তোমরা কত দিন ধরে জিনিসগুলো দেখেছ তারপর সিদ্ধান্ত নিয়েছ, যে তোমরা কিছুই বোঝনি?" ওরা বলল, "ওগুলো আমরা প্রতে্যকদিনই দেখি।" তো আমি বললাম, "তাহলে গত দুই মাস ধরে তোমরা একটা জিনিস দেখছ যার কিছুই তোমরা বোঝনি?" তখন একটা ১২ বছর বয়সী মেয়ে হাত তুলল এবং বলল, আসলে, "ডিএনএ অনুগুলোর অস্বাভাবিক প্রতিলিপি তৈরী হলে জেনেটিক রোগ হয়, এইটা ছাড়া আমরা আর কিছুই বুঝিনি।" (হাসি) (হাত তালি) (হাসি) আমার এইটা প্রকাশ করতে তিন বছর লাগল। এই কিছুদিন হোল এইটা ব্রিটিশ শিক্ষা প্রযুক্তি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এর মধে্য যারা আমার গবেষণাটি বিচার করেছিলেন তাদের একজন বললেন, "এইটা এত ভালো যে সতি্য মনে হয় না," ওই কথাটা খুব একটা সুবিধার ছিল না যাই হোক, এর মধে্য একটা মেয়ে নিজে নিজে শিখেছিল কি করে একজন শিক্ষিকা হওয়া যায় আর তারপর এই যে ওখানে ওই মেয়েটা মনে রাখবেন, ওরা কিন্তু ইংরেজী পড়েনি আমি শেষের কিছু অংশ সম্পাদনায় বাদ দিয়েছি যখন আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, "নিউরনটা কোথায়?" আর ও বলেছিল, "নিউরন টা? নিউরন টা?" এরপর ও তাকিয়ে এমন করল। সেই ভাবখানা যেমনই হোক, খুব একটা ভালো ছিল না যাইহোক ওদের স্কোর শুন্য থেকে ৩০ ভাগে উন্নীত হল, যেটা এই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে অসম্ভবের কাছাকাছি কিন্তু ৩০ শতাংশ তো পাস মার্ক না তো আমি দেখলাম যে ওদের এক বন্ধু আছে এক স্থানীয় হিসাবরক্ষক, বাচ্চা মেয়ে, ওরা মেয়েটার সাথে ফুটবল খেলত আমি মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করলাম, "তুমি কি ওদেরকে পাস করার মত বায়োটেকনলজি শিখাতে পারো?" ও বলল, "আমি কিভাবে শিখাব? আমি ওই বিষয়ে কিছু জানিনা তো।" আমি বললাম, "না, এক্ষেত্রে দাদিমাদের পদ্ধতি কাজে লাগাও।" ও বলল, "সেইটা কেমন?" আমি বললাম, "এই মনে করো, তোমাকে যা করতে হবে তা হল ওদের পেছনে দাঁড়িয়ে থাকো আর সব সময় ওদের প্রসংশা করতে থাক। ওদেরকে শুধু বল, "আহ এইটা ভালো। অসাধারণ হচ্ছে। কী জিনিস এইটা? আবার করতে পারবে? আমাকে এমন আরও কিছু দেখাতে পারবে?" ও দুই মাস ধরে এই কাজ করল আর স্কোর পৌঁছাল ৫০ শতাংশে, যা নয়া দিল্লির অভিজাত স্কুলগুলোতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বায়োটেকনলজি শিক্ষকের মাধ্যমে পাওয়া যায় তো আমি নিউক্যাসলে ফিরে আসলাম ওই ফলাফলগুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম যে এখানে কিছু একটা ঘটে চলেছে যা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যপারের দিকে মোড় নিচ্ছে। এভাবে, বিভিন্ন সব প্রত্যন্ত অঞ্চলে নিরীক্ষার পর, আমি আমার কল্পনার সবচে প্রত্যন্ত অঞ্চলে চলে আসলাম (হাসি) দিল্লি থেকে মোটামুটি ৫,০০০ মাইল দুরে গেট্সহেড নামের ছোট্ট শহরে গেট্সহেডে, আমি ৩২ জন শিশু নিলাম, এবং আমি ওই পদ্ধতিটা কে আরও ঝালাই করা শুরু করলাম আমি ওদেরকে চার জনের দলে ভাগ করলাম আমি বললাম, "তোমরা নিজেরাই তোমাদের চার জনের দল তৈরি কর প্রতে্যক চারজনের দল একটা করে কম্পিউটার পাবে চারটা করে নয়" মনে রাখুন, আমার সেই 'দেয়ালের ফুটো'র ঘটনাটি "তোমরা দল বদল করতে পারবে এক দল অন্য দলের সাথে কথা বলতে পারবে, যদি তুমি তোমার দল পছন্দ না কর, ইত্যাদি ক্ষেত্রে তুমি অন্য দলের কাছে চলে যেতে পারো, ওদের ঘাড়ের উপর দিয়ে দেখতে পার যে ওরা কী করছে, তারপর নিজের দলে ফিরে এসে দাবি করতে পার যা শিখেছ সেইটা তোমার নিজের বুদ্ধি আর আমি ওদেরকে ব্যাখ্যা দিলাম যে, তোমরা হয়ত জানো, যে অসংখ্য বৈজ্ঞানিক গবেষনার কাজ এভাবেই হয়ে থাকে (হাসি) (করতালি) বাচ্চারা উৎসাহের সাথে আমার পেছনে লেগে গেল আর বলল, "এখন, আপনি আমাদেরকে দিয়ে কী করাতে চাইছেন?" আমি ওদরেকে ছয়টা GCSE প্রশ্ন দিলাম প্রথম দলটি, /সবচেয়ে ভালো দল, ২০ মিনিটের মধে্য সব প্রশ্নের জবাব দিয়ে দিল সবচে খারাপ দলটি নিল ৪৫ মিনিট ওরা যা কিছু জানত তার সব ওরা ব্যবহার করেছে -- নিউজ গ্রুপ, গুগল, উইকিপিডিয়া, আসক জীভ্স, ইত্যাদি শিক্ষকেরা বললেন, "এতে কি গভীর শিক্ষা হচ্ছে?" আমি বললাম, "আচ্ছা, আসুন দেখি চেষ্টা করে আমি দুই মাস পর ফিরে আসব ওদের একটা লিখিত পরীক্ষা নিব কোন কম্পিউটার থাকবে না, একে অনে্যর সাথে কথা বলতে পারবে না, ইত্যাদি" আমি যখন ওদের কম্পিউটার আর দলগুলোসহ পরীক্ষাটি নিয়েছিলাম তখন ওদের গড় স্কোর ছিল ৭৬ শতাংশ তারপর আমি যখন গবেষণা করছিলাম, যখন ওদের লিখিত পরীক্ষা নিলাম দুই মাস পর, ওদের স্কোর দাঁড়াল ৭৬ শতাংশে ক্যমেরার মত স্মৃতি ক্ষমতা ছিল শিশুগুলোর মধে্য, আমি সন্দেহ করলাম কারণ ওরা একে অনে্যর সাথে আলোচনা করছে একা একজন শিশু একটা কম্পিউটারের সামনে সেইটা করবে না আমার আরও বেশ কিছু ফলাফল আছে, যেগুলো মোটামুটি অবিশ্বাস্য, স্কোরগুলো এমনভাবে সময়ের সাথে বাড়তে থাকে কারণ ওদের শিক্ষকেরা বলেন ওই গবেষণা সেশন শেষ হওয়ার পরও, শিশুরা বিষয়গুলো নিয়ে গুগল করতে থাকে এই বিলেতে, আমি এক ডাক দিলাম সব ব্রিটিশ দিদা - দেরকে, আমার কুপ্পাম গবেষণার পর যাইহোক, আপনারা জানেন, সেখানে অনেক তেজস্বী মানুষজন পাওয়া গেল, ব্রিটিশ দিদারা| তাদের মধে্য থেকে ২০০ জন তৎক্ষনাত স্বেচ্ছা সেবক হিসেবে লেগে পড়লেন। (হাসি) ওঁদের সাথে আমার চুক্তিটা হল তাঁরা আমাকে এক ঘন্টা করে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটে সময় দিবেন, তাদের বাসায় বসেই, সপ্তাহে এক দিন করে তো ওঁরা তাই করলেন এবং এই গত দুই বছর ধরে, ৬০০ ঘন্টারও বেশি উপদেশ দেওয়া নেওয়া চলেছে স্কাইপের মাধ্যমে, আমার ছাত্ররা এটি ব্যবহারের পর এর নাম দিয়েছে 'দিদা ক্লাউড' দাদিমা ক্লাউড ওখানে বসেন আমি তাদেরকে যেই স্কুলে আমি চাই সেখানেই কাজে লাগেতে পারি (ভিডিও) শিক্ষক: তোমরা আমাকে ধরতে পারবে না তোমরা বলো তোমরা আমাকে ধরতে পারবে না শিশুরা: তোমরা আমাকে ধরতে পারবে না শিক্ষক: আমি হচ্ছি আদারুটি মানব শিশুরা: আমি হচ্ছি আদারুটি মানব শিক্ষক: ভালো করেছ তোমরা, খুব ভালো ... সু.মি: গেট্সহেডে ফিরে আসি, এক ১০ বছর বয়সী বালিকা হিন্দুধর্মতত্বের গভীরে ঢুকে পড়ে ১৫ মিনিটের মধে্য আপনি জানেন, যে বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা দুইটা শিশু একটা TEDTalk দেখে ওরা আগে ফুটবলার হতে চেয়েছিল ৮ টি TEDTalk দেখার পর, ও লিওনার্দো দা ভিঞ্চি হতে চায় (হাসি) (করতালি) এইটা খুবই সহজ জিনিস এই সেই জিনিস যেটা আমি এখন তৈরী করছি একে বলা হয় সোল্স: স্ব-সঙ্গঠিত শিক্ষার পরিবেশ| আসবাবপত্রের নকশা তৈরী হয়ে গেছে যেন শিশুরা বিশাল সব শক্তিশালী পর্দার সামনে বসতে পারে, শক্তিশালী ব্রডব্যন্ড সংযোগ, কিন্তু দলগতভাবে ওরা যদি চায় তাহলে ওরা 'দিদা ক্লাউড'এ কল করতে পারে এই হচ্ছে নিউক্যাসলে একটা 'সোল' এই মধ্যস্থতাকারি একজন ভারতীয়, তো আমরা এভাবে কদ্দুর যেতে পারি? এই শেষ ছোট্ট একটা কথা বলে শেষ করব মে মাসে আমি তোরিনো গেছিলাম আমার ১০ বছর বয়সী বাচ্চাদের দল থেকে সবগুলো শিক্ষককে ভাগিয়ে দিলাম আমি কেবল ইংরেজী বলতে পারি, আর ওরা শুধু ইতালিয়ান বলে, সুতরাং আমাদের যোগাযোগের কোন উপায় ছিল না| আমি ব্ল্যাকবোর্ডে ইংরেজি প্রশ্ন লেখা শুরু করলাম বাচ্চারা সেটার দিকে তাকিয়ে বলল, "কী?" আমি বললাম, "যাইহোক, এইটা কর" ওরা লেখাটিকে গুগলে টাইপ করল, ইতালিয়ান ভাষায় অনুবাদ করে নিল, এবং ওরা ইতালিয়ান ভাষার গুগলে ফিরে গেল ১৫ মিনিট পর ... পরবর্তী প্রশ্ন: কোলকাতা কোথায়? এই প্রশ্নের জন্য ওরা মাত্র ১০ মিনিট সময় নিল এরপর আমি বেশ কঠিন একটা প্রশ্ন দিয়ে দেখলাম| পীথাগোরাস কে ছিলেন, তিনি কী করেছিলেন? কিছুক্ষণের জন্য নীরবতা, তারপর ওরা বলল, "আপনি বানান ভুল লিখেছেন এইটা হবে পিতাগোরা (Pitagora) এবং এরপর, ২০ মিনিটের মধে্য, ওদের পর্দায় সেই সমকোনী ত্রিভুজ উদয় হওয়া শুরু করল এই ঘটনা আমার শিরদাঁড়ার মধে্য দিয়ে কাঁপুনি বয়ে গেল| এরা সব ১০ বছর বয়সী শিশু লিখা: আরও ৩০ মিনিটের মধে্য এরা আপেক্ষিকতার সূত্রে পৌঁছাত। আর তারপর? (হাসি) (করতালি) সু.মি: তো আপনারা জানেন কী ঘটেছিল? আমার ধারণা আমরা কেবলমাত্র হাতড়ে বেড়িয়েছি একটা স্ব-সঙ্গঠিত ব্যবস্থার মধে্য দিয়ে একটা স্বপ্রণদিত ব্যবস্থা এমন একটা ব্যপার যেখানে গঠনতন্ত্র উঠে আসে বাইরের কোন সক্রিয় মধ্যস্থতা ছাড়াই স্ব-সঙ্গঠিত ব্যবস্থা নতুন কিছুর উদ্ভবও দেখায়, যা আপনা থেকেই ঘটা শুরু হয় এই ব্যবস্থার মধে্য, যা হয়ত কখনই পরিকল্পনা করা হয়নি সেই জন্যই আপনারা এরকম প্রতিক্রিয়া দেখান, কারণ আপাতদৃষ্টিতে এগুলো অসম্ভব মনে হয় আমার মনে হয় আমি এখন একটা ধারণা করতে পারি -- শিক্ষা একটি স্ব-সঙ্গঠিত ব্যবস্থা, যেখানে শেখার বেপারটি একটি এর মধে্য থেকে উঠে আসা ঘটনা এটি গবেষণার মাধ্যমে প্রমাণ করতে আরও কয়েক বছর লেগে যাবে, কিন্তু আমি চেষ্টা করব কিন্তু এরই মধে্য, একটি আরেক পদ্ধতি আছে একশ কোটি শিশু, আমাদের দরকার ১০ কোটি সংস্থাপক ব্যক্তি -- এই পৃথিবীতে তার থেকে অনেক অনেক বেশি ব্যক্তি আছেন -- এক কোটি সোল্স, ১৮,০০০ কোটি ডলার আর ১০ বছর আমরা সবকিছু বদলে ফেলতে পারি| ধন্যবাদ (করতালি)