এটা একটা দারুণ বিষয় যে আমরা এখানে এসেছি আলোচনা করতে
রোগীদের সচেতনতার বছর নিয়ে|
আজকে এর আগে আপনারা শুনেছেন
সেইসব রোগীদের কথা যাঁরা নিজেদের পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতেই নিচ্ছেন,
রোগীরা যাঁরা বলছেন, "আপনি জানেন কি, আমি এই রোগের সম্ভাবনাসমূহ জানি,
কিন্তু আমি আরও তথ্যের খোঁজ করছি|
আমি নির্ধারণ করব
কি আমার সাফল্যের শর্ত|"
আমি আপনাদের বলতে চাই
কীভাবে চার বছর আগে প্রায় আমি মারা যাচ্ছিলাম --
দেখলাম যে আমি, প্রায় সত্যিই,
ইতিমধ্যে মৃতপ্রায়|
এবং তখন আমি যা খুঁজে পেলাম তাকে বলা হচ্ছে ই-পেশেন্ট আন্দোলন --
এর মানে কী আমি আপনাদের বোঝাচ্ছি|
আমি অনেকদিন ধরে ব্লগিং করছি পেশেন্ট ডেভ নামে,
আর এই আবিষ্কারটা করে,
আমি নিজের নতুন নামকরণ করলাম ই-পেশেন্ট ডেভ|
"পেশেন্ট" বা "রোগী" শব্দটা সম্পর্কে বলি,
যখন প্রথম আমি কয়েক বছর আগে
স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে জড়িত হতে শুরু করি
এবং শুধুমাত্র একজন নৈমিত্তিক পর্যবেক্ষক হিসেবে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সভা বা অধিবেশনে যেতে থাকি,
আমি লক্ষ্য করি যে, মানুষজন রোগীদের সম্পর্কে কথা বলছে
এমনভাবে যেন সে এমন কেউ যে এই ঘরের মধ্যে নেই,
যেন সে কোন সুদূরের লোক|
আমাদের আজকের কিছু আলোচনাতেও মনে হল, আমরা এখনও একইরকম আচরণ করি|
কিন্তু আমি এখানে এসেছি আপনাদের বলতে,
"পেশেন্ট" বা "রোগী" একটা প্রথম পুরুষ শব্দ নয়|
আপনি, আপনি স্বয়ং,
কোন হাসপাতালের বিছানায় নিজেকে খুঁজে পাবেন --
অথবা আপনার মাকে বা আপনার সন্তানকে --
অনেকেই মাথা নাড়ছেন, অনেকেই ভাবছেন "হ্যাঁ, আমি জানি আপনি ঠিক কী বলতে চাইছেন।"
তাই যখন আপনি শুনবেন যে আজকে কী নিয়ে আমি কথা বলতে যাচ্ছি,
প্রথমত, আমি এটাই বলতে চাই
যে আমি এখানে এসেছি তাদের পক্ষ নিয়ে
যে সব রোগীদের সাথে আমার দেখা হয়েছে,
এবং যাদের সাথে আমার দেখা হয়নি|
এই আলোচনা হচ্ছে রোগীদের আরো সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ানোর ব্যাপারে,
স্বাস্থ্য পরিষেবার সহায়তা করার জন্য, এবং সেটাকে সংশোধন করার জন্যে|
আমার হাসপাতালের একজন অভিজ্ঞ ডাক্তার,
চার্লি সাফরান, ও তাঁর সহকর্মী ওয়ার্নার স্লাক,
বহু দশক ধরেই বলছেন যে
স্বাস্থ্য পরিষেবায় সবচেয়ে অব্যবহৃত সম্পদ
হলো রোগী|
ওঁরা এটা বলছেন সেই সত্তরের দশক থেকেই|
এখন আমি একটু পিছিয়ে যাই ইতিহাসের দিকে।
এটা জুলাই ১৯৬৯ এর ঘটনা|
আমি কলেজে প্রথম বর্ষের ছাত্র,
এবং এটা সেই সময় যখন আমরা প্রথম চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করেছি|
এবং এটা ছিল প্রথমবার
যখন আমরা অন্য আরেক ভূপৃষ্ঠ থেকে দেখলাম --
সেই জায়গাকে যেখানে এখন আপনি আর আমি রয়েছি,
যেখানে আমরা বাস করি|
দুনিয়াটা বদলাচ্ছিল|
তা এমনভাবে বদলাতে যাচ্ছিল যা কেউ আগে থেকে অনুমান করতে পারেনি|
কয়েক সপ্তাহ পরে,
উডস্টক ঘটলো|
তিন দিন ধরে গানবাজনা আর ফুর্তি|
এখানে, স্রেফ ঐতিহাসিক সত্যতার স্বার্থে,
রইল আমার ওই বছরের একটা ছবি|
(হাসি)
হাঁ, ঢেউ খেলানো চুল, নীল চোখ --
সেটা সত্যিই কিছু ছিল|
ওই ১৯৬৯ এর শরত্কালেই,
সমগ্র বিশ্ব তালিকা প্রকাশিত হলো|
এটি ছিল স্বয়ম্ভরতার একটা হিপি জার্নাল|
আমরা ভাবি যে হিপিরা শুধুই প্রমোদলোভী ছিল,
কিন্তু তাতে একটা জোরদার অংশ ছিল -- আমিও ছিলাম ওই আন্দোলনে --
একটা সুদৃঢ অংশ
ছিল নিজের দায়িত্ব নেওয়া|
এই বইয়ের শিরোনামের উপশিরোনাম
হচ্ছে "সরঞ্জামের নাগাল"|
এবং এখানে বলা হয়েছে যে কেমন করে নিজের বাড়ি বানাবেন,
কী করে নিজের ফসল ফলাবেন, এমন সব জিনিস|
১৯৮০-র দশকে
এই তরুণ ডাক্তার, টম ফার্গুসন,
সমগ্র বিশ্ব তালিকার চিকিত্সা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন|
এবং তিনি দেখলেন যে সবচেয়ে বেশি
যে কাজটা আমরা করি চিকিত্সা ও স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যাপারে
তা হল নিজেদের খেয়াল নিজেরাই রাখা|
বস্তুত, তিনি বলেন যে ৭০-৮০ শতাংশ
ক্ষেত্রে এভাবেই আমরা নিজেদের শরীর-স্বাস্থ্য সম্বন্ধে যত্ন নিই|
এছাড়াও তিনি দেখলেন যে
যখন স্বাস্থ্য পরিষেবা চিকিত্সা পরিষেবাতে পরিণত হয়
কোনো গুরুতর রোগের কারণে,
তখন প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায় তথ্যের অভাব|
আর যখন ওয়েব বা ইন্টারনেট এলো, তখন তা সবকিছু পাল্টে ফেলল,
কারণ শুধু যে আমরা তথ্য খুঁজে পেতে পারলাম তাই নয়,
আমরা আমাদের মতন লোকেদেরও খুঁজে পেলাম
যারা সংগ্রহ করতে পারে, যারা আমাদের এনে দিতে পারে নানা প্রয়োজনীয় তথ্য|
এবং তিনি তখন এই শব্দটির প্রণয়ন করলেন: ই-পেশেন্ট --
সজ্জিত, সক্রিয়, ক্ষমতাপ্রাপ্ত, সক্ষম|
অবশ্যই, জীবনের এই পর্যায়ে
তিনি আরো সৌম্য হয়েছেন আগের তুলনায়|
এখন আমি ছিলাম একজন সক্ষম রোগী
ওই শব্দটা শোনার অনেক আগে থেকেই|
২০০৬ সালে আমি ডাক্তারের কাছে গেলাম নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা করাতে,
এবং বললাম, "আমার কাঁধে ব্যথা করছে|"
আমার এক্স-রে করানো হলো,
আর, পরেরদিন সকালে --
আপনারা হয়ত খেয়াল করেছেন, আপনারা যাঁরা কোনো শারীরিক সংকটে পড়েছেন
এটা বুঝতে পারবেন|
আজ সকালে কয়েকজন বক্তা
ঠিক ওই তারিখটাও বলতে পারলেন যেদিন ওঁদের রোগটা ধরা পড়েছিল|
আমার জন্য, সেটা ছিল সকাল ন'টা
জানুয়ারী ৩, ২০০৭ তারিখে|
আমি অফিসে ছিলাম, আমার ডেস্কটা ছিল পরিষ্কার;
আমার দেয়ালে নীল পার্টিশন কার্পেট ছিল|
ফোনটা বাজলো - এবং ওই প্রান্তে ছিলেন আমার ডাক্তারবাবু|
তিনি বললেন, "ডেভ, আমি আপনার এক্স-রে টা দেখলাম
আমার বাড়ির কম্পিউটার স্ক্রীনে।"
তিনি বললেন, "আপনার কাঁধের সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে,
কিন্তু ডেভ, আপনার ফুসফুসে কিছু একটা আছে|"
আর আপনি যদি ওই লাল ডিম্বাকৃতি অংশটা দেখেন,
ওই ছায়াটা কিন্তু ওখানে থাকার কথা ছিল না|
সংক্ষেপে বলতে গেলে,
আমি বললাম, "তাহলে আপনি আমাকে ওখানে ফিরে আসতে বলছেন?"
তিনি বললেন "হ্যাঁ, আপনার বুকের একটা সিটি স্ক্যান করতে হবে|"
সবশেষে আমি বললাম, "আমাকে কী কিছু করতে হবে?"
তিনি বললেন -- ভেবে দেখুন,
আপনার ডাক্তারবাবু আপনাকে এমন একটা উপদেশ দিচ্ছেন:
"আপনি স্রেফ বাড়ি গিয়ে আপনার গিন্নির সাথে একটু সুরাপান করুন|"
আমি ক্যাট স্ক্যান করালাম,
এবং দেখা গেল এরকম পাঁচটা জিনিস আমার দুই ফুসফুসে আছে|
তখন বোঝা গেল যে ওটা ক্যান্সার|
আমরা জানতাম ওটা লাং ক্যান্সার নয়|
অর্থাৎ অন্য কোথাও থেকে ওটা মেটাস্ট্যসাইজ করেছে|
প্রশ্নটা হলো, কোথা থেকে?
তাই আমি এবারে আল্ট্রাসাউন্ড করালাম|
অনেক মহিলাই যা করিয়েছেন এবারে আমি সেটা করানোর সুযোগ পেলাম --
পেটে জেলী লাগিয়ে bzzzz করে।
আমার স্ত্রী আমার সঙ্গে এলেন|
তিনি একজন পশু চিকিত্সক,
অতএব তিনি অনেক আল্ট্রাসাউন্ড দেখেছেন|
তিনি জানেন, আমি একটা কুকুর নই|
কিন্তু আমরা যা দেখলাম - এটা একটা এম-আর-আই ছবি|
এটা আল্ট্রাসাউন্ড ছবির চেয়ে বেশি স্পষ্ট|
আমরা দেখলাম, ওই বৃক্ক(কিডনি)তে
একটা বড় পিণ্ড|
আর আসলে ঐরকম দুখানা ছিল|
একটা সামনের দিকে বাড়ছিল এবং ইতিমধ্যেই ফেটে গিয়েছিল,
আর সেটা বৃহদন্ত্রের সাথে লেগে গিয়েছিল|
অন্যটা পেছনের দিকে বাড়ছিল আর সোলেয়াস মাংসপেশীর সাথে সেঁটে গিয়েছিল,
সেটা নাকি আমাদের পিঠের একটা বড়সড় পেশী, যেটার নাম আমি আগে কখনো শুনিনি,
কিন্তু হঠাৎই ওটা নিয়ে মাথা ঘামাতে শুরু করলাম|
আমি বাড়ি গেলাম|
আমি গুগল করি নিয়মিত -- সেই ১৯৮৯ থেকে আমি অনলাইন হয়েছি কম্পিউসার্ভে|
আমি বাড়ি ফিরে গেলাম, এবং আমি জানি আপনারা এখানে খুঁটিনাটি জিনিসগুলো পড়তে পারছেন না;
সেটা অত জরুরীও নয়|
আমার মূল কথা হচ্ছে যে আমি একটা প্রতিষ্ঠিত চিকিৎসা-বিষয়ক ওয়েবসাইটে গেলাম,
ওয়েবএমডি (WebMD),
কারণ আমি জানি কিভাবে আবর্জনা ছাঁটাই করতে হয়|
আমার স্ত্রীকেও আমি খুঁজে পেয়েছিলাম অনলাইনেই|
ওঁর সঙ্গে পরিচয়ের আগে,
সন্ধান করে আমি কিছু নিম্নমানের ফলাফল পেয়েছিলাম|
(হাসি)
তাই আমি কিছু উচ্চ মানের তথ্য খুঁজছিলাম|
বিশ্বাসযোগ্যতা একটা বড় কথা --
কোথাকার তথ্যগুলো বিশ্বাসযোগ্য?
আমার শরীর কোথায় শেষ হচ্ছে
আর কোথায় আক্রমণকারী শুরু হচ্ছে?
এবং ক্যান্সার, হচ্ছে একরকমের টিউমার, যা আপনার নিজের শরীরের অংশ থেকেই জন্মায়|
সেটা কী করে হয়?
চিকিত্সার পরিসর
কোথায় শুরু হয় আর কোথায় শেষ হয়?
আমি যা পড়লাম ওয়েবএমডিতে:
"পূর্বাভাস সন্তোষজনক নয়
ক্রমবর্ধমান কিডনি ক্যান্সারের জন্যে|
প্রায় সব রোগীর ক্ষেত্রেই কোনো উপশম নেই|"
আমি এত বেশিদিন ধরে অনলাইন হচ্ছি যে জানি
যদি আমার প্রথমে পাওয়া অনুসন্ধানের ফলাফল পছন্দ না হয়,
আমি আরো বেশি খুঁজতে থাকি|
এবং দেখতে পাই যে, অন্যান্য ওয়েবসাইটেও,
যেগুলো এমনকি গুগলের তৃতীয় পাতার ফলাফলে আসে,
"পরিণতি হতাশাজনক",
"পূর্বাভাস ভয়ংকর|"
আর আমি ভাবছি, "কী আপদ?"
আমার তো একটুও শরীর খারাপ লাগছিল না|
মানে, আমি সন্ধের দিকে একটু ক্লান্ত হয়ে যেতাম ঠিকই,
কিন্তু তখন আমার বয়েস ছিল ৫৬|
ধীরে ধীরে আমার ওজন কমছিল,
কিন্তু আমার জন্যে, সেটাই তো আমাকে ডাক্তারবাবু করতে বলেছিলেন|
সেটা সত্যিই একটা কিছু ছিল|
আর এটা হচ্ছে চতুর্থ পর্যায়ের কিডনি ক্যান্সার এর ছবি
শেষ অবধি যে ওষুধটা খেয়েছিলাম তারপরে|
একদমই ঘটনাচক্রে আমার ফুসফুসে ওই জিনিসটা আসে|
বাঁ পায়ের ফিমার, বাঁ পায়ের উরুর হাড়ে, ঐ যে আরেকটা|
আমার একটা ছিল| শেষ অবধি আমার পা ভেঙ্গেছিল|
আমি অজ্ঞান হয়ে ওটার ওপরে ভর দিয়ে পড়ে গিয়েছিলাম, আর ওটা ভেঙ্গে গিয়েছিল|
মাথার খুলিতেও একটা ছিল,
ষোলকলা পূর্ণ করতে, আমার এই অন্যান্য টিউমার গুলোও ছিল --
এমনকি, যতদিনে চিকিত্সা শুরু হলো,
আমার জিভেও একটা গজিয়েছিল|
কিডনি ক্যান্সার আমার জিভে গজাচ্ছিল|
এবং পড়লাম যে আমার অবশিষ্ট গড় আয়ু
হচ্ছে ২৪ সপ্তাহ|
এটা খুব খারাপ|
আমি কবরে যাবার জন্যে তৈরী হচ্ছিলাম|
আমি ভাবছিলাম, "আমার মায়ের মুখের চেহারা কেমন হবে
আমাকে কবর দেবার দিনে?"
আমাকে আমার মেয়ের সাথে বসতে হলো
আর বলতে হলো, "এই হচ্ছে অবস্থা।"
ওর সাথে ওর ছেলে-বন্ধুও ছিল|
আমি বললাম, "আমি চাই না তোমরা তাড়াহুড়ো করে বিয়ে কর
যাতে বাবা বেঁচে থাকতে থাকতেই করতে পারো|"
এটা খুবই সিরিয়াস|
কারণ আপনারা যদি ভাবেন যে কেন রোগীরা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সাহয্য করতে চাইবে,
তাহলে এইটা ভেবে দেখুন|
আমার ডাক্তারবাবু আমাকে একটা রোগীদের সম্প্রদায়ের সাথে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেন,
Acor.org
একটা আশ্চর্য জিনিস, একটা ক্যান্সার রোগীদের নেটওয়ার্ক|
খুব তাড়াতাড়ি তারা আমাকে বলল যে,
"কিডনি ক্যান্সার খুব বেশি লোকের হয়না|
কোন বিশেষজ্ঞ কেন্দ্রে যান|
এর কোন চিকিত্সা নেই, কিন্তু একটা জিনিস মাঝেসাঝে কাজ করে --
তবে সাধারণত কাজ করেনা --
এটাকে বলে হাই-ডোসেজ ইন্টারলিউকিন|
বেশিরভাগ হাসপাতালেই ওটা পাওয়া যায়না,
সেইজন্যে কেউ জানায়ও না যে ঐরকম কোনো জিনিস আছে|
আর ওদের আপনাকে আগেভাগেই অন্য কিছু দিতে দেবেন না|
আর এখানে, চারজন ডাক্তারবাবু আছেন
যাঁরা আমেরিকার এই অঞ্চলে থাকেন এবং ওই ওষুধটা দেন, এবং তাঁদের ফোন নাম্বার|"
কেমন চমত্কার না?
(হাততালি)
এই হল কথা।
এবারে দেখুন, চার বছর বাদে:
আপনি কোনো ওয়েবসাইট পাবেন না যা রোগীর জন্যে ঐ তথ্যটা দেয়।
সরকার অনুমোদিত, আমেরিকান ক্যান্সার সমিতি,
কিন্তু রোগীরা জানেন তাঁদের যেটা জানা দরকার|
এটা হলো রোগীদের নেটওয়ার্কের ক্ষমতা|
এই আশ্চর্য জিনিসটা --
আবার আমি বলছি, আমার শরীরের শেষ কোথায়?
আমার ক্যান্সারের ডাক্তারবাবুর সাথে আমি রোজ অনেক আলোচনা করি
কারণ আমি চাই আমার কথাগুলোকে তথ্যের দিক দিয়ে যথাসম্ভব নির্ভুল রাখতে|
তিনি বললেন, "আপনি জানেন, আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা
খুব ভালো ধরতে পারে আক্রমণকারীদের --
যে জীবাণুগুলো বাইরে থেকে আসে --
কিন্তু আপনার নিজের শরীরের কোন অংশ যদি বাড়তে থাকে,
সেটা একদম অন্য ব্যাপার|"
প্রকৃতপক্ষে আমি একটা মানসিক ব্যায়ামের মধ্যে দিয়ে গিয়েছিলাম,
কারণ আমি একটা রোগীদের সহায়তা গোষ্ঠী গড়ে তুললাম
একটা ওয়েবসাইটে,
এবং আমার এক বন্ধু, আসলে আমার এক আত্মীয়,
বলল, "দেখো ডেভ, এটা কে বানিয়েছে?
তুমি কি নিজেকে এমন ভাবে দেখাবে
যেন মানসিকভাবে নিজেকেই আক্রমণ করছ?"
তখন আমরা ভালো করে ওটা নিয়ে পড়লাম|
আর কী করে সেইসব হলো তার গল্প এই বইটাতেই আছে|
যাইহোক, এইভাবেই সংখ্যাগুলো পাওয়া গেল|
আমি যেরকম, হাসপাতালের ওয়েবসাইট থেকে সংখ্যাগুলো নিয়ে
টিউমারের সাইজগুলো একটা স্প্রেডশীট-এ লিখলাম|
সংখ্যাগুলো নিয়ে মাথা ঘামাতে হবে না|
ঐ যে দেখছেন, ঐটা আমাদের রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা|
আশ্চর্য জিনিস - ঐ হলুদ লাইন দুটো
হচ্ছে যখন আমি দু ডোজ ইন্টারলিউকিন পেলাম
দু মাসের ব্যবধানে।
আর দেখুন কিভাবে টিউমার সাইজগুলো হঠাত করে কমে গেল তার মধ্যে|
অবিশ্বাস্য।
কে জানে, যখন আমরা এর ঠিকঠাক ব্যবহার শিখে যাব তখন হয়তো এর আরো ভালো সদ্ব্যবহার করতে পারব|
মোদ্দা কথা হলো যে বছর দেড়েক বাদে,
আমি সেখানে ছিলাম যখন এই সুন্দরী তরুণী, আমার মেয়ে,
বিয়ে করলো|
আর যখন সে ওই সিঁড়ির ধাপগুলো বেয়ে নিচে নেমে এলো,
এবং ওই মুহূর্তে শুধু ও আর আমি,
আমি খুব খুশি যে ওকে ওর মাকে বলতে হয়নি,
"ইশ, আজকে যদি বাবা এখানে থাকতেন!"
এবং এটাই আমরা করি
যখন আমরা স্বাস্থ্য পরিষেবাকে উন্নত করতে পারি|
এবারে আমি সংক্ষেপে আরো দুয়েকজন রোগীর কথা বলতে চাই
যাঁরা স্বাস্থ্য পরিষেবা উন্নত করার জন্যে যথসাধ্য করছেন|
ইনি রেজিনা হলিডে,
ওয়াশিংটন ডিসি'র একজন চিত্রকর,
যাঁর স্বামী কিডনি ক্যান্সারে মারা যান আমার রোগ ধরা পড়ার বছরখানেক বাদে|
এখানে তিনি দেয়ালে একটি ছবি আঁকছেন
হাসপাতালে ওঁর স্বামীর ভয়ংকর শেষ কয়'সপ্তাহের ছবি|
একটি জিনিস যা তিনি লক্ষ্য করেছেন
সেটা হলো যে ওঁর স্বামীর মেডিকেল রেকর্ডগুলো
এই কাগজের ফাইলে
ভীষণ এলোমেলো|
এবং তিনি ভাবলেন যে ,"দেখুন, যদি পুষ্টির তথ্যের একটা লেবেল থাকে
কোনো খাবারের বাক্সের গায়ে,
কেন সেইরকম সহজ কিছু থাকতে পারে না
ডিউটিতে আসা প্রত্যেক নতুন সিস্টারকে বলার জন্যে,
প্রত্যেক নতুন ডাক্তারকে,
জানাতে আমার স্বামীর বর্তমান অবস্থার কথা?"
তাই তিনি দেয়ালে এইরকম ছবি আঁকলেন চিকিত্সা সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে
তাতে পুষ্টির লেবেলের মতন কিছু দিয়ে,
ঐরকম কিছু,
ওঁর স্বামীর ছবিতে|
অতএব, গত বছরে, তিনি এই ছবিটা আঁকলেন|
উনি আমার মতোই স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে পড়াশোনা করেছেন|
তিনি বুঝতে পারলেন যে এইরকম অনেক লোক আছেন
যারা রোগীর বক্তব্য নিয়ে বই লিখেছেন
যে সব কথা মেডিকেল সম্মেলনে শোনা যায় না|
রোগীরা এইরকম অব্যবহৃত সম্পদ|
আমার ভূমিকায় যেমন বলা হলো,
লোকে জানেন আমি সবসময়েই বলে থাকি যে রোগীদের নিজেদের সম্পর্কিত সব তথ্য তাদের নিজেদের নাগালের মধ্যে থাকা উচিত|
এবং সত্যি সত্যি আমি একটা সম্মেলনে বলেছিলাম বছর দুয়েক আগে,
"আমার সব তথ্য আমাকে দিন,
কারণ আপনাদের ওপরে ভরসা করা যায় না যে আপনারা ওগুলো যথাযথ রাখতে পারবেন।"
ওঁর কাছে আমাদের যত্তসব তথ্য আবদ্ধ আছে --
এটা একটা pun (যমক) --
যা বাঁধন ভেঙ্গে বেরিয়ে আসছে, মুক্ত হয়ে পড়ছে --
বাঁধভাঙা সেই জল হলো আমাদের তথ্যের প্রতীক|
আর আসলে, আমি একটা নতুন জিনিস করে দেখাতে চাই আপনাদের জন্যে|
টুইটারে একজন লোক আছেন যাঁকে আমি জানি,
বস্টনের কাছেই থাকেন, একজন স্বাস্থ্য-তথ্য-প্রযুক্তিকর্মী,
যিনি এই ই-পেশেন্ট র্যাপ লিখেছিলেন|
সেটা অনেকটা এইরকম|
♫ আমার যত্তসব তথ্য আমায় দিন ♫
♫ আমি ডেভের মতনই ই-পেশেন্ট হতে চাই ♫
♫ আমার যত্তসব তথ্য আমায় দিন, কারণ নিজেকে তো বাঁচতে হবে ♫
থাক অনেক হয়েছে - আর গাইছি না|
(করতালি)
অনেক ধন্যবাদ। অনেকটা সময় গেল ঐতে|
(হাসি)
এটা ভেবে দেখুন,
কেন আইফোন আর আইপ্যাড এসবের
অনেক তাড়াতাড়ি অগ্রগতি হয়,
যদি তুলনা করে দেখি, আপনার নাগালের মধ্যে যেসব চিকিত্সার যন্ত্রপাতি আছে
আপনার পরিবারের যত্ন নেবার জন্য?
এখানে একটা ওয়েবসাইট দেখুন, VisibleBody.com,
যেটা আমি হঠাৎ খুঁজে পেয়েছি|
আমার মনে হল, "জানেন, আমি চিন্তা করছিলাম, আমার শরীরের ওই সোলিয়াস পেশীটা কী জিনিস?"
যেকোনো জিনিস ক্লিক করেই সরাতে পারেন|
আর আমি দেখলাম, "ঐ তো, ঐটা কিডনি আর ঐটা সোলিয়াস পেশী|"
এবং ওটা ত্রিমাত্রিক ভাবে ঘোরাচ্ছিলাম
আর বলছিলাম, "এইবারে আমি বুঝলাম|"
আর তখনি আমার খেয়াল হলো যে গুগল আর্থের কথা মনে পড়ছে,
যেখানে যে কোনো ঠিকানায় উড়ে যাওয়া যায়|
আর আমি ভাবলাম, "এটা নিয়ে কেন
আমার ডিজিটাল স্ক্যান তথ্যের সাথে লাগিয়ে
নিজের শরীরের গুগল আর্থ বানাই না?"
এই বছরে গুগল নতুন কি প্রকাশ করেছে?
এখন গুগল বডি ব্রাউজার বেরিয়েছে|
কিন্তু দেখুন, এটা কেবল দেয় সাধারণ তথ্য|
এটা আমার নিজস্ব তথ্য নয়|
কিন্তু যদি ওই বাঁধের পেছন থেকে তথ্য বের করে আনা যেত
যাতে সফটওয়্যার আবিষ্কারকরা সেগুলোর উপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারতেন,
যেভাবে সফ্টওয়্যার আবিষ্কারকরা কাজ করতে ভালবাসেন,
কে জানে তাহলে আমরা কি পেয়ে যেতে পারি|
একটা শেষ গল্প: ইনি কেলি ইয়াং,
একজন বাতের রোগী
থাকেন ফ্লোরিডাতে|
এটা একেবারে সাম্প্রতিক ঘটনা
গত কয়েক সপ্তাহে যা ঘটছে।
বাতের রোগী, যেমন তাঁরা বলেন নিজেদের --
ওঁর ব্লগের নাম RA Warrior (বাত যোদ্ধা) --
ওদের একটা বড় সমস্যা
কারণ তাঁদের ৪০ শতাংশের ক্ষেত্রে রোগের কোনো প্রকাশ্য লক্ষণ দেখা যায় না|
এবং সেইজন্যে এটা বোঝা খুবই কঠিন যে রোগটার কেমন অবস্থা চলছে|
আর কিছু ডাক্তারবাবু ভাবেন, "হ্যাঁ ঠিকই বলেছেন, আপনি সত্যিই খুব ব্যথা পাচ্ছেন|"
উনি অনলাইন অনুসন্ধান করে খুঁজে বার করলেন যে,
হাড়ের পারমাণবিক স্ক্যান
যা সাধারনত ক্যান্সারে ব্যবহৃত হয়,
প্রদাহ হচ্ছে কিনা দেখাতে পারে|
এবং তিনি দেখলেন
যে যদি কোনো প্রদাহ না থাকে
তাহলে স্ক্যানটা সমানভাবে ধূসর থাকে|
তাই তিনি ওটা করলেন|
আর রেডিওলজিস্ট রিপোর্ট দিলেন "কোনো ক্যান্সার নেই|"
কিন্তু সেটা তো তিনি জানতে চাইছিলেন না|
তাই তিনি আরেকবার ভালো করে দেখতে বললেন,
ওঁর ডাক্তারবাবু সাংঘাতিক রেগে গেলেন|
তিনি সিডিটা বার করলেন আবার|
ডাক্তারবাবু বললেন, "আমার কথা যদি না মানেন,
তাহলে চলে যান|"
তাই তিনি স্ক্যান ছবির সিডিটা নিয়ে দেখতে বসলেন,
আর ওই হট-স্পটগুলো সব লক্ষ্য করুন|
আর এখন তিনি ব্লগে সক্রিয়ভাবে জড়িত
আরো ভালো স্বাস্থ্য পরিষেবা পাবার জন্যে সহায়তা খুঁজছেন|
দেখুন, ইনি একজন ক্ষমতাপ্রাপ্ত রোগী -- কোনো ডাক্তারি প্রশিক্ষণ নেই|
আমি, আপনি,
হচ্ছি স্বাস্থ্য পরিষেবার সবচেয়ে অব্যবহৃত সম্পদ|
উনি যা করতে পেরেছিলেন
তার কারণ ওঁর কাছে মূল তথ্য সব ছিল|
কত বড় ঘটনা ছিল এটা?
TED২০০৯-এ
টিম বার্নার্স-লী স্বয়ং, ওয়েব এর আবিষ্কর্তা, একটা বক্তৃতা দিয়েছিলেন
যেখানে তিনি বলেন যে পরবর্তী বড় জিনিস হতে যাচ্ছে
আপনার ব্রাউজার গিয়ে খুঁজে আনবে না
তথ্য সম্পর্কে অন্যান্য লোকেদের লেখাজোখা,
বরং মূল তথ্য|
এবং ওঁর বক্তব্যের শেষে সবাইকে মন্ত্র বলার মতন করে বলিয়েছিলেন,
"মূল তথ্য এক্ষুণি|
"মূল তথ্য এক্ষুণি|"
আর আমি আপনাদের বলছি,
এই কটা শব্দ, দয়া করে বলুন, স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নতির জন্যে:
রোগীদের সাহায্য করতে দিন|
রোগীদের সাহায্য করতে দিন|
রোগীদের সাহায্য করতে দিন|
রোগীদের সাহায্য করতে দিন|
ধন্যবাদ|
(করতালি)
পৃথিবীর যত রোগী
যারা দেখছেন এই সম্প্রচার (ওয়েবকাস্ট),
ভগবান কল্যাণ করুন, প্রত্যেকের - রোগীদের সাহায্য করতে দিন|
অনুষ্ঠান পরিচালক: আপনারও ভালো হোক| আপনাকে অজস্র ধন্যবাদ|