WEBVTT 00:00:00.946 --> 00:00:03.340 মানব মস্তিষ্কের বিশেষ অভিনবত্ব কোথায়? 00:00:03.340 --> 00:00:05.552 আমরা অন্যান্য প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা করে থাকি 00:00:05.552 --> 00:00:07.673 অথচ তারা আমাদেরকে নিয়ে গবেষণা করতে অক্ষম, কিভাবে এরকম হল? 00:00:07.673 --> 00:00:09.471 মানব মস্তিষ্কে এমন কী আছে যা অন্যদের নেই? 00:00:09.471 --> 00:00:11.204 এমন কী করতে পারে যা অন্য প্রানীদের মস্তিষ্ক পারে না? 00:00:11.204 --> 00:00:14.052 দশ বছর আগে আমি যখন এই প্রশ্ন গুলোর ব্যাপারে আগ্রহী হই, 00:00:14.052 --> 00:00:16.994 সে সময়ে বিজ্ঞানীরা মনে করতেন যে ভিন্ন ভিন্ন মস্তিষ্ক কি ভাবে গঠিত তা তাঁরা জানেন। 00:00:16.994 --> 00:00:18.723 পর্যাপ্ত তথ্য প্রমাণ হাতে না থাকার পরেও 00:00:18.723 --> 00:00:20.910 অনেক বিজ্ঞানীরা মনে করতেন যে, মানুষ সহ 00:00:20.910 --> 00:00:22.635 সকল স্তন্যপায়ী প্রানীর মস্তিষ্ক 00:00:22.635 --> 00:00:23.935 একই রকম ভাবে গঠিত, 00:00:23.935 --> 00:00:25.437 কোনো মস্তিষ্কের ভিতরে মোট নিউরনের সংখ্যা 00:00:25.437 --> 00:00:27.668 সব সময়েই সেই মস্তিষ্কের আকারের সমানুপাতিক। 00:00:27.668 --> 00:00:29.744 তার মানে হল, সমান আকারের দুটি মস্তিষ্কে, 00:00:29.744 --> 00:00:33.292 যেমন, সমীহ জাগানো ৪০০ গ্রাম ওজনের এই দুটি 00:00:33.292 --> 00:00:35.844 মস্তিষ্কে সমান সংখ্যক নিউরন থাকবে। 00:00:35.844 --> 00:00:37.640 এখন, নিউরন যদি মস্তিষ্কের তথ্য প্রক্রিয়াজাতকরন 00:00:37.640 --> 00:00:40.543 কর্মকাণ্ড সম্পাদনের একক হয়, 00:00:40.543 --> 00:00:42.135 তাহলে এই দুটি মস্তিষ্কের অধিকারী দুজনের একই রকম 00:00:42.135 --> 00:00:44.864 বুদ্ধিবৃত্তিক যোগ্যতা থাকার কথা। 00:00:44.864 --> 00:00:47.213 কিন্তু আসলে, এদের একজন একটি শিম্পাঞ্জী 00:00:47.213 --> 00:00:49.850 আর অন্যজন একটি গরু মাত্র। 00:00:49.850 --> 00:00:52.212 হতেও পারে যে, গরু সম্প্রদায়ের একটি সু-উন্নত 00:00:52.212 --> 00:00:54.465 আভ্যন্তরীণ মনোজগৎ রয়েছে এবং তাঁরা এতটাই বুদ্ধিমান 00:00:54.465 --> 00:00:58.268 যে তাঁরা ইচ্ছা করেই আমাদেরকে তা বুঝতে দেন না, 00:00:58.268 --> 00:00:59.713 কিন্তু আমরা তাঁদের মাংস খাই। 00:00:59.713 --> 00:01:01.412 আমি মনে করি, বেশীরভাগ মানুষই এটা মানবেন 00:01:01.412 --> 00:01:03.413 যে, শিম্পাঞ্জীরা গরুর চেয়ে অনেক বেশী জটিল, 00:01:03.413 --> 00:01:06.469 বিশদ ও সহজে পরিবর্তন যোগ্য আচরণ করতে সক্ষম। 00:01:06.469 --> 00:01:08.401 তাই, প্রাথমিক ভাবে এটি এই ইঙ্গিত দেয় যে, 00:01:08.401 --> 00:01:10.434 "সব মস্তিষ্ক একই ভাবে গঠিত" - কথাটি 00:01:10.434 --> 00:01:12.105 পুরোপুরি সঠিক নয়। NOTE Paragraph 00:01:12.105 --> 00:01:13.451 তারপরেও আগানো যাক। 00:01:13.451 --> 00:01:15.229 সব মস্তিষ্ক যদি একই ভাবে গঠিত হয় 00:01:15.229 --> 00:01:18.141 এবং আমরা যদি ভিন্ন ভিন্ন আকারের মস্তিষ্ক বিশিষ্ট প্রাণীদের মধ্য তুলনা করি, 00:01:18.141 --> 00:01:20.323 বড় আকারের মস্তিষ্কে সব সময় ছোট মস্তিষ্কের 00:01:20.323 --> 00:01:22.646 চেয়ে বেশি নিউরন থাকবে, এবং যার 00:01:22.646 --> 00:01:25.668 মস্তিষ্ক যত বড়, সে তত বেশি বুদ্ধিমান হবে। 00:01:25.668 --> 00:01:27.804 অর্থাৎ কিনা, প্রাণী জগতে যার মস্তিষ্ক সবচেয়ে বড়, 00:01:27.804 --> 00:01:30.093 সেই সবচেয়ে বেশি বুদ্ধিমান। 00:01:30.093 --> 00:01:31.674 এবং, এখানেই যত বিপত্তি - 00:01:31.674 --> 00:01:34.431 আকারের দিক থেকে আমাদের মস্তিষ্ক প্রাণীকুলে সবচেয়ে বড় নয়! 00:01:34.431 --> 00:01:35.986 এ তো দেখছি ভালো ফ্যাসাদ! 00:01:35.986 --> 00:01:38.721 আমাদের মস্তিষ্কের ওজন ১.২ থেকে ১.৫ কিলোগ্রামের মধ্যে, 00:01:38.721 --> 00:01:42.038 এদিকে হাতীদের মস্তিষ্কের ওজন চার থেকে পাঁচ কিলোগ্রামের মধ্যে, 00:01:42.038 --> 00:01:44.623 আর একটি তিমির মস্তিষ্কের ওজন নয় কিলোগ্রাম পর্যন্ত হতে পারে, 00:01:44.623 --> 00:01:49.361 আর তাই বিজ্ঞানীরা এরকম একটি আপ্ত-বাক্যের শরণ নিয়ে বলতেন - 00:01:49.361 --> 00:01:51.518 "অবশ্যই আমাদের মস্তিষ্কে অসাধারণ কিছু আছে" - 00:01:51.518 --> 00:01:54.380 এতে যদি আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক সক্ষমতার কোনো ব্যাখ্যা মেলে। 00:01:54.380 --> 00:01:57.326 বাস্তবিক পক্ষেই এটি অনন্য সাধারণ কিছু হবে, 00:01:57.326 --> 00:01:59.303 গতানুগতিক নিয়মের একেবারেই ব্যতিক্রম! 00:01:59.303 --> 00:02:02.529 তাদেরটা আকারে বড় হতে পারে, কিন্তু আমাদেরটা বেশি উন্নত, 00:02:02.529 --> 00:02:04.404 এবং এটা আরও বেশি উন্নত হতে পারত, যেমন, 00:02:04.404 --> 00:02:06.515 যত বড় হওয়ার কথা, তার চেয়ে এটি বেশ বড়, 00:02:06.515 --> 00:02:09.213 আমাদের সেরেব্রাল কর্টেক্সটিও এই মাপের হওয়ার কথা না, 00:02:09.213 --> 00:02:10.752 যদি আমাদের দেহের আকার বিবেচনা করি। 00:02:10.752 --> 00:02:12.404 ফলে আমরা খানিকটা বাড়তি কর্টেক্স পাচ্ছি যা দিয়ে 00:02:12.404 --> 00:02:15.364 শরীর পরিচালনা করার পাশাপাশি বাড়তি কিছু মজাদার কাজও করা সম্ভব। 00:02:15.364 --> 00:02:17.043 এটা এজন্যে যে, মস্তিষ্কের আকার 00:02:17.043 --> 00:02:19.376 সাধারণত দেহের আকারের সাথে সঙ্গতি রেখে চলে। 00:02:19.376 --> 00:02:21.693 অর্থাৎ, প্রধানত যে কারণে আমরা বলছি যে - 00:02:21.693 --> 00:02:23.780 আমাদের মস্তিষ্ক এত বড় হওয়ার কথা না - 00:02:23.780 --> 00:02:25.552 সেই কারণটি আমরা আসলে পেয়েছি আমাদের সাথে 00:02:25.552 --> 00:02:27.238 অতিকায় বানরদের তুলনার মাধ্যমে। 00:02:27.238 --> 00:02:29.832 গরিলারা আমাদের চেয়ে আকারে দুই থেকে তিন গুন বড় হতে পারে, 00:02:29.832 --> 00:02:32.253 অতএব তাদের মস্তিষ্কের আকারও আমাদেরটার চেয়ে বড় হবার কথা, 00:02:32.253 --> 00:02:34.198 কিন্তু বাস্তবে এটি সম্পুর্ন উল্টো! 00:02:34.198 --> 00:02:37.133 গরিলার চেয়ে আমাদের মস্তিষ্ক তিন গুন বড়। NOTE Paragraph 00:02:37.133 --> 00:02:39.253 মানব মস্তিষ্ককে আবারও অসাধারণ মনে হবে যদি 00:02:39.253 --> 00:02:41.500 এর এনার্জি ব্যবহারের পরিমাণ বিবেচনা করা হয়। 00:02:41.500 --> 00:02:44.249 যদিও ওজনের দিক দিয়ে এটি আমাদের দেহের মাত্র ২ শতাংশ, 00:02:44.249 --> 00:02:47.692 কিন্তু শুধুমাত্র মস্তিষ্কের পেছনেই আমাদের শরীরের 00:02:47.692 --> 00:02:50.155 দৈনিক এনার্জি চাহিদার ২৫ শতাংশ ব্যয় হয়। 00:02:50.155 --> 00:02:53.508 তার মানে, মোট ২,০০০ ক্যালরির মধ্য থেকে ৫০০ ক্যালরিই ব্যয় হয় 00:02:53.508 --> 00:02:55.913 শুধুমাত্র মস্তিষ্ককে সচল রাখতে। NOTE Paragraph 00:02:55.913 --> 00:02:58.841 তো, যত বড় হবার কথা তার চেয়ে মানব মস্তিষ্ক ঢের বড়, 00:02:58.841 --> 00:03:00.867 যা উচিত ছিল তার চেয়ে অনেক বেশি এনার্জি ব্যবহার করে, 00:03:00.867 --> 00:03:02.325 অতএব এটি অসাধারণ। 00:03:02.325 --> 00:03:04.896 আর গল্পের এখান থেকেই আমার অস্বস্তির সূত্রপাত। 00:03:04.896 --> 00:03:06.567 জীববিদ্যায় আমরা সে সব নিয়ম খোঁজার চেস্টা করি 00:03:06.567 --> 00:03:09.413 যা সকল প্রাণী এবং মোটা দাগে সব জীবের ক্ষেত্রে প্রজোয্য, 00:03:09.413 --> 00:03:11.263 তাহলে বিবর্তনের এই নিয়ম গুলো কেন 00:03:11.263 --> 00:03:14.905 অন্যদের বেলায় খাটলেও আমাদের ক্ষেত্রে খাটেনা? 00:03:14.905 --> 00:03:17.102 হয়ত এই মূল ধ্যান ধারনাটিতেই কিছু গলদ আছে - 00:03:17.102 --> 00:03:18.973 যে, সকল মস্তিষ্ক একই ভাবে গঠিত। 00:03:18.973 --> 00:03:20.572 হতেও পারে যে, একই আকারের দুটি মস্তিষ্ক 00:03:20.572 --> 00:03:23.163 সম্পুর্ন ভিন্ন ভিন্ন সংখ্যক নিউরন দিয়ে গঠিত। 00:03:23.163 --> 00:03:24.770 হয়ত একটি সুবিশাল মস্তিষ্কের 00:03:24.770 --> 00:03:26.610 মোট নিউরনের সংখ্যা অন্য একটি 00:03:26.610 --> 00:03:28.831 মাঝারি আকারের মস্তিষ্কের চেয়েও কম। 00:03:28.831 --> 00:03:31.840 হয়ত প্রানীকুলে মানব মস্তিষ্কেই সবচেয়ে বেশি নিউরন থাকে, 00:03:31.840 --> 00:03:34.413 তা সে যে আয়তনেরই হোক না কেন, 00:03:34.413 --> 00:03:36.507 বিশেষ করে, সেরেব্রাল কর্টেক্স এ। 00:03:36.507 --> 00:03:38.059 তাই আমার কাছে এখন এটাই 00:03:38.059 --> 00:03:39.788 সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে - 00:03:39.788 --> 00:03:42.188 মানব মস্তিষ্কে কি পরিমাণ নিউরন আছে? 00:03:42.188 --> 00:03:44.710 অন্যান্য প্রানীদের তুলনায় সংখ্যাটা কি রকম? NOTE Paragraph 00:03:44.710 --> 00:03:47.133 এখন, আপনারা হয়ত শুনেছেন বা পড়েছেন যে, 00:03:47.133 --> 00:03:49.244 আমাদের মগজে ১০০ বিলিয়ন নিউরন রয়েছে, 00:03:49.244 --> 00:03:51.330 তাই দশ বছর আগে সহকর্মীদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম 00:03:51.330 --> 00:03:53.169 কেউ জানেন কি এই সংখ্যার হিসাবটা কিভাবে এলো? 00:03:53.169 --> 00:03:54.627 কিন্তু কেউ ই জানতেন না। 00:03:54.627 --> 00:03:56.080 আমি নিজেও অনেক বই-পত্র ঘেঁটে চলেছি, 00:03:56.080 --> 00:03:58.138 এই সংখ্যাটির আদি সূত্রের সন্ধানে, 00:03:58.138 --> 00:03:59.921 কিন্তু কখনও পাইনি। 00:03:59.921 --> 00:04:02.660 মনে হচ্ছে আসলে কেউ কখনও গণনাই করেন নি যে, 00:04:02.660 --> 00:04:04.194 কতগুলি নিউরন আছে মানব মস্তিষ্কে, 00:04:04.194 --> 00:04:06.693 কিংবা অন্য প্রানীদের মস্তিষ্কে? NOTE Paragraph 00:04:06.693 --> 00:04:10.228 তাই মস্তিষ্কে কোষের সংখ্যা গণনা করার জন্য আমার একটি নিজস্ব পদ্ধতি বের করেছি, 00:04:10.228 --> 00:04:12.336 আর এটা মূলত তৈরি হয়েছে 00:04:12.336 --> 00:04:15.581 মগজকে তরলে দ্রবীভূত করার উপরে ভিত্তি করে। 00:04:15.581 --> 00:04:17.618 এটা এভাবে কাজ করে - 00:04:17.618 --> 00:04:20.745 একটি মস্তিষ্ক বা তার কিছুটা অংশ নিন, 00:04:20.745 --> 00:04:22.489 এবার সেটাকে ডিটারজেন্ট এ দ্রবীভূত করুন, 00:04:22.489 --> 00:04:23.998 এর ফলে কোষ প্রাচীরগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে 00:04:23.998 --> 00:04:26.434 কিন্তু নিউক্লিয়াস গুলো ঠিকই আস্ত থেকে যাবে 00:04:26.434 --> 00:04:29.574 ফলে আপনি একটি মুক্ত নিউক্লিয়াস এর ঘন দ্রবন পাবেন 00:04:29.574 --> 00:04:31.355 ঠিক এরকম দেখতে, 00:04:31.355 --> 00:04:32.628 যেন একটি পরিষ্কার স্যুপ। 00:04:32.628 --> 00:04:34.519 এই স্যুপের ভিতরে সেই সব নিউক্লিয়াস আছে 00:04:34.519 --> 00:04:36.573 যে গুলো একদা একটি ইঁদুরের মস্তিষ্কে ছিল। 00:04:36.573 --> 00:04:39.603 এখন, মজার ব্যাপার হল, যেহেতু এটি স্যুপে পরিণত হয়েছে, 00:04:39.603 --> 00:04:42.501 আপনি এটাকে ঝাঁকিয়ে নিউক্লিয়াসগুলোকে 00:04:42.501 --> 00:04:44.472 এই তরলের মাঝে সুষমভাবে ছড়িয়ে দিতে পারবেন, 00:04:44.472 --> 00:04:46.453 এর ফলে এখন মাইক্রোস্কোপ ব্যবহার করে 00:04:46.453 --> 00:04:50.536 এই সুষম মিশ্রণ থেকে কেবল মাত্র চার পাঁচটি নমুনা পর্যবেক্ষণ করলেই 00:04:50.536 --> 00:04:53.072 আপনি নিউক্লিয়াসগুলোকে গুনতে পারবেন, আর বলতে পারবেন 00:04:53.072 --> 00:04:54.751 ওই মগজটিতে কতগুলি কোষ ছিল। 00:04:54.751 --> 00:04:56.376 এটি সহজ, এটি সোজা-সাপ্টা 00:04:56.376 --> 00:04:57.810 এবং সত্যিই খুব কম সময় নেয়। 00:04:57.810 --> 00:04:59.807 তো এই পদ্ধতি প্রয়োগ করে আমরা নিউরন গুনেছি, 00:04:59.807 --> 00:05:02.118 এ পর্যন্ত কয়েক ডজন বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীর, 00:05:02.118 --> 00:05:03.807 এবং আমরা জেনেছি 00:05:03.807 --> 00:05:06.389 যে, সকল মস্তিষ্ক একইভাবে গঠিত নয়! 00:05:06.389 --> 00:05:08.576 ইঁদুর গোত্র এবং বানর গোত্রের কথা ভাবি, 00:05:08.576 --> 00:05:10.860 ইঁদুরদের বেলায়, বড় আয়তনের মাথার নিউরনগুলিও 00:05:10.860 --> 00:05:12.546 গড় আয়তনে বড় হয়, 00:05:12.546 --> 00:05:15.145 ফলে বেশ দ্রুত হারে তাদের মস্তিষ্ক স্ফীত হয়ে 00:05:15.145 --> 00:05:18.310 আয়তনে বড় হয় কিন্তু সেই গতিতে নিউরনের সংখ্যা বাড়ে না। 00:05:18.310 --> 00:05:20.013 কিন্তু বানর গোত্রের মস্তিষ্কে নিউরন সংখ্যায় বাড়ে, 00:05:20.013 --> 00:05:22.472 এক একটি নিউরনের গড় আয়তন তেমন একটা বাড়ে না, 00:05:22.472 --> 00:05:23.997 এটা খুবই সাশ্রয়ী পদ্ধতি - 00:05:23.997 --> 00:05:25.650 মস্তিষ্কে নিউরনের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য। 00:05:25.650 --> 00:05:27.414 ফলশ্রুতিতে একটি বানরের মগজে 00:05:27.414 --> 00:05:30.581 সর্বদা সম আয়তনের একটি ইঁদুরের মগজের চেয়ে বেশী নিউরন থাকবে, 00:05:30.581 --> 00:05:32.064 এবং মস্তিষ্কের আয়তন যত বড় হবে, 00:05:32.064 --> 00:05:34.278 এই পার্থক্যও তত বেশী হবে। 00:05:34.278 --> 00:05:36.381 বেশ, তাহলে আমাদের মস্তিষ্কের ব্যাপারটা কি? 00:05:36.381 --> 00:05:38.065 আমরা দেখেছি, আমাদের আছে, গড়ে 00:05:38.065 --> 00:05:39.850 ৮৬ বিলিয়ন নিউরন, 00:05:39.850 --> 00:05:42.849 এদের ১৬ বিলিয়ন আছে সেরেব্রাল কর্টেক্সে, 00:05:42.849 --> 00:05:44.930 আর আপনি ধরে নিতে পারেন যে, সেরেব্রাল কর্টেক্স 00:05:44.930 --> 00:05:48.024 বিশেষ কিছু কর্মকাণ্ডের হোতা, যেমন 00:05:48.024 --> 00:05:51.161 সচেতনতা এবং যুক্তিসম্মত ও বিমূর্ত যুক্তি চর্চা, 00:05:51.161 --> 00:05:54.145 এবং এই ১৬ বিলিয়ন হচ্ছে নিউরনের সর্বোচ্চ সংখ্যা 00:05:54.145 --> 00:05:56.766 যা কোনও কর্টেক্স ধারণ করতে পারে, 00:05:56.766 --> 00:05:58.484 আমি মনে করি এটাই সহজতমভাবে ব্যাখ্যা করে 00:05:58.484 --> 00:06:01.626 আমাদের এই নজরকাড়া বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতাকে। 00:06:01.626 --> 00:06:04.847 কিন্তু একই সাথে এই ৮৬ বিলিয়ন নিউরন থাকাটাও বিশেষ তাৎপর্য বহন করে। 00:06:04.847 --> 00:06:06.376 যেহেতু দেখা যাচ্ছে যে মস্তিষ্কের আয়তন 00:06:06.376 --> 00:06:08.728 এবং নিউরনের সংখ্যার মধ্যেকার সম্পর্কটাকে 00:06:08.728 --> 00:06:10.355 গানিতিকভাবে বর্ণনা করা সম্ভব, 00:06:10.355 --> 00:06:12.573 আমরা মানব মস্তিষ্ক নিয়ে হিসাব কষে বলতে পারি 00:06:12.573 --> 00:06:15.247 ইঁদুর গোত্রের জন্য এমন একটি মস্তিষ্কের আকার কেমন হবে। 00:06:15.247 --> 00:06:18.821 হুম, একটি ইঁদুর গোত্রের মগজে ৮৬ বিলিয়ন নিউরন থাকতে হলে 00:06:18.821 --> 00:06:21.942 এটির ওজন হবে ৩৬ কিলোগ্রাম! 00:06:21.942 --> 00:06:23.575 এটি সম্ভব নয়। 00:06:23.575 --> 00:06:25.481 এমন বিশাল ওজনের একটি মস্তিষ্ক বিধ্বস্ত হয়ে যাবে 00:06:25.481 --> 00:06:26.665 তার নিজের ওজনের চাপে, 00:06:26.665 --> 00:06:28.252 এবং এই অসম্ভব মগজটি ধারণ করতে 00:06:28.252 --> 00:06:32.023 ৮৯ টন ওজনের একটি দেহ লাগবে। 00:06:32.023 --> 00:06:34.157 এটি দেখতে আদৌ আমাদের মত মনে হচ্ছে না। NOTE Paragraph 00:06:34.157 --> 00:06:36.710 ফলে ইতিমধ্যেই আমরা একটা গুরুত্বপূর্ণ উপসংহারে পৌঁছেছি, 00:06:36.710 --> 00:06:39.357 আর তা হল - আমরা ইঁদুর গোত্রীয় নই। 00:06:39.357 --> 00:06:42.625 মানব মস্তিষ্ক একটি বড় আয়তনের ইঁদুর মস্তিষ্ক নয়। 00:06:42.625 --> 00:06:45.253 দেখতে পাচ্ছি, ইদুরের তুলনায় আমরা বেশ অসাধারণ, হ্যাঁ, 00:06:45.253 --> 00:06:47.473 তবে তুলনাটা খুব একটা যথাযথ নয়, 00:06:47.473 --> 00:06:49.562 যখন আমরা জানি যে আমরা ইঁদুর গোত্রীয় নই। 00:06:49.562 --> 00:06:50.952 আমরা প্রাইমেট বর্গের, 00:06:50.952 --> 00:06:53.726 তাই কেবল অন্য প্রাইমেটদের সাথে তুলনা করলেই সেটা যথাযথ হবে। 00:06:53.726 --> 00:06:54.953 এবং হিসাব করলে, 00:06:54.953 --> 00:06:57.739 দেখবেন যে, প্রাইমেট বর্গের কোনো প্রা্ণীর 00:06:57.739 --> 00:06:59.669 ৮৬ বিলিয়ন নিউরন থাকতে হলে 00:06:59.669 --> 00:07:02.672 তার মগজের ওজন হবে প্রায় ১.২ কিলোগ্রাম, 00:07:02.672 --> 00:07:04.561 এটা মনে হয় ঠিকই আছে, 00:07:04.561 --> 00:07:06.533 ৬৬ কিলোগ্রাম ওজনের একটি দেহে, 00:07:06.533 --> 00:07:09.178 যেটা আমার ক্ষেত্রে পুরোদস্তুর সঠিক, 00:07:09.178 --> 00:07:11.798 এতে করে আমরা পাই খুবই প্রত্যাশিত 00:07:11.798 --> 00:07:14.767 এবং সাংঘাতিক গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্তঃ 00:07:14.767 --> 00:07:16.108 আমি একটি প্রাইমেট! 00:07:16.108 --> 00:07:18.806 এবং আপনারা সবাই প্রাইমেট! NOTE Paragraph 00:07:18.806 --> 00:07:20.706 এবং ডারউইনও তাই ছিলেন। 00:07:20.706 --> 00:07:23.646 আমার ভাবতেই ভালো লাগে যে, ডারউইন হয়তো ব্যাপারটাকে সত্যিই তারিফ করতেন। 00:07:23.646 --> 00:07:25.613 তাঁর মস্তিষ্ক, আমাদেরগুলোর মতই, 00:07:25.613 --> 00:07:29.124 অন্যান্য প্রাইমেটদের মস্তিষ্কের আদলে তৈরি হয়েছিল। NOTE Paragraph 00:07:29.124 --> 00:07:31.426 তাই, মানব মস্তিষ্ক হয়তো একটি চমকপ্রদ জিনিস, হ্যাঁ, 00:07:31.426 --> 00:07:34.207 এটি অসাধারণ, কিন্তু তা নিউরনের সংখ্যার কারণে নয়। 00:07:34.207 --> 00:07:36.062 এটা নেহায়েতই একটি বড় প্রাইমেট মস্তিষ্ক। 00:07:36.062 --> 00:07:39.106 আমি মনে করি এটি একটি বিনীত ও সংযত প্রত্যাশা হবে যে, 00:07:39.106 --> 00:07:42.169 এটি প্রকৃতিতে আমাদের অবস্থানটা মনে করিয়ে দেবে। NOTE Paragraph 00:07:42.169 --> 00:07:44.813 তাহলে এটা এত বেশী শক্তি খায় কেন? 00:07:44.813 --> 00:07:46.260 বেশ, অন্যরা এটা দেখিয়েছেন যে, 00:07:46.260 --> 00:07:47.763 কি পরিমা্ণ শক্তি ব্যবহৃত হয় 00:07:47.763 --> 00:07:49.170 মানব এবং অন্যান্য প্রজাতির প্রাণীর মস্তিষ্কে, 00:07:49.170 --> 00:07:50.822 এবং এখন জেনেছি কি পরিমাণ নিউরন 00:07:50.822 --> 00:07:53.164 নিয়ে এক একটি মস্তিষ্ক গঠিত, হিসাবটা জানি। 00:07:53.164 --> 00:07:55.030 এবং এটাই প্রতীয়মান হয় যে, মানুষ 00:07:55.030 --> 00:07:57.853 ও অন্যান্য মস্তিষ্ক প্রায় একই পরিমাণ শক্তি টানে, 00:07:57.853 --> 00:08:01.274 যা কিনা প্রতি বিলিয়ন নিউরনের জন্য প্রতিদিন ৬ ক্যালরি করে। 00:08:01.274 --> 00:08:03.413 অর্থাৎ মস্তিষ্কের মোট এনার্জি চাহিদার পরিমাণ 00:08:03.413 --> 00:08:05.447 একটি মামুলী সরল রাশি যা কিনা 00:08:05.447 --> 00:08:07.156 তার নিউরনের সংখ্যার উপর নির্ভরশীল, 00:08:07.156 --> 00:08:09.339 এবং দেখা যাচ্ছে যে মানব মস্তিষ্ক ঠিক 00:08:09.339 --> 00:08:13.180 সেই পরিমা্ণ শক্তি ব্যবহার করে যেরকমটি আমরা অনুমান করি। 00:08:13.180 --> 00:08:15.271 তাই কি কারণে মানব মস্তিষ্ক 00:08:15.271 --> 00:08:16.943 এত বেশী শক্তি ব্যবহার করে তা খুবই সোজা - 00:08:16.943 --> 00:08:18.926 এখানে বিশাল সংখ্যক নিউরন আছে। 00:08:18.926 --> 00:08:20.411 এবং যেহেতু আমরা প্রাইমেট বর্গের 00:08:20.411 --> 00:08:22.910 এবং দেহের মাপের তুলনায় নিউরনের সংখ্যা অনেক বেশী 00:08:22.910 --> 00:08:24.432 অন্যান্য বর্গের প্রাণীদের চেয়ে, 00:08:24.432 --> 00:08:27.972 তাই তাদের তুলনায় আমাদের মস্তিষ্কের শক্তির চাহিদাও বিশাল, 00:08:27.972 --> 00:08:30.973 কিন্তু এমনটি হয়েছে শুধুমাত্র আমরা প্রাইমেট বলে, আমরা অসাধারণ বলে নয়। NOTE Paragraph 00:08:30.973 --> 00:08:32.163 তাহলে, শেষ প্রশ্নঃ 00:08:32.163 --> 00:08:35.278 কিভাবে আমাদের নিউরনের সংখ্যা এমন অস্বাভাবিক রকম বেশী হল? 00:08:35.278 --> 00:08:37.178 এবং বিশেষ করে গ্রেট এপস (গরিলা, ইত্যাদি) যখন 00:08:37.178 --> 00:08:38.733 আমাদের চেয়ে আকারে বড় দেহের, 00:08:38.733 --> 00:08:42.498 তাদের কেন আমাদের চেয়ে বেশী নিউরন বিশিষ্ট বড় আকারের মস্তিষ্ক নেই? 00:08:42.498 --> 00:08:44.588 যখন বুঝতে পেরেছিলাম যে এটা কতটা ব্যয় বহুল 00:08:44.588 --> 00:08:46.921 যখন মস্তিষ্কে প্রচুর পরিমা্ণ নিউরন থাকে, তখন বুঝলাম, 00:08:46.921 --> 00:08:48.924 এর হয়ত কোনো সরল ব্যাখ্যা আছে। 00:08:48.924 --> 00:08:50.607 প্রয়োজনীয় শক্তির যোগান দেয়া অসম্ভব 00:08:50.607 --> 00:08:53.557 যদি দেহ এবং নিউরন সংখ্যা দুটোই অনেক বড় হয়। 00:08:53.557 --> 00:08:54.986 তাই অঙ্ক কষলাম। 00:08:54.986 --> 00:08:56.586 হিসাবের একপাশে লিখলাম 00:08:56.586 --> 00:08:58.527 একটি প্রাইমেট প্রতিদিন কি পরিমান এনার্জি পায় 00:08:58.527 --> 00:08:59.877 কাঁচা খাবার খাওয়ার মাধ্যমে, 00:08:59.877 --> 00:09:01.914 আর অন্য পাশে লিখলাম, কি পরিমান এনার্জি 00:09:01.914 --> 00:09:03.678 একটি নির্দিষ্ট আকারের দেহে ব্যবহৃত হয় 00:09:03.678 --> 00:09:07.065 এবং একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক নিউরন বিশিষ্ট মস্তিষ্ক দ্বারা কি পরিমান এনার্জি ব্যবহৃত হয়, 00:09:07.065 --> 00:09:08.554 এবং সেই কম্বিনেশনটি খুঁজলাম 00:09:08.554 --> 00:09:10.965 দেহের আকার এবং নিউরনের সংখ্যার, 00:09:10.965 --> 00:09:12.235 যা একটি প্রাইমেট এর উপযুক্ত 00:09:12.235 --> 00:09:14.783 যদি সে খাবারের পেছনে দিনে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক ঘণ্টা ব্যয় করত। NOTE Paragraph 00:09:14.783 --> 00:09:16.599 এবং আমরা যা পেয়েছি তা হল, 00:09:16.599 --> 00:09:18.311 যেহেতু নিউরনগুলি অনেক বেশী শক্তি টানে, 00:09:18.311 --> 00:09:21.681 তাই দেহের আয়তন এবং দেহস্থ নিউরনের সংখ্যার মাঝে একটি ভারসাম্য রয়েছে। 00:09:21.681 --> 00:09:24.632 তাই যে প্রাইমেটটি প্রতিদিন আট ঘণ্টা ধরে খাবার খায় 00:09:24.632 --> 00:09:27.656 তার মস্তিষ্কে সর্বোচ্চ ৫৩ বিলিয়ন নিউরন থাকা সম্ভব, 00:09:27.656 --> 00:09:29.383 এবং সেক্ষেত্রে তাঁর দেহের ওজন হবে 00:09:29.383 --> 00:09:31.337 অনুর্ধ ২৫ কিলোগ্রাম। 00:09:31.337 --> 00:09:33.038 এর চেয়ে বেশী ওজনের দেহ হলে 00:09:33.038 --> 00:09:34.807 নিউরনের সংখ্যা কমতে হবে। 00:09:34.807 --> 00:09:37.460 অর্থাৎ, হয় দেহের আয়তন বড় হবে 00:09:37.460 --> 00:09:38.955 না হয় নিউরনের সংখ্যা বেশী হবে, 00:09:38.955 --> 00:09:40.320 প্রাইমেটদের মত করে খাবার খেলে 00:09:40.320 --> 00:09:42.556 দুটো একসাথে পাওয়া যাবে না। NOTE Paragraph 00:09:42.556 --> 00:09:44.520 এই শারীরবৃত্তিক সীমাবদ্ধতা কাটানোর একটা উপায় আছে, 00:09:44.520 --> 00:09:47.921 তা হল, খাদ্য খাওয়ার পিছনে প্রতিদিন আরও অধিক সময় ব্যয় করা, 00:09:47.921 --> 00:09:49.284 কিন্তু এতে বিপত্তি দেখা দিতে পারে, 00:09:49.284 --> 00:09:52.003 এবং একটি নির্দিষ্ট সীমার পরে এটি রীতিমত অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। 00:09:52.003 --> 00:09:53.540 উদাহরণস্বরূপ, একটি গরিলা বা ওরাংওটাং এর দেহে 00:09:53.540 --> 00:09:55.463 ৩০ বিলিয়ন নিউরন থাকা সম্ভব, 00:09:55.463 --> 00:09:58.429 খাদ্য খাওয়ার পিছনে দিনে আট ঘণ্টা করে সময় ব্যয় করলে, 00:09:58.429 --> 00:10:01.545 এবং তারা খুব বেশী হলে এ পর্যন্তই যেতে পারে। 00:10:01.545 --> 00:10:03.336 প্রতিদিন ৯ ঘণ্টা ধরে খাওয়াটা 00:10:03.336 --> 00:10:06.607 মনে হচ্ছে প্রাইমেটদের জন্য বাস্তব সম্মত সীমা। NOTE Paragraph 00:10:06.607 --> 00:10:08.398 আমাদের বেলায় ব্যপারটা কি রকম? 00:10:08.398 --> 00:10:09.998 আমাদের আছে ৮৬ বিলিয়ন নিউরন 00:10:09.998 --> 00:10:13.033 আর ৬০ থেকে ৭০ কিলোগ্রাম ওজনের একটি দেহ, 00:10:13.033 --> 00:10:16.594 হিসাব অনুযায়ী আমাদের দরকার ছিল ৯ ঘণ্টা 00:10:16.594 --> 00:10:20.169 ধরে প্রতিদিন খাদ্য খাওয়া, 00:10:20.169 --> 00:10:22.208 যা কিনা একেবারেই অবাস্তব। 00:10:22.208 --> 00:10:24.042 আমরা যদি প্রাইমেটদের মত করে খেতাম 00:10:24.042 --> 00:10:26.295 তাহলে আমরা এরকম হতে পারতাম না। NOTE Paragraph 00:10:26.295 --> 00:10:28.422 তাহলে কিভাবে আমরা এরকম হলাম? 00:10:28.422 --> 00:10:31.157 বেশ, আমাদের মস্তিষ্ক যদি সে পরিমান এনার্জি ব্যয় করে, 00:10:31.157 --> 00:10:32.880 যে পরিমান করা উচিত, এবং আমরা পারিনা 00:10:32.880 --> 00:10:36.554 প্রতিদিনের জেগে থাকা প্রতিটা মুহূর্ত খাবারের পেছনে ব্যয় করতে, 00:10:36.554 --> 00:10:38.465 সেক্ষেত্রে, একমাত্র সত্যিকারের বিকল্প 00:10:38.465 --> 00:10:40.423 হল, কোনো উপায়ে বেশী পরিমান এনার্জি আহরন করা 00:10:40.423 --> 00:10:42.376 একই পরিমান খাবার থেকে। 00:10:42.376 --> 00:10:46.176 এবং মজার ব্যাপার হল, এটা পুরোপুরি মিলে যায় 00:10:46.176 --> 00:10:49.213 যা আমাদের পূর্বপুরুষেরা আবিস্কার করেছিলেন বলে জানি 00:10:49.213 --> 00:10:51.052 দেড় মিলিয়ন বছর আগে, 00:10:51.052 --> 00:10:53.834 যখন তাঁরা রান্না করার পদ্ধতি আবিস্কার করেছিলেন। 00:10:53.834 --> 00:10:55.804 রান্না করা মানেই আগুন ব্যবহার করে 00:10:55.804 --> 00:10:59.604 শরীরে ঢোকানোর আগেই খাবারটাকে অনেকখানি হজম করে নেয়া। 00:10:59.604 --> 00:11:02.210 রান্না করা খাবার অনেক নরম, তাই সহজে চিবানো যায় 00:11:02.210 --> 00:11:04.773 এবং সহজেই মুখের ভিতরে সম্পূর্ণ পিষে ফেলা যায়, 00:11:04.773 --> 00:11:06.925 ফলে খাবারটি পুরোপুরি হজম করা সম্ভব হয় 00:11:06.925 --> 00:11:08.361 এবং দেহের মধ্যে শোষিত হয়। 00:11:08.361 --> 00:11:12.016 যা কিনা অনেক কম সময়ে খাদ্য থেকে অনেক বেশী এনার্জি দেয়। 00:11:12.016 --> 00:11:14.505 অর্থাৎ, রান্না করার ফলে আমরা কিছু বাড়তি সময় হাতে পাই 00:11:14.505 --> 00:11:16.567 যা দিয়ে প্রতিদিন আমরা আকর্ষণীয় কিছু করতে পারি, 00:11:16.567 --> 00:11:18.047 আমাদের নিউরন ব্যবহার করে, 00:11:18.047 --> 00:11:19.952 অন্য কিছু - খাবার নিয়ে চিন্তার বদলে, 00:11:19.952 --> 00:11:21.656 খাবার খোঁজা এবং গলধকরন করার বদলে, 00:11:21.656 --> 00:11:22.881 সারাদিন ধরে। NOTE Paragraph 00:11:22.881 --> 00:11:25.380 তাই রান্না করার ফলে, যা এক সময়ে ছিল 00:11:25.380 --> 00:11:27.733 একটি বিশাল বোঝা, এই বিশাল, 00:11:27.733 --> 00:11:30.766 অত্যাধিক নিউরন সমৃদ্ধ বিপদজনক রকম খরুচে মস্তিষ্কটি 00:11:30.766 --> 00:11:32.802 এখন হয়ে গেছে এক প্রধান সম্পদ, 00:11:32.802 --> 00:11:36.053 এখন আমরা যেমন ব্যাপক সংখ্যক নিউরনের জন্য এনার্জির বন্দোবস্ত করতে সক্ষম, তেমনি পাশাপাশি 00:11:36.056 --> 00:11:38.559 তাদের দিয়ে নানান কৌতূহলোদ্দীপক কাজ করিয়ে নিতে পারি। 00:11:38.559 --> 00:11:40.533 তাই আমার মতে এটাই ব্যাখ্যা করে, কেন মানব মস্তিষ্ক 00:11:40.533 --> 00:11:43.773 বিবর্তনের এক পর্যায়ে এত দ্রুত এতটা বড় হয়ে গেছে, 00:11:43.773 --> 00:11:47.670 যেখানে বাকী সময়টা সে নেহায়েৎ একটি প্রাইমেট মস্তিষ্ক ছিল। 00:11:47.670 --> 00:11:50.444 রান্নার বদৌলতে এহেন বিশাল মস্তিষ্ক থাকার সুবাদে 00:11:50.444 --> 00:11:53.357 আমরা অতিদ্রুত কাঁচা খাবার থেকে পৌঁছে গেছি সংস্কৃতিতে, 00:11:53.357 --> 00:11:55.963 কৃষিকাজে, সভ্যতায়, মুদি খানায়, 00:11:55.963 --> 00:11:57.588 বিদ্যুতে, রেফ্রিজারেটরে। 00:11:57.588 --> 00:11:59.195 এসব কিছুর সহায়তায় আজকাল 00:11:59.195 --> 00:12:01.237 আমরা প্রয়োজনীয় সবটুকু এনার্জি পেয়ে যাই 00:12:01.237 --> 00:12:04.019 যা সারাদিন চলার জন্য যথেষ্ট, মাত্র একবার বসলেই - 00:12:04.019 --> 00:12:06.973 আপনার প্রিয় ফাস্ট ফুড জয়েন্ট এ। 00:12:06.973 --> 00:12:09.410 আর তাই, যা একসময় সমাধান হিসাবে এসেছিল 00:12:09.410 --> 00:12:11.109 তা এখন সমস্যাতে পরিণত হয়েছে, 00:12:11.109 --> 00:12:16.626 এবং এমনই পরিহাস! আমরা সেই কাঁচা খাবারের মাঝেই সমাধান খুঁজেছি। NOTE Paragraph 00:12:16.626 --> 00:12:19.182 তো মানুষ হওয়ার কি ফায়দা? 00:12:19.182 --> 00:12:20.685 আমাদের এমন কী আছে 00:12:20.685 --> 00:12:23.220 যা অন্য কোনও প্রানীর নেই? 00:12:23.220 --> 00:12:25.568 আমার উত্তর - আমাদের আছে সর্বোচ্চ সংখ্যক 00:12:25.568 --> 00:12:27.040 সেরেব্রাল কর্টেক্স এর মধ্যেকার নিউরন, 00:12:27.040 --> 00:12:28.884 আর আমি মনে করি এটাই সবচেয়ে সহজভাবে 00:12:28.884 --> 00:12:30.897 আমাদের এই নজরকাড়া বুদ্ধিবৃত্তিক যোগ্যতাকে ব্যাখ্যা করে। 00:12:30.897 --> 00:12:34.124 এবং আমরা এমন কী করি যা অন্য কোনও প্রানী করতে পারে না, 00:12:34.124 --> 00:12:36.093 এবং যাকে আমি সেই মূল কারণ বলে বিশ্বাস করি 00:12:36.093 --> 00:12:39.176 যা আমাদেরকে দিয়েছে এই বিশাল, 00:12:39.176 --> 00:12:41.398 সর্বোচ্চ সংখ্যক নিউরন বিশিষ্ট একটি কর্টেক্স? 00:12:41.398 --> 00:12:43.613 মাত্র দু'টি শব্দে, আমরা রাঁধি। 00:12:43.613 --> 00:12:47.179 অন্য কোনও প্রানী খাবার রাঁধে না। শুধুমাত্র মানুষেরা করে। 00:12:47.179 --> 00:12:50.049 এবং আমি মনে করি, এভাবেই আমরা মানুষ হয়েছি। NOTE Paragraph 00:12:50.049 --> 00:12:52.509 মানব মস্তিষ্ক নিয়ে গবেষণা খাদ্যের প্রতি আমার চিন্তা ভাবনা পাল্টে দিয়েছে। 00:12:52.509 --> 00:12:54.154 এখন আমি আমার রান্না ঘরের দিকে তাকাই 00:12:54.154 --> 00:12:55.624 আর প্রণাম করি, 00:12:55.624 --> 00:12:57.329 আর পূর্বপুরুষদেরকে ধন্যবাদ জানাই 00:12:57.329 --> 00:12:59.229 এটা উদ্ভাবনের জন্য, যা আমাদের মানুষ বানিয়েছে। 00:12:59.229 --> 00:13:01.361 আপনাদেরকে অনেক ধন্যবাদ। 00:13:01.361 --> 00:13:07.714 (করতালি)