এই মানচিত্রটা নিউ ইয়র্ক শহরের যা কিনা ১৯৩৭ সালে জেনারেল ড্রাফটিং কোম্পানি তৈরি করে এটা মানচিত্র তৈরি আঁকিয়েদের কাছে ভীষণ জনপ্রিয়, কারন এটার নিচের দিকে ক্যাটস্কিল পবর্ত অবস্থিত। সেখানে ছোট এক শহর ছিল যার নাম রোসকো-- এটা আরও সহজ হবে যদি আমি এটিকে এখানে দেখাই-- এই হচ্ছে রোসকো, আর তার ঠিক উপরেই আছে রকল্যান্ড, নিউ ইয়র্ক, তারপর এর উপরে আছে একটি ছোট শহর যার নাম অ্যাগলো, নিউ ইয়র্ক। অ্যাগলো, নিউ ইয়র্ক, মানচিত্র আঁকিয়েদের কাছে খুবই জনপ্রিয়, কারণ এটি একটি কাগুজে শহর। এটি স্বত্ব ফাঁদ হিসেবেও পরিচিত। যেহেতু নিউ ইয়র্কের আকারের কারণে-- আমার এবং তোমার মানচিত্র দেখতে একই হবে, তাই মানচিত্রকরেরা প্রায়ই তাদের মানচিত্রে মেকি জায়গা বসিয়ে দেন , তাদের স্বত্ব রক্ষা করার জন্য। কারণ তখন যদি আমার মেকি জায়গা তোমার মানচিত্রে দেখা যায়, তাহলে আমি নিশ্চিত হব যে তুমি আমার সাথে প্রতারণা করেছ। অ্যাগলো নামটি তৈরি করা হয়েছে সেই দুইজনের নামের ১ম অক্ষর হিজিবিজিভাবে লিখে, আরনেসট অ্যাল্পারস এবং অটো জি লিন্ডবারগ, এবং তারা ১৯৩৭ সালে এই মানচিত্র প্রকাশ করেন। কয়েক দশক পরে র্যান্ড ম্যাকনেলি একটি মানচিত্র প্রকাশ করেন যেখানে অ্যাগলো, নিউ ইয়র্ক এক জনমানবহীন স্থানে দুটি কাদামাটির রাস্তার একই ছেদবিন্দুতে অবস্থিত। যাই হোক, জেনারেল ড্রাফ্টিং এ তখনকার অবস্থা স্বভাবতই অনুমেয়। তারা তখনই র্যান্ড ম্যাকনেলিকে ডেকে বলল, "আমরা তোমাকে ধরে ফেলেছি! আমরাই অ্যাগলো, নিউ ইয়র্ক বানিয়েছি।, এটা একটা বানোয়াট জায়গা। একটা কাগুজে শহর। আমরা তোমার নামে মামলা করব!" র্যান্ড ম্যাকনেলি তখন বলল, "না, না, না, না, অ্যাগলো সত্যি জায়গা।" যেহেতু মানুষজন দুটি কাদামাটির রাস্তার ছেদবিন্দুতে-- (হাসি) অ্যাগলো নামের এক জায়গার খোঁজে ওই জনমানবহীন স্থানে বারবার যেতে লাগলো-- কেউ একজন অ্যাগলো, নিউ ইয়র্ক নামে এক জায়গা তৈরি করল। (হাসি) সেখানে একটি গ্যাস স্টেশন, জেনারেল স্টোর, আর চূড়ায় দুটি বাড়ি ছিল। (হাসি) এটি একজন ঔপন্যাসিকের কাছে অবশ্যই একটি লোভনীয় রুপক, কারণ আমরা সবাই বিশ্বাস করতে চাই যে আমরা যেসব কথা লিখে রাখি সেগুলো আমরা যে পৃথিবীতে বাস করি সেটিকে বদলে দিতে পারে। আর এজন্যই আমার তৃতীয় বইয়ের নাম "পেপার টাউন্স"। কিন্তু অবশেষে যে মাধ্যমে এটি সম্পন্ন হয় তার চেয়ে আমাকে বেশি আকর্ষণ করে, এই ঘটনাটি নিজে। এটা বলা সহজ যে আমাদের পৃথিবীই এর মানচিত্রকে আকার দেয়, তাই না? যেমন পৃথিবীর সার্বিক আকৃতি স্পষ্টতই আমাদের মানচিত্রগুলোকে প্রভাবিত করবে। কিন্তু আমার সবচেয়ে আকর্ষণীয় মনে হয় যে বিষয়টা তা হল আমাদের মানচিত্র তৈরি করার ধরন কিভাবে খোদ পৃথিবীটাকেই বদলে দেয়। কারণ পৃথিবীটা সত্যিই অন্যরকম হত যদি উত্তর নিচের দিকে থাকত। এবং পৃথিবী অন্যরকম হত যদি আলাস্কা এবং রাশিয়া মানচিত্রের উল্টো দিকে না থাকত। আর পৃথিবীটা হত ভিন্ন এক জায়গা যদি আমরা ইউরোপকে এর আসল আয়তনে দেখাতাম। আমাদের তৈরি পৃথিবীর মানচিত্রই পৃথিবীকে বদলে দেয়। আমরা যেভাবে আমাদের-- একরকম ব্যাক্তিগত মানচিত্রাঙ্কনের উদ্যোগকে বেছে নেই, তা আমাদের জীবনের মানচিত্র গড়ে দেয়, আর ক্রমে তা গড়ে দেয় আমাদের জীবন। আমি বিশ্বাস করি যে আমরা যা মানচিত্রে আঁকি তা আমাদের জীবনযাপনকে পাল্টে দেয়। এবং আমি একে, যেমন, কোন গোপন অপরাহ'র অ্যাঞ্জেল নেটওয়ার্ক, যেমন, চিন্তা-দ্বারা-ক্যান্সার-আরোগ অর্থে বলছি না। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি যে তুমি জীবনে কোথায় যাবে তা মানচিত্র তোমাকে দেখাতে না পারলেও, তারা তোমাকে দেখাবে তুমি কোথায় যেতে পারো। খুব কম সময়ই তুমি এমন জায়গায় যাবে যেটি তোমার ব্যাক্তিগত মানচিত্রে নেই। তো ছোটবেলায় আমি খুবই বাজে ছাত্র ছিলাম। আমার জিপিএ সর্বদাই ২ এর আশেপাশে থাকতো। আর আমার মনে হয় আমি এত বাজে ছাত্র ছিলাম কারণ আমার মনে হত শিক্ষা হচ্ছে কতগুলো বাধা যা আমার সামনে দাঁড় করানো হয়েছিল, এবং আমাকে সাবালকত্ব অর্জন করতে হলে এগুলো অতিক্রম করতে হবে। আর আমি এই বাধাগুলো পার করতে চাই নি, আমি প্রায়ই তা করতাম না কারণ এগুলো সম্পূর্ণ অযৌক্তিক মনে হত, আর তখন লোকজন আমাকে ভয় দেখাত, যেমন, তারা আমাকে বলত যে এসব "[আমার] স্থায়ী কাগজপত্রে লেখা থাকবে," অথবা, "তুমি কখনো ভাল চাকরি পাবে না।" আমি ভাল চাকরি চাই নি! এগারো বা বারো বছর বয়সে আমি যতদূর বুঝতাম, ভাল চাকরিজীবীরা খুব সকালে ঘুম থেকে উঠত, (হাসি) আর তারা সবচেয়ে প্রথমে যা করত তা হল একটা কাপড় নিজেদের গলায় জড়িয়ে নেওয়া। তারা আক্ষরিকভাবে নিজেদের গলায় ফাঁস পরাতো, আর তারপর তারা চাকরিতে যেত, তা যাই হোক না কেন। সুখী জীবনের জন্য এটি কোন রেসিপি নয়। এই মানুষগুলো-- আমার প্রতীক-আচ্ছন্ন, বারো বছর বয়সী কল্পনায়-- যেই মানুষগুলো সকালবেলা তাদের অন্যতম প্রথম কাজ হিসেবে নিজেদের গলায় ফাঁস পরাচ্ছে, তারা কোনভাবেই সুখী হতে পারে না। কেন আমি এই বাধাগুলো পার করতে চাইবো, স্রেফ এটিকে চূড়ান্ত হিসেবে পাওয়ার জন্য? সেটি একটি ভয়াবহ সমাপ্তি! এরপর, আমি যখন দশম শ্রেণিতে পরতাম, আমি একটি স্কুলে ভর্তি হলাম, ইন্ডিয়ান স্প্রিংস স্কুল, একটি ছোট বোর্ডিং স্কুল, বারমিংহাম, আলাবামার বাইরেই। আর হঠাৎই আমি একজন শিক্ষার্থী হয়ে গেলাম। আর আমি তা হলাম,কারণ আমি নিজেকে আবিষ্কার করলাম শিক্ষার্থীদের একটি গোষ্ঠীর মাঝে। এমন কিছু মানুষের মাঝে নিজেকে পেলাম যারা বুদ্ধিবৃত্তি ও অংশগ্রহণকে উদযাপন করে, আর যারা আমার শ্লেষপূর্ণ, নিরুত্তাপ বিচ্ছিন্নতাকে চতুর, বা মজার ভাবত না, বরং এটি ছিল খুব জটিল ও বাধ্যকারি সমস্যার প্রতি একটি সাধারণ ও নীরস প্রতিক্রিয়া। আর তাই আমি শিখতে শুরু করলাম, কারণ শেখা ছিল চলনসই। আমি শিখলাম যে কিছু অনন্ত সেট অন্য অনন্ত সেটের চেয়ে বড়, আরও শিখলাম পাঁচমাত্রার কাব্য কি এবং কেন তা মানুষের কানে শ্রুতিমধুর। আরও শিখলাম যে গৃহযুদ্ধ ছিল একটি জাতীয়করণ সংঘর্ষ, আমি পদার্থবিদ্যা শিখলাম আমি শিখলাম যে পারস্পরিক সম্পর্ক ও নিমিত্তকে গুলিয়ে ফেলা উচিত নয়-- প্রসঙ্গক্রমে, এ সবকিছুই, আমার জীবনকে আক্ষরিক অর্থে প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ করেছে। এবং এটা সত্যি যে আমি এদের বেশিরভাগই আমার "চাকরি"র জন্য ব্যবহার করি না, কিন্তু আমার জন্য সেটি কোন বিষয় নয়। বিষয় হল মানচিত্রাঙ্কনবিদ্যা। মানচিত্রাঙ্কনবিদ্যার প্রক্রিয়া কি? এটা হল, ধরো, জাহাজে করে কোথাও যাওয়া, আর চিন্তা করা, "আমার মনে হয় আমি এই জায়গাটুকুর ছবি আঁকব," আর তারপর ভাবা, "হয়ত ছবি আঁকার মত এখানে আরও কিছু জায়গা আছে।" আর তখনি আমার শেখার শুরু হল। এটা সত্যি যে আমার কিছু শিক্ষক আমাকে পরিত্যাগ করেননি, এবং আমি সৌভাগ্যবান ছিলাম তাদেরকে পাওয়ার জন্য, আমার মধ্যে বিনিয়োগ করার কোন কারণ নেই, এমন ভাবার অবকাশ আমি প্রায়ই তাদের দিতাম। কিন্তু আমার হাই স্কুলে শেখা অনেক কিছুই ক্লাসরুমের ভিতরে কি হত সে ব্যপারে ছিল না, তা ছিল ক্লাসরুমের বাইরে কি হত সে বিষয়ে। উদাহরনস্বরুপ, আমি বলতে পারি যে, "শীতের বিকেলের আলোতে আছে এক তির্যকতা-- যা ক্যাথেড্রাল সুরের মত ভারাক্রান্ত করে দেয়--" এর কারণ এই নয় যে আমি হাই স্কুলে থাকতে এমিলি ডিকিন্সনের কবিতা মুখস্থ করেছিলাম, বরং এ কারণে যে আমার স্কুলে একটা মেয়ে ছিল, আর তার নাম ছিল আমানডা, আর আমি তাকে পছন্দ করতাম, আর সে এমিলি ডিকিন্সনের কবিতা পছন্দ করত। আমি তোমাদের বলতে পারি সুযোগ ব্যয় কি, তার কারণ হল আমি একদিন আমার সোফায় বসে সুপার মারিও কার্ট খেলছিলাম, তখন আমার বন্ধু এমেট এসে দাঁড়াল, আর বলল, ''তুমি কতক্ষন ধরে সুপার মারিও কার্ট খেলছ?'' আমি বললাম, "কি জানি, মনে হয়, ছয় ঘণ্টা?" আর ও বলল, "তুমি কি ভেবে দেখেছ যে যদি তুমি ওই ছয় ঘণ্টা বাস্কিন-রবিন্স এ কাজ করতে, তাহলে তুমি ৩০ ডলার আয় করতে, সুতরাং এক হিসেবে, তুমি এইমাত্র সুপার মারিও কার্ট খেলার জন্য ৩০ ডলার খরচ করলে?'' আমি বললাম, 'আমি এতে সম্মত," (হাসি) কিন্তু আমি শিখলাম সুযোগ ব্যয় কি। আর এভাবেই আমার জীবনের মানচিত্র আরও ভাল হতে থাকল। এটা আরও ভাল হতে থাকল, এতে নতুন জায়গা যুক্ত হল এমন আরও জিনিস ছিল যা ঘটতে পারে, এমন অনেক ভবিষ্যৎ যা আমি পেতে পারি। এটা কোন আনুষ্ঠানিক, শৃঙ্খলাবদ্ধ শিখন প্রক্রিয়া ছিল না, এবং আমি এটা খুশিমনে স্বীকার করছি। এটি ছিল অসম এবং সামঞ্জস্যহীন, এমন অনেক কিছুই ছিল যা আমি জানতাম না। আমি হয়ত ক্যান্টরের ধারণাটা জানতাম যে কিছু অসীম সেট অন্যান্য অসীম সেটের চেয়ে বড়, কিন্তু এই ধারনার পেছনে যে ক্যাল্কুলাস কাজ করত তা বুঝতাম না। আমার হয়ত সুযোগ ব্যয়ে সম্পর্কে ধারণা ছিল, কিন্তু আমি হ্রস্বীকৃত আয়ের নীতি জানতাম না। শেখাকে মানচিত্রাঙ্কনবিদ্যা হিসেবে কল্পনা কর্ একে কতগুলো বাধা হিসেবে কল্পনা করার চেয়ে ভাল, যেগুলো তোমাকে পার করতে হবে, কারণ তুমি কিছু উপকূলীয় রেখা দেখতে পাবে, আর এতে তোমার ইচ্ছে হবে আরও দেখতে। আর তাই আমি এখন কিছুটা ক্যাল্কুলাস বুঝি, যা ওসব জিনিসের পেছনে কাজ করে। তাহলে, আমার একটা শেখার গোষ্ঠী ছিল হাইস্কুলে, তারপর আমি কলেজে অন্য একটা পেলাম, আর তারপর অন্য একটা, যখন আমি 'বুকলিস্ট' নামে এক ম্যাগাজিনে কাজ শুরু করলাম, যেখানে আমি বিস্ময়করভাবে পড়ুয়া মানুষদের সাথে সহকারী হিসেবে কাজ করতাম। আর তারপর আমি একটা বই লিখলাম। আর সব লেখকরা যা করার স্বপ্ন দেখে তাই করলাম। অবিলম্বে আমার চাকরি ছেড়ে দিলাম। (হাসি) আর হাই স্কুল ছাড়ার পর প্রথমবারের মত আমি নিজেকে কোন শিখন গোষ্ঠীর সাহচর্য ছাড়া খুঁজে পেলাম, আর তা ছিল দুর্বিষহ। আমি এটা ঘৃণা করতাম। এই দুই বছরে আমি অনেক অনেক বই পড়লাম। আমি স্তালিন সম্পর্কে বই পড়েছি, আর পড়েছি কিভাবে উজবেক লোকজন মুসলিম হিসেবে পরিচিতি পেল, আর পড়েছি কিভাবে পারমাণবিক বোমা বানাতে হয়, কিন্তু আমার মনে হত আমি নিজেই নিজের জন্য বাধার সৃষ্টি করছি, আর সেগুলো পার করছি, যেখানে আমার উত্তেজনা বোধ করা উচিত শিক্ষার্থীদের একটা সম্প্রদায়, মানুষের একটা সম্প্রদায়ের অংশ হওয়ার , যারা সবাই একটা মানচিত্রাঙ্কনের উদ্যোগে সম্পৃক্ত, যার কাজ আশেপাশের পৃথিবীটাকে আরও ভাল করে বোঝা ও এর মানচিত্র আঁকা। আর তারপর, ২০০৬ সালে, আমি এই লোকটার সাথে পরিচিত হলাম। তার নাম হল জে ফ্র্যাঙ্ক। আমি আসলে তাকে দেখি নি, শুধু ইন্টারনেটে পরিচিত হয়েছি। জে ফ্র্যাঙ্ক তখন একটা অনুষ্ঠান চালাত, যার নাম "দ্যা শো উইথ জে ফ্র্যাঙ্ক," আর আমি এটিকে আবিষ্কার করলাম, আর এটিই ছিল একজন গোষ্ঠীভুক্ত শিক্ষার্থী হিসেবে আমার প্রত্যাবর্তন। এখানে জে লাস ভেগাস সম্পর্কে কথা বলছেঃ (ভিডিও) জে ফ্র্যাঙ্কঃ লাস ভেগাস তৈরি হয়েছিল এক বিরাট, গরম মরুভূমির মাঝে। এখানে প্রায় সবকিছুই অন্য কোন জায়গা থেকে আনা হয়েছিল-- বিভিন্ন ধরনের পাথর, গাছ, ঝর্ণা। এই মাছগুলো অতটাই বেমানান, যতটা আমার উরন্ত শূকর। এই জায়গার তুলনায় এর চারপাশের ঝলসানো মরুভুমি যেমন, এর মানুষগুলোও তেমন। সমস্ত পৃথিবীর অনেক জিনিস এখানে পুনঃনির্মিত হয়েছে, তাদের ইতিহাস থেকে দূরে, আর যারা এগুলোকে ভিন্নভাবে অনুভব করে, তাদের থেকে দূরে। কখনো উন্নতিসাধন করা হয়েছে-- এমনকি স্ফিঙ্কসএর নাকও বদলে ফেলা হয়েছে। এখানে এমন মনে করার কোন কারণ নেই যে তুমি কিছু হারাচ্ছ। আমার কাছে এই নিউ ইয়র্ক তেমনি যেমনটা অন্য সবার কাছে। সবকিছুই প্রসঙ্গবহির্ভূত, তার মানে প্রসঙ্গ সবকিছুর অনুমতি দেয়ঃ স্ব-পার্কিং, ইভেন্ট সেন্টার, হাঙ্গর শৈল। স্থানের এই জালকরন পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্জনগুলোর মধ্যে একটা হতে পারে, কারণ এটা কোন একজনের না, এটা সবার। আজ সকালে হেঁটে বেড়ানোর সময় আমি লক্ষ্য করলাম যে প্রায় সব দালানই হল বিশাল সব আয়না যা সূর্যের আলো মরুভূমিতে প্রতিফলিত করছে। এগুলো অন্য আয়নার মত নয়, যা কোন জায়গায় নিহিত তোমার একটি বাহ্যিক চিত্র প্রদান করে, বরং এগুলো খালি ফেরত আসে। জন গ্রীনঃ ওই দিনগুলোর জন্য স্মৃতিকাতর হয়ে যাই যখন অনলাইন ভিডিওতে পিক্সেল দেখা যেত। (হাসি) জে শুধু একজন মহৎ সর্বজনীন বক্তা নন, তিনি একজন অসাধারন সমাজ নির্মাতাও বটে, আর এই ভিডিওগুলোকে ঘিরে যে লোক-সম্প্রদায় গড়ে উঠেছে তা অনেকভাবে ছাত্রদের একটি সম্প্রদায়ও ছিল। তো আমরা সবাই মিলে জের সাথে দাবা খেলতাম, আর আমরা তাকে হারিয়ে দিলাম। আমরা এক যুবককে যুক্তরাষ্ট্রের এপার থেকে ওপারে গাড়ি ভ্রমনে নেওয়ার জন্য সংগঠিত হলাম। আমরা পৃথিবীকে একটা স্যান্ডুইচে পরিনত করলাম একজনকে দিয়ে পৃথিবীর এক প্রান্তে এক টুকরো পাউরুটি ধরিয়ে, আর তার ঠিক অপর প্রান্তে, আরেকজনকে দিয়ে আরেক টুকরো পাউরুটি ধরিয়ে। আমি জানি এগুলো অর্থহীন চিন্তা, কিন্তু একইসাথে এগুলো "শিক্ষামুলক" চিন্তা, আর এটাই ছিল আমার কাছে সবচেয়ে উত্তেজনাকর, তুমি অনলাইনে গেলে এরকম অনেক গোষ্ঠী খুঁজে পাবে। টাম্বলার এ ক্যাল্কুলাস ট্যাগ ফলো করো, দেখবে অনেকেই ক্যাল্কুলাস সম্বন্ধে অভিযোগ করছে, তবে তুমি তাদেরও দেখতে পাবে যারা এসব অভিযোগ পুনঃব্লগ করছে, এই যুক্তি দেখিয়ে যে ক্যাল্কুলাস মজাদার এবং সুন্দর, আর এই উপায়ে তোমার অসামাধানযোগ্য সমস্যা নিয়ে ভাবতে পারো। তুমি যেতে পারো রেডিটে এবং খুঁজতে পারো সাব-রেডিট, যেমন, "ইতিহাসবিদকে জিজ্ঞেস করো" বা "বিজ্ঞানকে জিজ্ঞেস করো," যেখানে তুমি এসব ক্ষেত্রের ব্যাক্তিদের অনেক ধরনের প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে পারো, যেগুলো খুবই গুরুতর থেকে খুবই মজার। কিন্তু আমার কাছে, যে শিক্ষার্থীদের গোষ্ঠী সবচেয়ে কৌতূহলোদ্দীপক যা ইন্টারনেটে এই মুহূর্তে গড়ে উঠছে তা হল ইউটিউব, আমি স্বীকার করছি, আমি পক্ষপাতি। তবে আমি মনে করি যে অনেকভাবেই ইউটিউবের পাতা একটি শ্রেণীকক্ষের মত। যেমন, "মিনিট পদার্থবিজ্ঞান," এক ব্যাক্তি যিনি পৃথিবীকে পদার্থবিজ্ঞান শেখাচ্ছেনঃ (ভিডিও) মূল কথায় আসা যাক। ৪ জুলাই, ২০১২ পর্যন্ত, হিগস বোসন হচ্ছে সর্বশেষ মৌলিক অংশ যা কণা পদার্থবিজ্ঞানের প্রমাণ মডেল হিসেবে গবেষণার মাধ্যমে আবিষ্কৃত। তবে তুমি হয়ত জানতে চাইতে পারো, কেন হিগস বোসন প্রমাণ মডেলের অন্তর্ভুক্ত, ইলেকট্রন, ফোটন এবং কোয়ার্ক এর মত সুপরিচিত কণার পাশাপাশি যদি এটি সেই ১৯৭০ এর দশকে আবিষ্কৃত না হয়ে থাকে? ভাল প্রশ্ন। প্রধানত দুটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, ইলেকট্রন যেমন ইলেকট্রন ক্ষেত্রে একটি উদ্দীপনা, হিগস বোসনও তেমনি একটি কণা যা সর্বপরিব্যাপ্ত হিগস ক্ষেত্রে একটি উদ্দীপনামাত্র। অপরদিকে হিগস ক্ষেত্র আমাদের দুর্বল নিউক্লিয় বলের মডেলে অপরিহার্য অংশগ্রহন করে। বিশেষত, হিগস ক্ষেত্র ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করে কেন এটি এত দুর্বল। পরের ভিডিওতে আমরা এ বিষয়ে আরও কথা বলব, কিন্তু যদিও দুর্বল নিউক্লিয় তত্ত্ব ১৯৮০ এর দিকে নিশ্চিত করা হয়, সমীকরণগুলোতে, হিগস ক্ষেত্র এই দুর্বল বলের সাথে এত জটিলভাবে মিশ্রিত যে, এখন পর্যন্ত আমরা এর আসল এবং স্বাধীন অস্তিত্ব নিশ্চিত করতে অক্ষম। জগ্রীঃ বা এটি আমার একটি ভিডিও যা আমি "ক্র্যাশ কোর্স" অনুষ্ঠানের জন্য বানিয়েছিলাম, ১ম বিশ্বযুদ্ধ নিয়েঃ (ভিডিও) প্রাথমিক কারণ ছিল অবশ্যই সারায়েভোতে অস্ট্রিয়ান আর্চডিউক ফ্রানয ফারডিনান্ড এর গুপ্তহত্য, যা জুন ২৮, ১৯১৪ তে বসনিয়-সার্ব জাতীয়তাবাদী গ্যাভ্রিলো প্রিন্সিপ দ্বারা সঙ্ঘটিত হয়। উল্লেখযোগ্য যে বিংশ শতাব্দীর প্রথম বড় যুদ্ধ শুরু হয়েছিল সন্ত্রাস হিসেবে। তো ফ্রানয ফারডিনান্ডকে তার চাচা সম্রাট ফ্রানয জোসেফ খুব একটা পছন্দ করতেন না-- ওটা একটা গোঁফ বটে! কিন্তু তারপরও, ওই গুপ্তহত্যা অস্ত্রিয়াকে চালিত করল সার্বিয়াকে চরমপত্র দিতে, যার ফলে সার্বিয়া অস্ট্রিয়ার কিছু দাবি মেনে নিল, কিন্তু সব নয়, পরিণামে অস্ট্রিয়া সার্বিয়ার বিপক্ষে যুদ্ধ ঘোষণা করল। আর তখন রাশিয়া, সার্বিয়ার সাথে মিত্রতার কারনে তার সৈন্যসমাবেশ করল। জার্মানির যেহেতু অস্ট্রিয়ার সাথে মিত্রতা ছিল, সে রাশিয়াকে তা বন্ধ করতে বলল, রাশিয়া যখন তা করতে ব্যর্থ হল, তখন জার্মানি তার নিজের সৈন্যসমাবেশ করল, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল, অটোমানদের সাথে মিত্রতা দৃঢ় করল, এবং ফ্রান্সের সাথে যুদ্ধ ঘোষণা করল, কারণ, জানোই তো, ফ্রান্স। (হাসি) আর এটা শুধু পদার্থবিজ্ঞান এবং বিশ্ব ইতিহাস নয় যা মানুষ ইউটিউবের মাধ্যমে শিখতে চাইছে। এই হল বিমূর্ত গণিত সম্পর্কে একটি ভিডিও। (ভিডিও) তো তুমি হলে আমি, আর তুমি আবারও গণিত ক্লাসে এসেছ, কারণ এটা প্রতিদিন তোমাকে অনুপ্রাণিত করে। আর তুমি শিখছ, কি জানি, অসীম ক্রমের যোগফল। এটা হাইস্কুলের বিষয়, তাই না? যেটি অদ্ভুত, কারণ এটি একটি মজার বিষয়, তবে তারা কোন না কোনভাবে এটিকে ধ্বংস করে দেয়। আমার মনে হয় এজন্যই তারা অসীম ক্রমকে পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করে। তো, একটা চিত্তবিক্ষেপের জন্য, যা বোধগম্য, তুমি আঁকাআঁকি করছ আর ভাবছ যে "সিরিজ" এর বহুবচন কি হওয়া উচিত উপস্থিত বিষয় নিয়ে ভাবার বদলেঃ "সিরিজেস," "সেরি," "সেরিজেন," আর "সেরি?" নাকি একবচন বদলে হওয়া উচিতঃ একটা "সিরি," বা "সেরাম," ঠিক যেমন "শীপ" এর একবচন হওয়া উচিত "শুপ।" কিন্তু জিনিসের এই ধারণাটা যেমন ১/২+১/৪+১/৮+১/১৬ অচিরেই এক এর দিকে আগায়, কাজে আসে যদি, ধরো, তুমি হাতির একটা রেখা আঁকতে চাও, প্রতিটা যাতে পরেরটার লেজ ধরে থাকেঃ সাধারণ হাতি, তরুণ হাতি, বাচ্চা হাতি, কুকুর-আকারের হাতি, কুকুরছানা-আকারের হাতি, আর একদম জনাব দন্ত থেকে তার পর পর্যন্ত। যা সামান্য পরিমাণে হলেও অসাধারণ, কারণ তুমি এক লাইনে অসীম সংখ্যক হাতি দাঁড় করাতে পারবে, এবং তারপরেও এটা নোটবুকের একটা পাতায় আঁটবে। জগ্রীঃ শেষে, এই হল ডেসটিন, "স্মার্টার এভরি ডে" থেকে, যে কথা বলছে কৌণিক ভরবেগের সংরক্ষণ সম্পর্কে, আর বিড়াল, যেহেতু এটা ইউটিউবঃ (ভিডিও) এই যে, আমি ডাসটিন। "স্মার্টার এভরি ডে" তে আবারও স্বাগতম। তোমরা হয়ত লক্ষ্য করেছ যে বিড়ালরা সর্বদা তাদের পায়ের উপর ভর করে পড়ে। আজকের প্রশ্ন হলঃ কেন? সকল সহজ প্রশ্নের মত, এটারও একটা জটিল উত্তর রয়েছে। যেমন, আমি অন্যভাবে প্রশ্নটা করছিঃ একটা বিড়াল কিভাবে উপর থেকে পড়ার সময় উল্টো থেকে সোজা হয়ে যায়, কৌণিক ভরবেগের সংরক্ষণ সূত্র লঙ্ঘন না করেই? (হাসি) জগ্রীঃ তো, এই চারটা ভিডিওর মধ্যে মিল হলঃ এদের সবগুলোকে ইউটিউবে পাঁচ লাখেরও বেশিবার দেখা হয়েছে। আর এই মানুষগুলো ক্লাস্রুমে বসে এগুলো দেখছে না, বরং তারা সেই শিক্ষার্থীগোষ্ঠীর অংশ যেগুলো এইসব চ্যানেল দ্বারা তৈরি হচ্ছে। আর আমি আগেই বলেছি যে ইউটিউব আমার কাছে একটা ক্লাসরুমের মতো, আর অনেক ভাবেই এটা তাই, কারণ এই হল শিক্ষক-- এটা একটা চিরাচরিত ক্লাসরুমের মতইঃ এই হল শিক্ষক, তারপর শিক্ষকের নিচে হল ছাত্ররা, আর এরা সবাই মিলে আলোচনা করছে। আর আমি জানি যে ইন্টারনেটের দুনিয়ায় ইউটিউব কমেন্টের কুখ্যাতি আছে, কিন্তু সত্যি কথা হল এই, তুমি যদি এসব চ্যানেলের কমেন্টে যাও, যা তুমি পাবে তা হল এর বিষয়বস্তু নিয়ে ব্যস্ত মানুষজন, যারা বিষয়বস্তু নিয়ে কঠিন, জটিল প্রশ্ন করছে, আর অন্যরা ওসব প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছে। আর যেহেতু ইউটিউব পাতা এমনভাবে সাজানো যে, যে পাতায় আমি তোমার সাথে কথা বলছি সেটা ঠিক একই-- যেখানে আমি তোমার সাথে কথা বলছি তা একই পাতায় আছে যেখানে তোমার কমেন্ট আছে, তুমি কথোপকথনে একটা সরাসরি এবং বাস্তব এবং সক্রিয় উপায়ে অংশগ্রহণ করছ। আর আমি যেহেতু সাধারণত কমেন্টে থাকি, আমি তোমার সাথে অংশগ্রহণ করতে পারছি। আর তুমি খুঁজে পাচ্ছ তা যাই হোক না কেন, বিশ্ব ইতিহাস, বা গণিত, বা বিজ্ঞান, বা যাই হোক। তুমি আরও দেখছ তরুণদের যারা বিভিন্ন যন্ত্র এবং ইন্টারনেটের বিভিন্ন শাখা ব্যবহার করছে বুদ্ধিবৃত্তিক অংশগ্রহণের বিভিন্ন জায়গা তৈরি করার জন্য। যেসব বিদ্রূপাত্মক বিচ্ছিন্নতা আমরা মিম এবং অন্যান্য ইন্টারনেট প্রচলনের সাথে জড়াই-- যেমন, "একঘেয়ে লাগছিল। ক্যাল্কুলাস আবিষ্কার করলাম।" বা, এখানে হানি বু বু শিল্প পুঁজিবাদের সমালোচনা করছেঃ ["উদারনৈতিক পুঁজিবাদ কোনভাবেই মানবতার মঙ্গল নয়। বরং বিপরীত; এটা বর্বর, ধ্বংসাত্মক চূড়ান্ত নাস্তিকবাদের বাহক।"] যদি তুমি বুঝতে না পারো ও কি বলছে...হ্যাঁ। আমি সত্যি বিশ্বাস করি যে এই জায়গাগুলো, এই গোষ্ঠীগুলো, শিক্ষার্থীদের একটা নতুন প্রজন্মের জন্য হয়ে গেছে, সেই ধরনের গোষ্ঠী, সেই মানচিত্রাঙ্কনের গোষ্ঠী যেখানে আমি হাই স্কুলে থাকতে ছিলাম, তারপর আবার ছিলাম কলেজে থাকতে। আর একজন প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে, এই গোষ্ঠীগুলোকে আবার খুঁজে পাওয়া আমাকে শিক্ষার্থীদের একটা গোষ্ঠীর সাথে আবার পরিচয় করিয়ে দিয়েছে, আর আমাকে উৎসাহ দিয়েছে প্রাপ্তবয়স্কতায়ও একজন শিক্ষার্থী হতে, যাতে আমার আর মনে না হয় যে শিক্ষা শুধু তরুণদের জন্য। ভি হার্ট এবং "সূক্ষ্ম পদার্থবিজ্ঞান" আমাকে পরিচয় করিয়েছে এমন অনেক জিনিসের সাথে যা আমি আগে জানতাম না। আর আমি জানি যে ফিরে ফিরে শুনি সেই জ্ঞানের যুগের ফরাসী বৈঠকখানায়, বা আলগঙ্কউইন গোল টেবিলে, আর ইচ্ছে হয়, "ইস, আমি যদি ওসবকিছুর অংশ হতে পারতাম, আমি যদি ডরথি পার্কার এর কৌতুক শুনে হাসতে পারতাম!'' কিন্তু আমি তোমাদের বলতে এসেছি যে এই জায়গাগুলো এখনো আছে, তাদের অস্তিত্ব আছে। তাদের অস্তিত্ব আছে ইন্টারনেটের কোণায় কোণায়, যেখানে বৃদ্ধরা যেতে ভয় পায়। (হাসি) আমি সত্যিই বিশ্বাস করি যে আমরা যখন ১৯৬০ এর দিকে অ্যাগলো, নিউ ইয়র্ক আবিষ্কার করলাম, যখন আমরা অ্যাগলো কে সত্যি করলাম, তখন আমরা মাত্র শুরু করছিলাম। ধন্যবাদ। (হাততালি)