সবাইকে ধন্যবাদ। একদা ভারতে এক রাজা ছিল, সেই মহারাজার জন্মদিনে একটি হুকুম জারী হল যে সব গোত্রপ্রধান আনবে একটি করে উপহার যা রাজার মানানসই হবে। কেউ কেউ দামি সিল্কের কাপড় আনলেন, কেউ কেউ আলঙ্কারিক তলোয়ার আনলেন, কেউ বা আনলেন সোনা। সবার শেষে ধীরগতিতে হেঁটে আসলেন একজন অতিবৃদ্ধ খর্বকায় লোক যিনি দুরের গ্রাম থেকে হেঁটে এসেছেন মাঝে ছিল অনেক দিনের সমুদ্র যাত্রা। তিনি কাছে আসতে রাজার ছেলে জিজ্ঞেস করলঃ "রাজার জন্যে কি উপহার আপনি এনেছেন?" বৃদ্ধ লোকটি খুব ধীরে ধীরে হাতের মুঠি খুললেন দেখানোর জন্যে যে তার তালুতে আছে একটি খুব সুন্দর ঝিনুক, যাতে রক্তবর্ণ ও হলুদের আবর্ত, লাল ও নীলের ছটা। রাজার ছেলে বললঃ "এটা তো রাজার উপযোগী কোন উপহার নয়! এটা কেমন উপহার?" বৃদ্ধটি মাথা উঁচু করে তার দিকে তাকিয়ে মৃদুস্বরে বললেন, "পায়ে হেঁটে লম্বা যাত্রা... উপহারের অংশ।" (হাসি) কয়েক মুহূর্তের মধ্যে, আমি আপনাদের একটা উপহার দিতে যাচ্ছি, এমন উপহার যে বিশ্বাস করি এটি বলার মত একটি উপহার। কিন্তু তার আগে, আপনাদেরকে নিতে চাই আমার দীর্ঘ যাত্রার সঙ্গী হিসেবে। আপনাদের অনেকের মত আমারও জীবন শুরু হয়েছে ছোট শিশু হিসেবে। আপনাদের মধ্যে কতজন শিশু হিসেবে জীবন শুরু করেন? নাকি তরুণ হিসেবেই? আপনাদের প্রায় অর্ধেক... আচ্ছা... (হাসি) এবং বাকি অর্ধেক কি বলেন? আপনারা পূর্ণবয়স্ক হিসেবে জন্ম নিয়েছিলেন? বলেন কি? আপনাদের মার সাথে দেখা করতে চাই! অসম্ভবকে সম্ভব করার কথা বলুন! শিশুকালে আমার সবসময় অসম্ভব কিছু করার দিকে একটি ঝোঁক ছিল। আজকের দিনটির জন্যে আমি অনেক বছর ধরে অপেক্ষা করছি, কারণ আজকের দিনটি সেইদিন যেদিন আমি চেষ্টা করব অসম্ভবকে সম্ভব করতে আপনার সবার চোখের সামনে, এখানে - টেড এক্স মা'স্ত্রিস্ট এ। আমি শুরু করতে যাচ্ছি এই গল্পের শেষটুকু বলেঃ আর আমি আপনাদের প্রমাণ করব যে অসম্ভব আসলে অসম্ভব নয়। আমি শেষ করতে যাচ্ছি একটি উপহার দিয়ে, যা ছড়িয়ে দিতে পারবেনঃ আমি আপনাদের দেখাব যে আপনারাও করতে পারেন জীবনের অসম্ভবকে সম্ভব। আমার অসম্ভবকে সম্ভব করার যাত্রায় আমি খুঁজে পেয়েছি যে দুটি জিনিস রয়েছে সার্বজনীন সারা বিশ্বের মানুষের মধ্যে। সবারই মনে ভয় আছে, এবং সবারই রয়েছে স্বপ্ন। অসম্ভবকে সম্ভব করার জন্যে আমার যাত্রায় আমি দেখেছি যে তিনটি জিনিস আমার জীবদ্দশায় আমি সম্পন্ন করেছি যা অসম্ভবকে জয় করায় আমাকে অনুপ্রাণিত করেছে: ডজবল , যাকে ডাচরা ট্রেফবল বলেন সুপারম্যান, এবং মশা। এরাই আমার তিনটি পাথেয়। এখন আপনারা জানেন কেন আমি অসম্ভব কিছু করার সাহস রাখি। তাই আপনাদেরকে সঙ্গে নিচ্ছি আমার যাত্রায়, আমার দীর্ঘ পথে ভয় থেকে স্বপ্নে, শব্দ থেকে তলোয়ারে, ডজবল থেকে সুপারম্যান হয়ে মশা পর্যন্ত। এবং আমি আপনাকে দেখাতে পারব আশা করি কিভাবে আপনি অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারেন আপনাদের জীবনে। ৪ঠা অক্টোবর, ২০০৭। আমার বুক ধড়ফড় করছিল, আমার হাঁটু কাঁপছিল যখন আমি মঞ্চে প্রবেশ করি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যান্ডার্স থিয়েটারে - চিকিত্সাশাস্ত্রে ইগ নোবেল পুরস্কার নিতে একটি ডাক্তারী গবেষণার কাজের জন্যে যার আমি সহলেখক। শিরোনাম "তলোয়ার গিলে ফেলা ... এবং পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া'। (হাসি) এটি একটি ছোট জার্নালে প্রকাশিত হয় যা আমি আগে কখনও পড়িনি, ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল ছিল সেটি। আর আমার জন্য সেটা ছিল একটি অসম্ভব স্বপ্ন সত্য হওয়া, এটা একটি অপ্রত্যাশিত বিস্ময় ছিল আমার মত অখ্যাত কারো জন্যে, এটা একটা সম্মান যা আমি কখনো ভুলে যাবো না। কিন্তু এটাই ছিলোনা আমার জীবনের সবচেয়ে স্মরণীয় অংশ। ৪ঠা অক্টোবর, ১৯৬৭, এই ভীত, লাজুক, হাড্ডিসার, অলস শিশু যে সবসময় খুব ভয় পেত, সে যখন মঞ্চে ঢোকার প্রস্তুতি নিচ্ছিল তার বুক ধড়ফড় করছিল, তার হাঁটু কাঁপছিল। সে কথা বলার জন্যে তার মুখ খুলল, কিন্তু গলা থেকে শব্দ বের হল না। সে ছলছল চোখে কম্পিত ভাবে দাঁড়িয়ে রইল। আতঙ্কে তার হাত পা জমে গিয়েছিল, ভয়ে নিশ্চল হয়ে গিয়েছিল। এই ভীত, লাজুক, হাড্ডিসার, অলস শিশু চরম ভয় পেয়েছিল । তার অন্ধকারে ভয় ছিল, উচ্চতা ভীতি ছিল, মাকড়সা এবং সাপ ভয় পেত সে... আপনাদের মধ্যে মাকড়সা ও সাপ ভয় পায় কে কে? হ্যা, আপনাদের কয়েকজন আছে ... তার ভয় ছিল পানি এবং সাঁতার কাটা হাঙ্গর... ডাক্তার, নার্স এবং ডেন্টিস্ট ভয় পেত সে, ভীতিকর ছিল সূঁচ, ড্রিল ও ধারালো বস্তু। কিন্তু অন্য সবকিছুর চেয়ে, সে মনে মনে ভয় পেত মানুষকে। এই ভীত, লাজুক, হাড্ডিসার, অলস শিশুটি আমি ছিলাম। আমার ব্যর্থতা ও প্রত্যাখ্যানের ভয় ছিল, আত্মমর্যাদার অভাব, হীনমন্যতা, এবং আরও কিছু যা আমি তখন জানতাম না যে এরকম একটি ব্যাধি রয়েছে: সামাজিক উদ্বেগ ব্যাধি। যেহেতু আমি ভয় পেতাম, আমাকে উৎপীড়করা জ্বালাতন করত এবং মারধর করত। তারা আমাকে উপহাস করত এবং কটু কথা বলত, তারা আমাকে কখনোই খেলতে নিত না তাদের বল্গাহরিণ খেলায় । আহ, একটামাত্র খেলা ছিল যাতে তারা আমাকে খেলতে নিত ... ডজবল (বল ছুঁড়ে মারার খেলা) এবং পারতামনা ছোঁড়া বলগুলো থেকে বাঁচতে। উৎপীড়করা পরিহাস করে আমার নাম ডাকত, এবং আমি তাদের দিকে তাকাতেই দেখতাম... লাল ডজবলগুলা দ্রুতগতিতে আমার মুখের দিকে ধেয়ে আসছে। ব্যাম, ব্যাম, ব্যাম! আমার মনে আছে অনেক দিন স্কুল থেকে বাড়ি হাঁটার পথে, আমার মুখ লাল থাকত এবং ভয়ঙ্কর যন্ত্রণা হত, আমার কান লাল হয়ে অনুরণিত হতে থাকত। আর আমার চোখ দিয়ে অশ্রু ঝরতে থাকত, এবং তাদের কথাগুলো কানে আঘাত করতে থাকত। আর যেইবা বলে, "লাঠি বা পাথর আমার হাড় ভেঙ্গে দিতে পারে, কিন্তু কথা কখনো আমাকে আঘাত করবে না" এটা পুরোই মিথ্যা। কথা মানুষকে ছুরির মত কাটতে পারে। শব্দ পারে তলোয়ারের মত বিদ্ধ করতে। শব্দ গভীর ক্ষত তৈরি করতে পারে যা বাইরে থেকে দেখা যায় না। তাই আমি ভীত ছিলাম। আর কথাগুলো ছিল আমার সবচেয়ে খারাপ শত্রু। এখনও তাই আছে। কিন্তু সাথে আমার স্বপ্নও ছিল। আমি বাসায় যেতাম আর সুপারম্যান কমিকসে ডুবে যেতাম এবং আমি সুপারম্যান কমিক বই পড়তাম স্বপ্নে আমি সুপারহিরো হতে চাইতাম সুপারম্যানের মত। আমি সত্য ও ন্যায় বিচারের জন্য লড়াই করতে চেয়েছিলাম আমি যুদ্ধ করতে চেয়েছিলাম শত্রু ও দুর্বলতার বিরুদ্ধে আমি বিশ্বব্যাপি উড়ে বেড়াতে চেয়েছিলাম সুপারম্যান হয়ে জীবন বাঁচানোর জন্যে। আমার আরও একটা মোহ ছিল কিছু বাস্তব জিনিষ নিয়েও। আমি গিনিস বিশ্ব রেকর্ডের বই পড়তাম আর পড়তাম রিপ্লির "বিলিভ ইট অর নট"। আপনারা কি কখনো পড়েছেন গিনিস বিশ্ব রেকর্ডের বই বা রিপ্লির বইটি? আমি বইগুলো অনেক ভালবাসতাম! বাস্তব মানুষদের অসাধ্য সাধন করতে দেখেছি তখন বললাম, আমিও তাই করব। নিগ্রহকারীরা যদি আমাকে না দেয় তাদের সাথে কোন খেলা খেলতে, আমি বাস্তব জাদু, বাস্তব কাজ করতে চাই। আমি সত্যিই অসাধারণ কিছু কাজ করতে চাই যা নিগ্রহকারীরা করতে পারবে না। আমি আমার উদ্দেশ্য ও জীবিকা খুঁজতে চাই, জানতে চাই আমার জীবনের কোন মানে আছে কিনা, আমি অবিশ্বাস্য কাজ করতে চাই বিশ্বে পরিবর্তন আনার জন্যে আমি প্রমাণ করতে চাই যে অসম্ভবকে সম্ভব করা আসলে অসম্ভব নয়। এর ১০ বছর পরের ঘটনা - আমার ২১তম জন্মদিনের পূর্বসপ্তাহে একই দিনে দুটি জিনিস ঘটল যা আমার জীবনকে পরিবর্তন করে দিল। আমি তখন দক্ষিণ ভারতের তামিল নাড়ুতে একজন ধর্মপ্রচারক হিসেবে ছিলাম, আমার পরামর্শদাতা ও বন্ধু জিজ্ঞাসা করল, "ড্যানিয়েল, তোমার থ্রমস আছে?" আমি বললাম, "থ্রমস? থ্রমস কী?" সে বলল, থ্রমস হচ্ছে জীবনের প্রধান লক্ষ্য। এটা স্বপ্ন আর নিজস্ব লক্ষ্যের একটি সমন্বয়, মানে আপনি যদি যা ইচ্ছা তাই করতে পারতেন, যে কোন জায়গায় যেতে পারতেন যে কেউ হতে পারতেন, কোথায় যেতে চাইতেন? কি করতে চাইতেন? কে হতে চাইতেন? আমি বললাম, "আমি তা পারব না! আমি খুব ভয় পাই! আমার মনে অনেক ভয় আছে!" সেই রাতে আমি আমার মাদুর বাংলোর ছাদে নিয়ে গেলাম, বিছিয়ে শুয়ে শুয়ে তারা দেখলাম, আর দেখলাম বাদুড় ঝাঁপ দিচ্ছে মশা ধরার জন্য। আমার মনে শুধু তখন ছিল থ্রমস, আর স্বপ্ন ও লক্ষ্য নিয়ে চিন্তা, আর ডজবল খেলার সময় নিগ্রহকারী সাথীদের কথা। কয়েক ঘন্টা পরে আমি শিউরে জেগে উঠলাম। আমার হৃদয়স্পন্দন দ্রুত হচ্ছিল, আমার হাঁটু কাঁপছিল। সেসময় কিন্তু ভয়ের জন্যে এটি হচ্ছিল না আমার সমগ্র শরীরে খিঁচুনির মত হচ্ছিল। আর পরবর্তী পাঁচ দিন ধরে বার বার চেতনা হারাচ্ছিলাম আমি, মৃত্যুশয্যায় জীবন ফিরে পাবার যুদ্ধ করছি। আমার মস্তিষ্ক পুড়ে যাচ্ছিল ১০৫ ডিগ্রী ম্যালেরিয়া জ্বরে। আর যখনই চেতনা ফিরে পাচ্ছিলাম, শুধু জীবনের লক্ষ্যের কথা মনে হচ্ছিল। তখন ভাবনা আসল, "আমার জীবনে আমি কি করতে চাই?" অবশেষে, আমার ২১তম জন্মদিনের ঠিক আগের রাতে, হঠাৎ করেই আমি উপলব্ধি করলামঃ বুঝতে পারলাম যে সেই ছোট মশা, অ্যানোফিলিস স্টিফেন্সাই নামের সেই সামান্য মশাটি যার ওজন ৫ মাইক্রোগ্রামের ও কম লবণের একটি কণার থেকে কম ওজনের যদি যে মশা কাবু করতে পারে ১৭০ পাউন্ড (৮০ কিলো) ওজনের মানুষকে, আমি বুঝলাম যে এটাই আমার দুর্বলতা ছিল। তারপর আমি বুঝতে পারলাম, না, না, এর কারণ মশা না, দায়ী সেই ছোটো পরজীবীগুলো যারা মশার ভিতরে থাকে, প্লাজমোডিয়াম ফ্যালসিপেরাম, বছরে দশ লক্ষের বেশি মানুষের মৃত্যুর কারণ। তখন আমি বুঝতে পারলাম না, না, এটাতো তার চেয়েও ছোট, কিন্তু আমার কাছে এত বেশী বড় লেগেছিল। আমি বুঝতে পারলাম, ভয় আমার দুর্বলতা ছিল, আমার পরজীবী ছিল, যা পঙ্গু করেছে ও পক্ষাঘাতগ্রস্ত করেছে আমার সমগ্র জীবনকে। আপনারা জানেন, যে পার্থক্য রয়েছে বিপদ এবং ভয়ের মধ্যে। বিপদ বাস্তব হয়। কিন্তু ভয় একটি সিদ্ধান্ত, একটি নির্বাচন। আমি বুঝতে পারি যে এটা আমার নির্বাচন ছিল: আমি হয় ভয় নিয়ে বাঁচতে পারতাম, নাহলে ব্যর্থতায় মরতে পারতাম সেই রাত্রে, অথবা আমি ভয়কে জয় করতে পারতাম, এবং আমি হয়ত আমার স্বপ্নের দিকে এগুতে পারতাম, সাহসের সাথে আমি জীবনযাপন করতে পারতাম। আর জানেন, কিছু একটা আছে মৃত্যুশয্যায় থাকার অভিজ্ঞতায় মৃত্যুর মুখোমুখি হলে আসলে মানুষ সত্যি সত্যি বাঁচতে চায়। আমি বুঝলাম সবাই মরে, কিন্তু সবাই সত্যিকারভাবে বাঁচে না। মরণের মধ্যে দিয়ে আমরা বেঁচে উঠি। আপনি জানেন, যখন আপনি মরতে শিখেন, আপনি তখন সত্যিই বাঁচতে শিখেন। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম আমি পরিবর্তন করব আমার সে রাতের গল্প। আমি তো মরতে চাই নি। তাই একটি ছোটো প্রার্থনা করলাম। বললাম, "ঈশ্বর, যদি আপনি আমাকে বাঁচতে দিন আমার ২১তম জন্মদিন পর্যন্ত, আমি ভয়কে আর দেবনা আমার জীবনকে শাসন করতে। আমি আমার ভয়ের মৃত্যু ঘটাব, আমি আমার স্বপ্নকে ছোঁয়ার জন্যে আগাবো, আমি আমার মনোভাব পরিবর্তন করতে চাই, কিছু অবিশ্বাস্য কাজ করতে চাই আমার জীবন দিয়ে, আমার লক্ষ্য ও প্রধান কাজ খুঁজে পেতে চাই, আমি জানতে চাই যে অসম্ভব আসলে অসম্ভব নয়। বলব না সেই রাতে বেঁচে গেছিলাম কিনা; আপনারা নিজেরাই অনুমান করে নেন। (হাসি) কিন্তু সেই রাতে তালিকা তৈরি করেছি আমার জীবনের ১০টি প্রধান লক্ষ্য: তখন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমি বিশ্বের বিভিন্ন মহাদেশ পরিদর্শন করব বিশ্বের ৭ম আশ্চর্য দেখতে যাবো বেশ কয়েকটি ভাষা শিখব, একটি নির্জন দ্বীপে বাস করব, সমুদ্রের উপর জাহাজে বাস করব, ইন্ডিয়ান আদিবাসীদের সঙ্গে থাকব আমাজন জঙ্গলে, রোমাঞ্চ নিয়ে আরোহণ করব সুইডেনের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গে। সুর্যোদয়ে এভারেস্ট পর্বত দেখতে চেয়েছি, সঙ্গীত ব্যবসায় কাজ করতে চেয়েছি ন্যাশভিলে, সার্কাস দলে কাজ করতে চেয়েছি, এবং আমি বিমান থেকে লাফ দিতে চেয়েছিলাম। পরবর্তী বিশ বছর ধরে, আমি এ সকল লক্ষ্যের অধিকাংশ সম্পন্ন করেছি। যতবার তালিকা থেকে একটি করে লক্ষ্য সম্পন্ন করেছি, আরও ৫ থেকে ১০টি নতুন লক্ষ্য যোগ করেছি এবং আমার তালিকা ক্রমাগত বেড়ে উঠছিল। এর পরবর্তী সাত বছর ধরে আমি বাহামার একটি ছোট দ্বীপে বসবাস করেছি প্রায় সাত বছর ধরে একটি শুকনো পাতার কুটিরে ছোট হাঙ্গর ও স্টিং রে মাছ মেরে খেয়েছি, দ্বীপে শুধু যা পাওয়া যেত, একটি নেংটি পরে থাকতাম, আর হাঙ্গরের সঙ্গে সাঁতার কাটতে শিখেছিলাম। সেখান থেকে মেক্সিকোতে দেশান্তরী হই, এবং তারপর আমি গেলাম ইকুয়েডরের আমাজন নদী অববাহিকাতে, ইকুয়েডরের পুইও পঙ্গোতে এক আদিবাসি গোষ্ঠীর সঙ্গে বসবাস করেছি, এভাবে একটু একটু করে আমার বিশ্বাস ফিরে পেতে শুরু করি শুধু লক্ষ্য পুরণের মাধ্যমে। আমি সঙ্গীত ব্যবসায় যোগ দেই প্রথমে ন্যাশভিল এবং পরে সুইডেনে, তারপর স্টকহোমে চলে যাই, ও সঙ্গীত ব্যবসায় কাজ চালিয়ে যাই, সেখানেই মাউন্ট কেবনেকাইসের শীর্ষে পৌছাই সুমেরুবৃত্তর সেই উঁচুতে। শিখেছি সার্কাসে লোক হাঁসানো, এবং সার্কাসের খেলা, কিংবা রণপা-হাঁটা, এক চাকার সাইকেল চালানো, মুখে অগ্নি খেলা বা কাচ খাওয়ার খেলা। ১৯৯৭ সালে শুনেছিলাম পৃথিবীতে এক ডজনের কম তলোয়ার গেলার খেলুড়ে আছে। আর আমি বললাম, "আমাকেও তাই করতে হবে!" এক তলোয়ার খেলোয়াড়ের দেখা পেলে তার কাছে কিছু পরামর্শ চাই। তিনি বললেন, "আচ্ছা, ২টি উপদেশ দেব: ১ নম্বরঃ এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক, অনেকে এটা করতে গিয়ে মারা গেছে। ২ নম্বরঃ এটা চেষ্টা করবেন না! " (হাসি) তাই আমি এটাকে লক্ষ্যের তালিকায় যোগ করেছি। এবং আমি চর্চা করেছি দিনে ১০ থেকে ১২ বার, প্রতিদিন করে প্রায় চার বছর ধরে। এখন আমি যদি আমি সেগুলো গুণি .. ৪ X ৩৬৫ [X ১২] এটা মোটামুটি ১৩,০০০ বারের অসফল প্রচেষ্টা ছিল অবশেষে ২০০১ সালে প্রথম তলোয়ার গলার ভেতরে ঢুকাতে পেরেছিলাম, সেই সময়ে আরেকটি লক্ষ্য স্থির করি যে এই তলোয়ার গেলার কৌশলে বিশ্বের নেতৃস্থানীয় বিশেষজ্ঞে পরিণত হব আমি। তাই আমি এ নিয়ে লেখা প্রতিটি বই, পত্রিকা, বা প্রবন্ধ খুঁজি, প্রতিটি মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখি, এজন্যে শরীর-বিদ্যা ও দৈহিক গঠনতন্ত্র পড়ি, ডাক্তার ও নার্সদের সঙ্গে কথা বলেছি এনিয়ে, সব তলোয়ার গেলার খেলোয়াড়দের সাথে নিয়ে গঠন করেছি তলোয়ার গেলার খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক এসোসিয়েশন এবং একটি ২ বছর ব্যাপি ডাক্তারি গবেষণা চালিয়েছি তলোয়ার গেলা ও এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে যেটা প্রকাশিত হয় একটি ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নালে। (হাসি) সবাইকে ধন্যবাদ। (করতালি) আর আমি কিছু অদ্ভুৎ জিনিস শিখেছি তলোয়ার গেলা নিয়ে। বাজি ধরে বলতে পারি কখনোই ভাবেননি এগুলো নিয়ে আগে, কিন্তু আজ রাতের পর ভাববেন। পরবর্তীতে আপনি বাড়িতে যখন ব্যস্ত থাকবেন ছুরি দিয়ে আপনার স্টেক কাটতে অথবা একটি তলোয়ার বা আপনার ছুরি-কাঁটা, চিন্তা করবেন আমার গল্পটা নিয়ে আমি জেনেছি যে তলোয়ার গেলার ঐতিহ্য ভারতে শুরু হয়- যেখানে আমি সর্বপ্রথম এটা দেখেছিলাম আমার ২০ বছর বয়সে - প্রায় ৪০০০ বছর আগে, খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ সালে গত ১৫০ বছরে, তলোয়ার গেলার খেলোয়ারদের ব্যবহার করা হয়েছে বিজ্ঞান এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে তারা সাহায্য করেছে ১৮৬৮ সালে অনমনীয় এন্ডোস্কোপ মেশিন তৈরিতে ডঃ অ্যাডল্ফ কুশমাউল কর্তৃক জার্মানির ফ্রাইবুর্গে। ১৯০৬ সালে, ওয়েলসের ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম মেশিন উন্নয়নে, গিলতে অসুবিধা ও হজমে অসুবিধা নিয়ে অধ্যয়নে বা ব্রঙ্কোস্কোপ এর মত মেশিন উন্নয়নে। কিন্তু গত ১৫০ বছর ধরে, আমরা জানি শত শত লোক আহত হয়েছে এবং কয়েক ডজন লোক মারা গেছে ... এখানে রয়েছে অনমনীয় এন্ডোস্কোপ এর ছবি যা ডঃ অ্যাডল্ফ কুশমাউল উদ্ভাবন করছিলেন। কিন্তু আমরা আবিষ্কার করেছি যে গত ১৫০ বছরে ২৯ জন মারা গিয়েছে এ খেলার জন্যে যার মধ্যে রয়েছে লন্ডনের সেই খেলোয়াড় যে তলোয়ার দিয়ে তার হৃদয় বিদ্ধ করে ফেলেছিল আমরা এও জানতে পারলাম যে ৩ থেকে ৮টি গুরুতর তলোয়ার গেলার জখম হয় প্রত্যেক বছর। আমি জানি, কারণ আমি ফোনে সেই খবরগুলো পাই। এইতো দুটি জখমের খবর পেলাম একটি সুইডেন ও আরেকটি অরল্যান্ডো থেকে এইতো গত কয়েক সপ্তাহের মধ্যে, এই তলোয়ার খেলুড়েরা হাসপাতালে আছেন ও তাদের ক্ষত সারাচ্ছেন সুতরাং এটা অত্যন্ত বিপজ্জনক। আরেকটি বিষয় আমি জেনেছি যে তলোয়ার গেলা আয়ত্ত করতে লাগে ২ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত তলোয়ারকে ঠিকমত গলার মধ্যে ঢুকাতে অনেক মানুষের জন্যে। কিন্তু সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক জিনিশ আমি জেনেছি যে কিভাবে তলোয়ার গেলার খেলোয়াড়রা শিখে এই অসম্ভবকে সম্ভব করতে। আমি আপনাদের গোপন ব্যপারটি জানিয়ে দিচ্ছিঃ মনোনিবেশ করা যাবেনা ৯৯.৯% ক্ষেত্রেই যা অসম্ভব। আত্মনিবেশ করুন সেই ০.১% এর উপর যা সম্ভব, আর চিন্তা করতে থাকুন কিভাবে এটি করা সম্ভব, এখন আপনাদেরকে সেই যাত্রায় নিয়ে যাই তলোয়ার গেলা খেলোয়াড়ের মনের মধ্যে তলোয়ার গেলায় সফলতার জন্যে, প্রচুর মন দিয়ে ধ্যান প্রয়োজন, সুতীক্ষ্ণ একাগ্রতা দরকার, নিখুঁত প্রক্রিয়া দরকার যাতে শরীরের অভ্যন্তরীণ অঙ্গকে আলাদা করা যায় এবং স্বয়ংক্রিয় শারীরিক প্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা যায় বারবার করা মস্তিষ্কের ব্যায়ামের মাধ্যমে, পুনরাবৃত্তি পেশীর ব্যায়ামের স্মৃতি দিয়ে বারংবার অনুশীলন দ্বারা - প্রায় ১০,০০০ বার করতে হবে। এখন চলুন আপনাদের একটি যাত্রায় নিয়ে যাই একজন তলোয়ার গেলার খেলোয়াড়ের শরীরের ভেতরে। একটি তলোয়ার গেলার জন্য, জিভের উপর দিয়ে ব্লেডটি গলিয়ে দিতে হয়, পরে সার্ভিকাল অন্ননালীতে স্পর্শপ্রতিক্রিয়া দমন করতে হয় ৯০ ডিগ্রী ঘুরিয়ে দিতে হয় আলজিভের নিচে, অন্ননালীর মধ্য দিয়ে তাকে ঠেলে দিতে হয় পাকস্থলীর উপরের অংশে ভেতরকার পেশীর সঙ্কোচন দমন করে, বুকের গহ্বরের মধ্যে ব্লেডটিকে নিতে হয় দুই ফুসফুসের মধ্যে। এই মুহূর্তে, আসলেই আমার হৃদয়কে ঠেলা দিয়ে সরাতে হয়। আপনি যদি সাবধানে দেখেন, দেখবেন তলোয়ারে হৃদস্পন্দন দেখা যায় কারণ এটা হৃদয়কে হেলান দিয়ে রয়েছে শুধু মাঝে রয়েছে এক ইঞ্চির অষ্টমাংস পুরু খাদ্যনালীর টিস্যু। এর কোন কোন কিছু আপনি জাল করতে পারেন না তারপর এটাকে ঠেলে দেব আমি বুকের পাঁজরের ভেতরে, নিম্ন খাদ্যনালীর স্ফিঙ্কটারের মধ্য দিয়ে পৌছাবে পাকস্থলীতে, বমনচেষ্টার স্বাভাবিক প্রচেষ্টা দমন করে ঠেলে দেব ক্ষুদ্রান্তের অগ্রভাগে। খুবই সহজ। (হাসি) আমি যদি আরও নিচে নামতে চাই, তাহলে ফ্যালোপিয়ান টিউব পর্যন্ত নামিয়ে দেব (ডাচ) হ্যাঁ, ফ্যালোপিয়ান টিউব! সুধীবৃন্দ, আপনার স্ত্রীদের জিজ্ঞেস করতে পারেন পরে যে এটি কি ... মানুষ আমাকে জিজ্ঞেস করে, বলে, "নিশ্চয়ই অনেক সাহস লাগে আপনার জীবনকে ঝুঁকি মধ্যে ঠেলে দিতে, হৃদয়কে স্পর্শ করা, পুরো একটি তলোয়ার গেলা" না। আসলে সত্যিকারের সাহস লাগে সেই ভীত, লাজুক, চর্মসার বাচ্চার জন্য যাতে সে ব্যর্থতা ও প্রত্যাখ্যানের ঝুঁকি নিতে পারে তার গোপন কথা বলার সাহস পায়, আর নিশ্চুপ না থাকে এবং এভাবে মঞ্চে এসে দাঁড়ায় অপরিচিত একদল লোকের সামনে আপনাদেরকে তার গল্প বলতে পারে তার ভয় ও স্বপ্ন সম্পর্কে, তার নাড়িভুঁড়ি বেড় করে ফেলার ঝুঁকি নিয়ে, আক্ষরিক এবং রূপক অর্থে। দেখেছেন তো - ধন্যবাদ। (করতালি) দেখুন, সত্যিই আশ্চর্যজনক জিনিস এই যে আমি সবসময় চেয়েছি আমার জীবনে অসাধারণ কিছু করতে এবং এখন আমি তা করছি। কিন্তু সত্যিই অসাধারণ সেই জিনিসটা - এটা নয় যে আমি গিলে ফেলতে পারি একসাথে ২১টি তলোয়ার। বা ২০ফুট ডুবন্ত ট্যাংকে ৮৮টি হাঙ্গর/স্টিংরে'র সাথে থাকতে পারি রিপ্লিজ বিলিভ ইট অর নট এর জন্যে, বা ১৫০০ ডিগ্রী লাল গরম তলোয়ার গেলা স্ট্যান লি'জ সুপারহিউমান্স শো এর জন্যে এবং "স্টীলের মানুষ' হিসেবে পরিচিত হওয়া আহ তলোয়ারটি বেশ গরম ছিল! অথবা রিল্পিজের জন্য তরবারি দিয়ে গাড়ী টানা বা গীনিস এর কোন রেকর্ড, বা ফাইনালে যাওয়া আমেরিকা'জ গট ট্যালেন্ট অনুষ্ঠানে বা ২০০৭ সালের সেই চিকিৎসাবিজ্ঞানে আইজি নোবেল পুরস্কার। না, এর কোনটাই সেই অসাধারণ জিনিস নয়। অবশ্য মানুষ তাই মনে করে। না, না, না। এটা সেটা না। সেই সে অসাধারণ জিনিস যে ঈশ্বর সেই ভীত, লাজুক, চর্মসার, দুর্বল ছেলেকে সাহায্য করেছে যার উচ্চতা ভীতি ছিল, যে পানি ও হাঙ্গর ভয় পেত, এবং ডাক্তার ও নার্সদের এবং সূঁচ এবং ধারালো বস্তুকে লোকের সাথে কথা বলতে ভয় পেত এখন ঈশ্বর আমাকে দিয়ে বিশ্বজুড়ে ভ্রমণ করাচ্ছে হোক সে ৩০,০০০ ফুট উচ্চতায় ধারালো বস্তু গিলছি হাঙ্গরভর্তি ডুবন্ত ট্যাংকে গিয়েছি, ডাক্তার ও নার্সদের সাথে নির্ভয়ে কথা বলছি বিশ্বজুড়ে শ্রোতাদের কাছে যাচ্ছি। এটা আমার জন্য সত্যিই আশ্চর্যজনক জিনিস। আমি সবসময় অসম্ভব কিছু করতে চেয়েছিলাম- সবাইকে ধন্যবাদ। (করতালি) সবাইকে ধন্যবাদ। (করতালি) আমি সবসময় অসম্ভবকে সম্ভব করতে চেয়েছিলাম, এখন আমি তাই করছি। অসাধারণ কিছু করতে চেয়েছিলাম জীবন দিয়ে, বিশ্বে পরিবর্তন চেয়েছিলাম, এবং এখন আমি তাই করছি। সবসময় বিশ্বব্যাপি উড়ে বেড়াতে চেয়েছিলাম- অতিমানবীয় কৌশল করে জীবন রক্ষা করতে,এখন আমি তাই করছি এবং আপনি জানেন? এগুলো শুধুই একটি ছোট অংশ সেই ছোটো ছেলেটির বিশাল সব স্বপ্নের যা তার ভিতরে আছে। (হাসি) (করতালি) জানেন, আমি সবসময় খুঁজে পেতে চেয়েছিলাম আমার উদ্দেশ্য এবং প্রধান কাজ এবং এখন আমি এটা পেয়েছি। কিন্তু অনুমান করতে পারেন কি? এটা তলোয়ার খেলা দিয়ে নয়, বা আপনারা যা ভাবেন, আমার শক্তি দিয়ে নয়। এটা আসলে নিজ দুর্বলতাকে, আমার শব্দকে জয় করেছি। আমার উদ্দেশ্য এবং প্রধান কাজ বিশ্বকে পরিবর্তন করা ভয়কে কাটিয়ে, একটি তলোয়ারকে জয় করে, একটি কথাকে জয় করে, একটি ছুরিকে জয় করে, একটি জীবনকে জয় করে, মানুষকে সুপারহিরো (অতিমানব) হতে অনুপ্রাণিত করে তাদের জীবনে অসম্ভব কিছু করতে উদ্বুদ্ধ করা। আমার উদ্দেশ্য তাদের লক্ষ্যকে খুঁজে পেতে সাহায্য করা। আপনারটা কি? আপনার লক্ষ্য কি? আপনাকে এখানে কি করতে বলা হয়েছে? আমি মনে করি আমরা সবাই অতিমানব হতে পৃথিবীতে এসেছি। আপনার অতিমানবীয় শক্তিটি কি? বিশ্ব তাবৎ মানুষের মধ্যে - ৭০০ কোটি মানুষের কথা বলছি, সেখানে মাত্র কয়েক ডজন তলোয়ার গেলার খেলোয়াড় টিকে রয়েছে আজ সারা বিশ্বে, কিন্তু আপনি একমাত্র আপনি। আপনি অনন্য। আপনার কাহিনী কি? আপনি কিভাবে আলাদা? আপনার গল্পটি বলুন, এমনকি আপনার কণ্ঠ পাতলা এবং কম্পমান হলেও। আপনার জীবনের লক্ষ্য কী? যদি যেকোন কিছু পারতেন যে কেউ হতেন, যেখানে ইচ্ছা যেতেন কি করতে চাইতেন? আপনি কোথায় যেতেন? আপনি কি করতে চাইতেন? আপনার জীবন দিয়ে আপনি কি করতে চান? আপনার বড় স্বপ্নগুলো কি? আপনার ছোটোকালে কোন বড় স্বপ্ন কি ছিল? চিন্তা করেন। বাজি ধরতে পারি, এটা ছিল না। ঠিক বলছি? আপনার বুনো স্বপ্নটি কি ছিল যা আপনি ভাবতেন অদ্ভুত সব চিন্তা হিসেবে এবং খুব অস্পষ্ট? বাজি ধরে বলতে পারি এখন আপনার স্বপ্নগুলো আর অদ্ভুত দেখাচ্ছে না, তাই নয় কি? আপনার সেই তলোয়ারটি কি? প্রত্যেকের একটি তলোয়ার আছে, ভয় এবং স্বপ্ন নিয়ে একটি দ্বিমুখী তলোয়ার। সেই তলোয়ারকে গিলে ফেলার সাহস দেখান, যাই হোক না কেন সেটা। সুধীবৃন্দ, আপনারা নিজ স্বপ্নের পেছনে ছুটুন এখনো খুব দেরি হয়ে যায়নি আপনি যা হতে চেয়েছিলেন তা হতে। ডজবল খেলার সেই নিগ্রহকারী সাথীরা ঐ বাচ্চারা যারা ভেবেছিল যে আমি কখনোই অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারব না, আমার শুধু একটা জিনিস আছে তাদের বলারঃ ধন্যবাদ। কারণ যদি তাদের মত শত্রু না থাকত, আমরা কোন সুপারহিরো পেতাম না। আমি আছি প্রমাণ করতে যে অসম্ভব আসলে অসম্ভব নয়। যদিও এটি অত্যন্ত বিপজ্জনক, আমি মারাও যেতে পারতাম। আশা করি আপনারা উপভোগ করেছেন। (হাসি) এটাতে আপনার সাহায্যের প্রয়োজন। শ্রোতা: দুই, তিন। ড্যান মায়ার: না, না। আপনার সাহায্য দরকার গণনা করতে, আপনারা তৈরী তো? (হাসি) যদি শব্দটা জানেন। ঠিক আছে? আমাকে সঙ্গে। প্রস্তুত? এক দুই তিন না, এটি ২, কিন্তু বুঝে গেছেন নিশ্চয়ই। শ্রোতা: এক দুই তিন (শ্বাস নেয়ার শব্দ) (করতালি) ড্যান মায়ার: হ্যাঁ! (করতালি) (অভিনন্দন) আপনাদেরকে অনেক ধন্যবাদ। ধন্যবাদ, ধন্যবাদ, ধন্যবাদ। হৃদয় থেকে আপনাদেরকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আসলে, আপনাদেরকে ধন্যবাদ আমার পাকস্থলীর অন্ত:স্থল থেকে আমি আপনাদেরকে বলেছিলাম আমি এখানে অসম্ভবকে সম্ভব করব, আমি তা করেছি কিন্তু এটা আসলে সেই অসম্ভব না। আমি তো প্রতিদিনই এটি করি। অসম্ভব ছিল সেই ভীত, লাজুক, চর্মসার, দুর্বল ছোটো ছেলেটির জন্যে ভয়ের মুখোমুখি হওয়া, টেড এক্স এর মঞ্চে এসে দাঁড়ানো, এবং বিশ্বকে পরিবর্তন করা, একটি একটি করে শব্দ দিয়ে, একটি করে তলোয়ার দিয়ে, একটি করে জীবন দিয়ে। যদি আপনাদের নতুন করে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করি, যদি বিশ্বাস করাতে পারি যে অসম্ভব আসলে অসম্ভব নয়, যদি আপনাদের বুঝাতে পারি যে আপনারাও পারেন জীবনে অসম্ভব কিছু করতে, তাহলে আমার কাজ শেষ হবে, এবং আপনার কাজ মাত্র শুরু হবে। স্বপ্ন দেখা বন্ধ করবেন না কখনো, বিশ্বাস করা বন্ধ করবেন না কখনো। আমাকে বিশ্বাস করার জন্য ধন্যবাদ আমার স্বপ্নে অংশ নেওয়ার জন্যেও ধন্যবাদ আপনাদেরকে আমার উপহার এখানেঃ যে অসম্ভব আসলে নয় ... শ্রোতা: অসম্ভব। লম্বা পথ হেঁটে যাওয়াও উপহারের অংশ। (করতালি) সবাইকে ধন্যবাদ। (করতালি) (সবাই আনন্দ প্রকাশ করছে) আপনাকে ধন্যবাদ, ড্যান মায়ার, অভূতপূর্ব!